এনআরসির বিরুদ্ধে প্রচার চালাচ্ছেন তৃণমূল প্রার্থী তপন দেবসিংহ। নিজস্ব চিত্র
ওঁরা দাঁড়িয়েছিলেন আমবাগানের পাশেই। একটু দূরে তৃণমূল প্রার্থী তপন দেবসিংহের কর্মিসভা হওয়ার কথা। বেলা তখন প্রায় এগারোটা। একটু পরেই গাড়িতে এসে নামলেন তপন। দেখে মান্নান আলি আর ইসমাইল আলি এগিয়ে এলেন তাঁর দিকে। দুই পঞ্চাশোর্ধ্ব চাষির একটাই প্রশ্ন, ‘‘দাদা, শুনছি এনআরসি হলে আমাদের দেশ থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হবে? ৫০-৬০ বছর আগেকার জমির দলিল আমরা কোথায় পাব? পরিবারের লোকেদের নিয়ে খুব চিন্তায় রয়েছি।’’
তপনের সঙ্গে ছিলেন অসীম ঘোষ, দীপা সরকার, দধিমোহন দেবশর্মার মতো তৃণমূলের নেতানেত্রীরা। তাঁরা ইসমাইল আর মান্নানকে সঙ্গে চলে এলেন কর্মিসভায়। সেখানে হাজির শ’খানেক লোকের মধ্যে রাজবংশী সম্প্রদায়ের বাসিন্দারাই বেশি। সেখানেই মান্নান ও ইসমাইলকে সামনে দাঁড় করিয়ে তপন বাসিন্দাদের প্রতি বলেন, ‘‘আপনারা মান্নান ও ইসমাইলের কথা শুনুন। এনআরসি নিয়ে ওঁরা কতটা আতঙ্কে রয়েছেন। আপনাদের অনেকের পক্ষেই কেন্দ্রীয় সরকারকে সত্তর দশকের আগের জমির নথি দেখানো সম্ভব নয়। এ রাজ্যে তৃণমূল যত দিন আছে, এনআরসি হবে না। তাই উপনির্বাচনে আমাকে জিতিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত শক্ত করুন।’’
ঘটনাস্থল কালিয়াগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রের বরুণা গ্রাম পঞ্চায়েত। শুধু বরুণাই নয়, পাশের বোচাডাঙা মিলিয়ে ২৫টিরও বেশি গ্রামে এনআরসির বিরুদ্ধে প্রচার চালালেন তপন। কখনও বাড়ি বাড়ি গিয়ে, আবার কখনও কর্মিসভা বা পাড়া বৈঠক করে প্রচার চালিয়েছেন তিনি। এনআরসি-কে সামনে রেখেই কালিয়াগঞ্জ শহরের শান্তি কলোনি ও বোচাডাঙ্গা গ্রাম পঞ্চায়েতে প্রচার চালান রাজ্যের অনগ্রসর কল্যাণ ও আদিবাসী উন্নয়নমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তিনি বলেন, ‘‘রাজবংশীদের উন্নয়নে রাজ্য সরকার বিভিন্ন প্রকল্প চালু করেছে। এ বারে আপনারাই ঠিক করুন, বিজেপিকে ভোট দিয়ে এনআরসি লাগু করে দেশছাড়া হবেন, নাকি উন্নয়নের পক্ষে তৃণমূলকে ভোট দিয়ে দেশের নাগরিকত্ব সুনিশ্চিত রাখবেন।’’ এ দিন কয়েকটি এলাকায় প্রচার চালান গোলাম রব্বানি এবং পার্থপ্রতিম রায়ও। বিজেপির জেলা সভাপতি নির্মল দামের বক্তব্য, ‘‘তৃণমূল নির্বাচনে জেতার জন্য এনআরসি নিয়ে বাসিন্দাদের ভুল বোঝাচ্ছে। নির্বাচনেই বাসিন্দারা জবাব দেবেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy