(বাঁ দিকে) শতাব্দী রায়, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
‘এমন কে আছে, যার কখনও কিছু হারায়নি / এমন কে আছে যার কিছু হারাবার দুঃখ নেই...’। এ তো কবিতার কথা। ‘যার যা হারিয়ে গেছে’ কবিতায় লিখেছিলেন সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়।
কিন্তু সোমবার দিল্লিতে যে ভাবে একের পর এক হারানোর, হারিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটল তা আদৌ কবিতার মতো ‘রোমান্টিক’ নয়। রাজঘাটে দলীয় কর্মসূচিতে যোগ দিতে গিয়েছিলেন এই রাজ্যের মন্ত্রী, শাসকদলের সাংসদ, বিধায়করা। ভিড় হয়েছিল, তবে তাতে হারিয়ে যাওয়ার মতো নয়। দিল্লি পুলিশ একটা সময়ের পরে যখন রাজঘাটে গান্ধীজির সমাধিস্থল ছাড়ার জন্য তাড়া দিতে শুরু করে, তখন একটু হুড়োহুড়ি লেগে যায়। তার মধ্যেই মোবাইল ফোন হারিয়ে ফেলেন তৃণমূলের দুই সাংসদ— লোকসভার অভিনেত্রী-সাংসদ শতাব্দী রায় এবং রাজ্যসভার চিকিৎসক-সাংসদ শান্তনু সেন।
শতাব্দীর যে ফোন হারিয়েছে, তা জানিয়েছেন শান্তনুই। নিজের ফোনটি হারিয়ে পুলিশে অভিযোগও দায়ের করেছেন তিনি। শতাব্দীর হারানো ফোন একটা সময় পর্যন্ত বেজে বেজে থেমে গিয়েছে। তার পরে ডায়াল শেষ হওয়ামাত্রই দেখাচ্ছে ‘কল এন্ডেড’ লেখা।
ভিড়ে সবচেয়ে বেশি হারায় জুতো, চপ্পল। সেটাও হারাল। হারালেন রাজ্যের দুই মন্ত্রী। বিদ্যৎমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস এবং অগ্নিনির্বাপণ দফতরের মন্ত্রী সুজিত বসু হারিয়ে ফেললেন চপ্পল এবং জুতো। রাজঘাটে গান্ধীর সমাধিতে ফুল দিয়ে এসে সুজিত দেখেন, তাঁর জুতো স্বস্থানে নেই। এ দিক-ও দিক তাকিয়ে কোথাও না পেয়ে তাঁকে খালি পায়েই গাড়ির দিকে এগিয়ে যেতে হয়। আর অরূপ বলেন, দিল্লি পুলিশের এক অফিসার বুট পরে তাঁর পা মাড়িয়ে দিয়েছেন! তাতেই হারিয়েছে তাঁর চপ্পল। এক পায়ের কড়ে আঙুলে চোটও লেগেছে।
নিজের কিছু না হারালেও নিজে খানিক ক্ষণের জন্য হারিয়ে যান রাজ্যের আর এক মন্ত্রী গোলাম রব্বানি। সংখ্যালঘু বিষয়ক এবং মাদ্রাসা শিক্ষা মন্ত্রী রাজঘাট থেকে বেরিয়ে হারিয়ে ফেলেন পথ। প্রত্যক্ষদর্শীদের বিবরণ অনুযায়ী, রাজঘাটে কর্মসূচি শেষে যখন হুড়োহুড়ি পড়ে যায়, তখন নিজের গাড়িটি কোথায় রাখা আছে, তা আর খুঁজে পাচ্ছিলেন না রব্বানি। তখন কি তাঁর প্রেমেন্দ্র মিত্রের ‘হারিয়ে’ কবিতার সেই পঙ্ক্তি মনে পড়েছিল? ‘পথ খুঁজে যারা হয়রান কোনদিন সেই ময়দান তারা পেয়ে যায়, হঠাৎ অবাক হয়ে আশেপাশে ওপরে তাকায়’। তবে কিছু ক্ষণের মধ্যেই হারানো পথ খুঁজে পেয়ে নিজের গাড়ি পর্যন্ত পৌঁছন রব্বানি।
এই পাঁচের হারানোর মধ্যে নতুনত্ব থাকলেও ষষ্ঠ জনের ক্ষেত্রে তা নয়। তিনি মাঝেমাঝেই হারান মেজাজ। রাজনৈতিক মঞ্চ থেকে আদালতে অনেক বার মেজাজ হারাতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। সোমবার নয়াদিল্লি রাজঘাটেও একাধিক বার হারালেন। পুলিশের বাধায় দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে যখন মাঝপথেই সাংবাদিক বৈঠক শেষ করে ফেলতে হল, তখন সবচেয়ে বেশি মেজাজ হারাতে দেখা গেল শ্রীরামপুরের তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে।
এই হারানোর বিনিময়ে কি বাংলার ‘বঞ্চিত’ মানুষের প্রাপ্য অর্থ দিল্লি থেকে নিয়ে আসতে পারবেন তাঁরা? দেখা যাক!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy