Advertisement
E-Paper

Nayan Halder: নজরকাড়া বাড়ির পাই পয়সার হিসেব দেব, চ্যালেঞ্জ ছুড়ে বলছেন তৃণমূলের নয়ন

আয়তন ১৫৬০ বর্গফুট। বাড়িটার সামনে আচমকা কাউকে নিয়ে গেলে তিনি বিভ্রান্ত হতে পারেন। আছেন কোথায়! সল্টলেক না নিউ আলিপুরে!

নয়ন হালদারের অট্টালিকা। বাগনানে।

নয়ন হালদারের অট্টালিকা। বাগনানে। —নিজস্ব চিত্র।

নুরুল আবসার

শেষ আপডেট: ১২ এপ্রিল ২০২২ ০৬:৩২
Share
Save

এখন কি একটু ‘চাপে’ আছেন নয়ন হালদার?

এমনিতে মানুষটা শৌখিন। সব সময় ফিটফাট। সুগন্ধি না-মেখে বেরোন না। তেতলা বাড়িটাও করেছেন দেখার মতো!

আয়তন ১৫৬০ বর্গফুট। বাড়িটার সামনে আচমকা কাউকে নিয়ে গেলে তিনি বিভ্রান্ত হতে পারেন। আছেন কোথায়! সল্টলেক না নিউ আলিপুরে! এমন বাড়ি তো কলকাতার ও সব জায়গাতেই দেখা যায়। তা বলে হাওড়ার বাগনানের বেড়াবেড়িয়া গ্রামের রাস্তার ধারে!

উঠোন জুড়ে ফুলের বাগান। দেখভালের জন্য মালি আছেন। বৈভবের চিহ্ন বাড়ি জুড়ে। একতলা ফাঁকা পড়ে আছে। দোতলায় ডাইনিং এবং ড্রয়িং রুম। তেতলায় দু’টি থাকার ঘর। প্রতি তলার বারান্দা গাছে সাজানো। রুচির ছাপ সর্বত্র।

নয়ন তৃণমূল নেতা। বাগনান-১ পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি। সাম্মানিক হিসাবে মাসে ৬ হাজার টাকা পান। ১৬ হাজার মুরগির নিজস্ব খামার আছে। তা থেকে মাসে গড়ে ৮০ হাজার টাকা উপার্জন হয় বলে নয়নের দাবি। এ ছাড়া, অংশীদারি ভিত্তিতে দু’টি মাটি কাটার যন্ত্র এবং দু’টি ডাম্পার চালান। স্ত্রী ২০০৭ সালে অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী হিসাবে চাকরি পেয়েছেন। তিনি ৮ হাজার টাকা করে বেতন পান।

বাড়ি নিয়ে প্রশ্ন করতেই ‘চাপ’ প্রকাশ করে ফেললেন নয়ন, ‘‘সব মিলিয়ে ২০ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে। ১১ লক্ষ টাকা ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিয়েছি। ৫ লক্ষ টাকার ফিক্সড ডিপোজ়িট ভাঙিয়েছি। কাঠের দোকান, রঙের দোকান, ইমারতি দ্রব্যের দোকানে এখনও কয়েক লক্ষ টাকা বাকি আছে। এর বাইরে যদি কোনও টাকা এই বাড়ির পিছনে লাগিয়ে থাকি, চ্যালেঞ্জ করছি যে কোনও তদন্তের মুখোমুখি হব। সাধারণ মানুষ জানতে চাইলে জনসভা করে মাইকেও এ কথা ব‌লতে রাজি আছি।’’

দু’দিন ধরে গ্রামস্তরের তৃণমূল নেতাদের অট্টালিকার কাহিনি প্রকাশিত হচ্ছে আনন্দবাজারে। তাতেই কি কোনও ভাবে চাপে’ পড়ে গেলেন বছর পঁয়তাল্লিশের নয়ন? না হলে নিজে আগ বাড়িয়ে কেনই বা জনসভা করে মাইকে বাড়ি তৈরির ইতিবৃত্ত বলার ইচ্ছা প্রকাশ করবেন?

২০১৬ সাল থেকে পুরনো বাড়ির পাশে নতুন বাড়ি তৈরি শুরু করেন। নয়ন জানেন, এই বাড়ি নিয়ে লোকে নানা কথা বলেন। সেই দলে বিরোধীরাও রয়েছেন। তাঁর দাবি, ‘‘যাঁরা বাড়ি নিয়ে নানা কথা বলেন, তাঁরা সবটা বাইরে থেকে বিচার করেন। তাঁরা চাইলে আমার আয়-ব্যয়ের হিসাব দিয়ে দেব। যদি বিন্দুমাত্র অনিয়ম দেখাতে পারেন, রাজনীতি ছেড়ে দেব। এই বাড়ি ছাড়া নামে-বেনামে আমার আর কোনও সম্পত্তি নেই।’’
২০০১ সালে বাগনানের এক কেরোসিন ডিলারের কাছে কাজ করতেন নয়ন। তিনি জানান, তখন রোজগার ছিল মাসে গড়ে ৬ হাজার টাকা। ২০০৮ সালে সেই কাজ ছেড়ে দেন। দু’টি ছোট গাড়ি এবং দু’টি অটো ভাড়ায় খাটানো শুরু করেন। তার মধ্যে শুরু হয় তাঁর রাজনৈতিক পথচলা। ২০১৩ সালে তিনি বাগনান-১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি হন। ২০১৮ সালে সভাপতির পদটি সংরক্ষিত হয়ে যাওয়ায় তিনি সহ-সভাপতি হন।

নয়নের দাবি, ‘‘ কারও কাছ থেকে এক কাপ চা-ও কোনও দিন খাইনি। জমির দালালিও করিনি। ২০১১-তে খালনায় একটি কারখানার জমি বালি ফেলে ভরাট করা ও পাঁচিল দেওয়ার কাজ করেছিলাম। কিন্তু পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি হওয়ার পর থেকে সেই কাজও বন্ধ করে দিই। পাছে মানুষের ভুল ধারণা হয়।’’ বাড়ি নিয়ে কী বলছেন দলীয় নেতৃত্ব?

বাগনানের বিধায়ক অরুণাভ সেন বলেন, ‘‘নয়নের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক স্তরে কোনও অভিযোগ আসেনি। এলে নিশ্চয় ব্যবস্থা নিতাম। বাড়ি তৈরির বিষয়টি তাঁর একান্ত ব্যক্তিগত ব্যাপার। যদি এ বিষয়ে কোনও প্রশ্ন ওঠে, তা হলে তার জবাব তিনিই দিতে পারবেন।’’

Bagnan TMC

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}