কলেজে ভর্তির পর সবেমাত্র ঠাঁই জুটেছে বিদেশ বিভুঁইয়ের অচেনা শহরে। তার মধ্যেই রুশ সেনার এই সামরিক অভিযান। যুদ্ধ-পরিস্থিতির আবহে বোমা হামলা থেকে বাঁচতে ঠান্ডা যুদ্ধের সময় তৈরি হওয়ায় বাঙ্কারেও আশ্রয় নিয়েছিলেন আয়ুষি।
বাব-মায়ের সঙ্গে আয়ুষি অগ্রবাল (বাঁ দিকে)। নিজস্ব চিত্র।
বাইরে তাপমাত্রা মাইনাস ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সঙ্গে ভারী খাবার, পানীয় জল কিছুই ছিল না। এমন পরিস্থিতির মধ্যে প্রায় ৫০ কিলোমিটার পথ হেঁটে পোল্যান্ডে সীমান্তে এসেছিলেন তিনি। বৃহস্পতিবার সকালে যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেন থেকে বাড়ি ফিরে ওই অভিজ্ঞতার কথাই জানালেন বর্ধমানের উল্লাসের বাসিন্দা আয়ুষি অগ্রবাল।
আয়ুষিও মাস ছয়েক আগে ইউক্রেনের টার্নোপিল শহরে ডাক্তারি পড়তে গিয়েছিলেন। ওই শহরের ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে পড়তেন তিনি। কলেজে ভর্তির পর সবেমাত্র ঠাঁই জুটেছে বিদেশ বিভুঁইয়ের অচেনা শহরে। তার মধ্যেই রুশ সেনার এই সামরিক অভিযান। যুদ্ধ-পরিস্থিতির আবহে বোমা হামলা থেকে বাঁচতে ঠান্ডা যুদ্ধের সময় তৈরি হওয়ায় বাঙ্কারেও আশ্রয় নিয়েছিলেন আয়ুষি।
যুদ্ধের কারণে আকাশপথ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বাধাপ্রাপ্ত হয় ইউক্রেনে আটকে পড়া ভারতীয় পড়ুয়াদের উদ্ধারের কাজ। এই পরিস্থিতিতে আটকে পড়া পড়ুয়াদের যত দ্রুত সম্ভব ইউক্রেনের পড়শি দেশগুলিতে চলে যেতে বলা হয় ভারত সরকারের তরফে। সেই মতো পোল্যান্ডের উদ্দেশে বাসে রওনা হন আয়ুষি ও তাঁর সঙ্গীরা। কিন্তু মাঝ পথেই আটকে যায় বাস। এর পর তাঁরা হেঁটে পোল্যান্ড যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
আয়ুষির কথায়, ‘‘বাইরে তখন প্রচণ্ড ঠান্ডা। প্রায় মাইনাস ১৫। সঙ্গে তেমন খাবার নেই। ব্যাগে কিছু বিস্কুট ছিল। ও সব খেয়েই কাটাতে হয়েছে। জলও ছিল না। গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গিয়েছিল। তখন আমরা শহর থেকে অনেক দূরে। ওখানকার অবস্থা আরও খারাপ। জায়গায় জায়গায় রাশিয়ার পতাকা লাগানো রয়েছে। অনেক কষ্ট করে পোল্যান্ড সীমান্তে পৌঁছতে হয়েছে আমাদের। তবে ওখানে ভারতের দূতাবাসের লোকজন ছিলেন। ওঁরা আমাদের জন্য খাবারদাবারের ব্যবস্থা করেন। তার পর ভালয় ভালয় দেশে ফিরতে পেরেছি আমরা।’’
আয়ুষির মা সুইটি অগ্রবাল বলছেন, ‘‘যুদ্ধ শুরু হয়েছে শোনার পর থেকে উদ্বেগের সীমা ছিল না। দুশ্চিন্তায় রাতে ঘুম হত না। তবে আয়ুষির সঙ্গে আমাদের প্রায়ই কথা হত। আলাদা একটা নম্বরও দিয়ে রেখেছিল ও। ওর নিজের নম্বরে না পেলে ওই নম্বরে ফোন করতাম আমরা। মেয়ে বাড়ি ফিরে এসেছে। ব্যস, আর কিছু চাই না আমাদের।’’
পেশায় ব্যবসায়ী বাবা বিদ্যুৎ অগ্রবাল বলেন, ‘‘মেয়েকে দেশে ফেরাতে ভীষণ সাহায্য করেছে ভারত সরকার। তাদের অনেক ধন্যবাদ।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy