প্রতীকী ছবি।
কোভিড হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে ফিরে প্রতিবেশীদের বাধায় বাড়িতে ঢুকতে পারলেন না বেসরকারি ব্যাঙ্কের কর্মী এক তরুণী। বাড়িতে ঢুকলে তাঁকে ও তাঁর বাবাকে কেরোসিন ঢেলে পুড়িয়ে মারার হুমকি দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ। ভীত-সন্ত্রস্ত তরুণী রবিবার রাতে চলে যান তাঁর শ্বশুরবাড়িতে। কিছু দিন আগে তাঁর বাবার করোনা পরীক্ষা হয়। অভিযোগ, রিপোর্ট নেগেটিভ আসার পরেও তাঁকে কিছু লোক জোর করে হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে দেয়।
করোনা-পরিস্থিতিতে ঝুঁকি নিয়েও ওই তরুণী ব্যাঙ্কের মাটিয়ার শাখায় যাতায়াত করছিলেন। তাঁর শ্বশুরবাড়ি হাড়োয়ায়। তবে কাজের সুবিধার জন্য বেশির ভাগ সময়ে বাপের বাড়িতে থাকেন তিনি। অসুস্থ বোধ করায় ৯ জুলাই তিনি লালারস পরীক্ষা করান। ১৪ জুলাই পজ়িটিভ রিপোর্ট আসে। গোপালপুর কোভিড হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় তাঁকে।
সুস্থ হয়ে রবিবার সন্ধ্যায় হাসপাতাল থেকে বাপের বাড়িতে পৌঁছন তিনি। তরুণীর অভিযোগ, অ্যাম্বুল্যান্স থেকে নামতেই বাড়ির সামনে লোক জড়ো হয়ে যায়। ঘরে ঢুকতে বাধা দেয় তারা। সকলেই তাঁর প্রতিবেশী অথবা আত্মীয়। তাঁদের দাবি, সুস্থ হলেও তাঁকে থাকতে হবে গ্রামের এক পাশে একটি স্কুলের ঘরে। কিন্তু একাকী মহিলার পক্ষে সেখানে থাকা নিরাপদ নয়। সে কথা প্রতিবেশীদের বলেও কাজ হয়নি বলে জানিয়েছেন ওই তরুণী।
তিনি বলেন, ‘‘জোর করে বাড়িতে ঢুকলে কেরোসিন ঢেলে বাবা এবং আমাকে পুড়িয়ে মারা হবে বলে হুমকি দেওয়া হয়। ভয় পেয়ে যাই।’’
খবর পেয়ে পুলিশ পৌঁছয়। তরুণীর দাবি, পরিস্থিতি জটিল বুঝতে পেরে পুলিশের সঙ্গে তিনি শ্বশুরবাড়ি চলে যান। সেখানে অবশ্য কেউ বাধা দেননি বলেই জানিয়েছেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘এখানে স্বামী-সন্তান-শাশুড়ি আলাদা ঘরে আছেন। আমি বাড়িরই এক দিকে আলাদা থাকব ক’দিন।’’
তরুণীর অভিযোগ, স্থানীয় লোকজন তাঁর বাবাকে বসিরহাট জেলা হাসপাতালে ভর্তি করেছে। তাঁর মা করোনায় আক্রান্ত হয়ে কোভিড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর বাবার করোনা পরীক্ষা হয়েছিল। তাতে রিপোর্ট নেগেটিভ আসে।
বসিরহাট পুলিশ জেলার সুপার কঙ্করপ্রসাদ বারুই বলেন, ‘‘করোনায় আক্রান্ত কোনও ব্যক্তি সুস্থ হয়ে বাড়ি ঢুকলে তাঁকে বাধা দেওয়া চলবে না, এ বিষয়ে সকলকে প্রথমে বোঝানো হবে। না শুনলে পুলিশ কড়া পদক্ষেপ করবে।’’ এ ক্ষেত্রে জাতীয় বিপর্য়য় মোকাবিলা আইনে পুলিশ পদক্ষেপ করতে পারে বলে জানিয়েছেন তিনি। এমনকি, বাধা দেওয়ার ঘটনা ঘটলে গ্রেফতার এবং জেল-জরিমানাও হতে পারে। ওই তরুণীকে আশ্বস্ত করে পুলিশ জানিয়েছে, বাপের বাড়ি ফিরতে চেয়ে কোনও অসুবিধায় পড়লে তিনি যেন যোগাযোগ করেন। তবে এই আশ্বাসে বিশেষ ভরসা পাচ্ছেন না ওই তরুণী। তাঁর কথায়, ‘‘পাড়ার এত দিনের প্রতিবেশী ও আত্মীয়দের মুখগুলো এমন হিংস্র হয়ে উঠতে পারে, তা ভাবিনি। করোনা আক্রান্ত তো কেউ ইচ্ছে করে হয় না!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy