Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
Babul Supriyo

Babul Supriyo: বিজেপির ‘ভুল’ নিয়ে  বলতে নারাজ বাবুল

পর্যবেক্ষকদের অনেকের মতে, গত ১০ সেপ্টেম্বর বিজেপি ভবানীপুরের প্রার্থী হিসাবে প্রিয়ঙ্কার নাম ঘোষণার পরে তাঁকে স্বাগত জানিয়েছিলেন বাবুল।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ সেপ্টেম্বর ২০২১ ০৮:২৩
Share: Save:

ভবানীপুরের উপনির্বাচনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমর্থনে প্রচারে গিয়ে নিজেকে ‘বিড়ম্বনা’য় ফেলতে চান না সদ্য বিজেপি-ত্যাগী সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়। ভবানীপুরের বিজেপি প্রার্থী প্রিয়ঙ্কা টিবরেওয়াল বাবুলের হাত ধরে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। বাবুল শনিবার তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পরে তিনি বলেছেন, ‘‘আমি বাবুলদার বোন। দল বদল মানুষের ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। উনি দল বদল করেছেন। কিন্তু আমার আশা, উনি ভবানীপুরে আমার বিরুদ্ধে প্রচারে আসবেন না। ব্যক্তিগত সম্পর্ক না রাজনৈতিক অবস্থান, কোনটাকে উনি বেশি গুরুত্ব দেবেন, তা ওঁকেই ঠিক করতে হবে।’’ এর প্রতিক্রিয়ায় বাবুল রবিবার বলেন, ‘‘আমি প্রিয়ঙ্কার পরিবারকেও চিনি। ও লড়াকু মেয়ে। আমার সব মামলা ও লড়েছে। আমাকে কোনও রকম বিড়ম্বনায় না ফেলতে দলকে অনুরোধ করব। আর তা ছাড়া, ভবানীপুরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্য বাবুলের প্রচারে যাওয়ার দরকার আদৌ আছে কি?’’

পর্যবেক্ষকদের অনেকের মতে, গত ১০ সেপ্টেম্বর বিজেপি ভবানীপুরের প্রার্থী হিসাবে প্রিয়ঙ্কার নাম ঘোষণার পরে তাঁকে স্বাগত জানিয়েছিলেন বাবুল। বিজেপি বাবুলকে প্রিয়ঙ্কার তারকা প্রচারকের তালিকায় রেখেছিল। প্রিয়ঙ্কা নিজেও বাবুলকে তাঁর সমর্থনে প্রচারে আসার অনুরোধ জানিয়েছিলেন। এই অবস্থায় এখন বাবুলের পক্ষে ভবানীপুরে মমতার হয়ে প্রচারে নামা অসুবিধাজনক। বিষয়টি তৃণমূলের পক্ষেও অস্বস্তির কারণ হতে পারে। সেটা আঁচ করেই ভবানীপুরে মমতার হয়ে প্রচারে বাবুলের এই অনীহা।

এ বিষয়ে রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যের কটাক্ষ, ‘‘হয়তো ওঁর হৃদয়ের কোনও কোণায় এখনও বিজেপি বা প্রিয়ঙ্কা টিবরেওয়ালের প্রতি সমর্থন রয়ে গিয়েছে!’’

তৃণমূলে যোগদানের পর এ বার বাবুল কী করবেন? এ নিয়ে নানা গুঞ্জন চলছে রাজ্যের রাজনৈতিক মহলে। কখনও রাজ্যসভার জন্য তাঁর নাম শোনা যাচ্ছে। কখনও শোনা যাচ্ছে, তৃণমূল তাঁকে পরবর্তী ভোটে আসানসোলে কাজে লাগাবে। আবার কেউ কেউ বলছেন, পশ্চিমবঙ্গে মন্ত্রী করে পরে তাঁকে বাকি থাকা উপনির্বাচনে জিতিয়ে আনা হতে পারে। বাবুল নিজে এ দিনও বিষয়টি খোলসা করতে চাননি। তিনি শনিবার থেকে এ দিন পর্যন্ত বহু বার বলেছেন, ‘‘তৃণমূল আমাকে বিরাট কাজের সুযোগ দিচ্ছে। সেটা কী, তা দল বলবে। আমার বলার কথা নয়। আমি যখন রাজনীতি ছাড়ব বলেছিলাম, তখন সেটাই আমার মনের কথা ছিল। পরে তৃণমূলের কাছ থেকে অভূতপূর্ব সুযোগের প্রস্তাব পেয়ে আমার মন বদলায়।’’ আজ, সোমবার মমতার সঙ্গে বাবুলের বৈঠক হওয়ার কথা। বাবুল জানান, বুধবার লোকসভার স্পিকার তাঁকে সময় দিলে সে দিনই তিনি সাংসদ পদে ইস্তফা দেবেন।

২০২৪ সালে তিনি কাকে প্রধানমন্ত্রী দেখতে চান? বাবুলের জবাব, ‘‘জনপ্রিয়তম মানুষকে দেখতে চাই। ২০১৪ সালে মোদীজি ছিলেন আশার আলো। আমি যে দলে আছি, তার নেত্রী ২০২৪ সালে জনপ্রিয় নেতাদের মধ্যে শীর্ষে থাকবেন, সেটা বলতে অসুবিধা কোথায়?’’

বিজেপির মূলগত ভুল কী বলে তিনি মনে করেন? বাবুল বলেন, ‘‘কিছুই মনে করি না। আমি বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবছি।’’ প্রথম বার কেন্দ্রে প্রতিমন্ত্রী হওয়ার পর বাবুল এক বার মমতার সঙ্গে ঝালমুড়ি খেয়েছিলেন। তা নিয়ে বিস্তর বিতর্ক হয়। সে নিয়ে প্রশ্নের জবাবে সে দিনের ঘটনা মনে করিয়ে দিয়ে বাবুল ফের বলেন, ‘‘বাংলার মানুষের স্বার্থে, উন্নয়নের জন্য আমি সব সময়ই বৈঠক করার পক্ষে। তখন বিজেপিতে থেকে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো-সহ চারটি বিষয়ে আলোচনা করেছিলাম। এখন আবার মানুষের স্বার্থে প্রয়োজন হলে বিজেপির কোনও মন্ত্রীর সঙ্গে ঝালমুড়ি না হলে ধোকলা খেতে খেতে আলোচনা করব।’’

বাবুল বিজেপিতে থাকাকালীন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তিনি বহু বার পরস্পরকে আইনজীবীর নোটিস দিয়েছেন। সেই সময় অভিষেক এবং তৃণমূলকে চড়া সুরে আক্রমণও করেছেন বাবুল। এখন সে বিষয়ে তাঁর অবস্থান কী? বাবুলের মন্তব্য, ‘‘আমি আর অভিষেক পরস্পরকে দেওয়া আইনজীবীর চিঠিগুলির বাক্স অদলবদল করে নেব। তবে যখন যেখানে দাঁড়িয়ে যে অভিযোগ ঠিক বলে মনে করেছি, সেটাই মানুষের স্বার্থে করেছি। ফেসবুকে আমার লেখা কোনও পুরনো পোস্ট আমি মুছব না। তাতে আমার বিড়ম্বনা হলেও না।’’

দল বদলের প্রেক্ষিতে বাবুলকে ‘রাজনৈতিক পর্যটক’ বলে কটাক্ষ করেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। বাবুলের পাল্টা কটাক্ষ, ‘‘এক ধরনের বাংলা হয়— দিলীপদার বাংলা। আমি ওঁকে বিদ্যাসাগরের বর্ণপরিচয় উপহার দেব। যাতে উনি বাংলা ভাষাতেই কথা বলেন। ভাষাকে যেন কলুষিত না করেন।’’ বাবুলের এই খোঁচার প্রতিক্রিয়ায় রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীকের মন্তব্য, ‘‘রাজনীতিতে দিলীপ ঘোষের অবদান ভবিষ্যৎ বিচার করবে। কিন্তু বাবুল স্বীকার করে নিলেন, অল্প দিনের মধ্যেই দিলীপ ঘোষ নিজেকে ব্র্যান্ড হিসাবে প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছেন।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Babul Supriyo BJP
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy