প্রতীকী ছবি।
জঙ্গি দলে নাম লেখালেও পুলিশ এবং আধা-সামরিক বাহিনীতে যোগ দিতে চেয়েছিল জলঙ্গি উত্তর ঘোষপাড়ার বাসিন্দা আতিউর রহমান। প্রাথমিক ভাবে এ কথাই জানতে পেরেছেন এনআইএ-র গোয়েন্দারা। তাঁদের একটি সূত্রের দাবি, গত বছর সিআরপিএফে চাকরির পরীক্ষায় বসলেও আতিউর শেষ ধাপ পেরোতে পারেনি। রাজ্য পুলিশেও চাকরির চেষ্টা করছিল সে। কারণ, সশস্ত্র বাহিনীতে চাকরি করতে তার শারীরিক ও অস্ত্র প্রশিক্ষণ হবে এবং পাশাপাশি পুলিশের অন্দরের খবরও সে জেনে পাচার করতে পারবে। এমন কোনও চর ইতিমধ্যেই বাহিনীতে ঢুকেছে কি না, তাও জানার চেষ্টা করছেন গোয়েন্দারা।
শুক্রবার গভীর রাতে মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন এলাকায় হানা দিয়ে আবু সুফিয়ান, লিউইয়ন আহমেদ, আতিউর রহমান, নাজমুস সাকিব, আল মামুন কামাল ও মইনুল মণ্ডলকে গ্রেফতার করে এনআইএ। তদন্তকারীদের দাবি, জঙ্গিরা মূলত ডার্ক ওয়েব ব্যবহার করে। তবে এই ছ’জন টেলিগ্রাম নামে একটি অ্যাপ এবং হোয়্যাটসঅ্যাপ গ্রুপেও যুক্ত ছিল। টেলিগ্রাম মারফত তাদের কাছে প্রশিক্ষণ-সহ নানা ছবি ও ভিডিয়ো আসত। হোয়্যাটসঅ্যাপ গ্রুপটির নাম ‘গজওয়াত-উল-হিন্দ’।
গোয়েন্দারা জানান, গজয়া-ই-হিন্দ শব্দটি ভারতের বিরুদ্ধে ‘ধর্মযুদ্ধ’ ঘোষণা করতে ইসলামি জঙ্গি সংগঠনগুলি ব্যবহার করে। এই মনোভাবে বিশ্বাসী সংগঠনগুলির মূল লক্ষ্য ভারতীয় উপমহাদেশে শরিয়তি আইন চালু এবং মৌলবাদী রাষ্ট্রগঠন। সেই ভাবনার শরিক জঙ্গি সংগঠন আনসার গজওয়াত-উল-হিন্দ নামে পাকমদতপুষ্ট এবং আল কায়দাপন্থী কাশ্মীরভিত্তিক একটি জঙ্গি সংগঠন, সম্প্রতি একাধিক ঘটনায় যাদের নাম জড়িয়েছে। প্রসঙ্গত, ধৃতদেরও কাশ্মীর যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল।
এ সবের ভিত্তিতেই গোয়েন্দারা মনে করছেন, ভারতীয় উপমহাদেশের আল-কায়দা শাখার সঙ্গেই যুক্ত মুর্শিদাবাদের ন’ জন ‘জঙ্গি’। তবে এই ন’জনের বাইরে আরও অনেকেই আছে। গোয়েন্দা সূত্রে সূত্রের দাবি, শুক্রবার বিকেলে ধৃত আল মামুন কামালের বাড়িতে বৈঠকে বসেছিল সংগঠনের সদস্যেরা। মূলত সংগঠনের আগামী কার্যকলাপ নিয়ে আলোচনা হয়েছিল। ওই বৈঠকে উপস্থিত আরও কয়েক জনের নামও ধৃতেরা গোয়েন্দাদের জানিয়েছে।
এনআইএ সূত্রের খবর, ধৃতেরা নিজেদের বৈঠকের বার্তা সোশ্যাল মিডিয়া বা ফোনে আলোচনা না-করে মুখে-মুখে খবর পৌঁছে দিত। শুক্রবার বিকেলের বৈঠকও সে ভাবে ঠিক হয়েছিল। এনআইএ তা জেনে ফেলে এবং তার পরেই গ্রেফতারের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সূত্রের দাবি, সম্প্রতি যে ভাবে ডার্ক ওয়েব এবং মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করে জঙ্গিরা যোগাযোগ রাখছে তা আটকাতে নেট-নজরদারির বিশেষ কৌশল চালু করেছেন গোয়েন্দারা। সেই ‘ট্র্যাকিং’ ব্যবস্থার মাধ্যমেই এদের গতিবিধির কথা জানতে পারে এনআইএ। সাধারণ ই-মেলকেও বিশেষ ভাবে বদলে ফেলত ধৃতেরা এবং প্রত্যেকের একাধিক ই-মেল আইডি রয়েছে। বাজেয়াপ্ত হওয়া ল্যাপটপ এবং প্রায় তিরিশটি সিম কার্ড বিশ্লেষণ করে এ বিষয়ে আরও তথ্য পেতে চাইছেন এনআইএ-র গোয়েন্দারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy