নিহত কাউন্সিলরের বাড়িতে ভি শিবদাসন। নিজস্ব চিত্র
এমন দিন এসে গিয়েছে যে নিজেদের দলই তাঁদের ভয়ের কারণ হয়ে উঠছে, নিহত নেতার বাড়িতে গিয়ে তৃণমূল নেতাকে এমন মন্তব্য করতে শোনা গেল একটি ভিডিয়োয়। বুধবার পশ্চিম বর্ধমানে এই ভিডিয়োটি ছড়িয়ে পড়ার পরেই বিতর্ক তৈরি হয়। ভিডিয়োর সত্যাসত্য আনন্দবাজার যাচাই করেনি। তবে আসানসোলের ওই তৃণমূল নেতা ভি শিবদাসন এই মন্তব্যের কথা মেনে নিয়ে দাবি করেন, নিহতের পরিবারকে সান্ত্বনা দিতেই তেমন বলেছেন তিনি।
তবে তৃণমূলের পশ্চিম বর্ধমানের পর্যবেক্ষক তথা রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের প্রতিক্রিয়া, ‘‘আমাদের দল একটি একতাবদ্ধ সংসার। সেখানে কোনও ভেদাভেদ নেই। কারও ব্যক্তিগত বা ব্যবসায়িক স্বার্থ থাকলে তাঁর ভয় থাকতে পারে। দলের অন্যদের ভয় হল সাম্প্রদায়িক শক্তিকে নিয়ে। সেই সাম্প্রদায়িক শক্তি যারা মোহনদাস কর্মচন্দ গাঁধীকে খুন করেছিল।’’
শনিবার রাতে বরাকরে বাড়ির সামনে গুলিতে খুন হন আসানসোলের ৬৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর খালেদ খান। পরিবার খালেদের তিন মাসতুতো ভাইয়ের নামে পুলিশে অভিযোগ করে। পারিবারিক বিবাদের জেরেই খুন বলে তদন্তকারীদের অনুমান। তবে অভিযুক্তদের মধ্যে এক জন যুব তৃণমূল নেতা। তাকে সংগঠন থেকে সরানোর কথা জানিয়েছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। শিবদাসন আগে দলের পশ্চিম বর্ধমান জেলা সভাপতি ছিলেন। লোকসভা ভোটে আসানসোলে তৃণমূলের হারের পরে সভাপতি করা হয় আসানসোলের মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারিকে। চেয়ারম্যান হন শিবদাসন। মঙ্গলবার খালেদের বাড়িতে সমবেদনা জানাতে যান তিনি। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ভিডিয়োটিতে তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘‘এত দিন দল করছি। কিন্তু এখনকার পরিস্থিতিতে খুশি নই। আমাদের শত্রু আমাদের নিজেদেরই লোক। না বিজেপির সঙ্গে ঝগড়া আছে যে মারতে আসবে। না সিপিএম বা কংগ্রেসের সঙ্গে বিবাদ রয়েছে যে মারতে আসবে। এমন দিন এসে গিয়েছে যে আমাদের ভয় নিজেদের দলের থেকেই। নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গিয়েছে।’’
তৃণমূলের নানা সূত্রের দাবি, আসানসোলে দলের অন্তর্কলহ নতুন নয়। জেলা সভাপতি বদলের পরে তাতে লাগাম তো দূর, দ্বন্দ্ব যে বেড়েছে তা এই মন্তব্যে সামনে এল। শিবদাসনের অবশ্য ব্যাখ্যা, ‘‘খালেদের পরিজনেরা আমার কাছে অভিযোগ করেন, খুনে অভিযুক্তেরা দলেরই লোক। তাঁদের সান্ত্বনা দেওয়ার সময়ে ওই কথা ছাড়া আমার আর কী-ই বা বলার ছিল?’’ জেলা সভাপতি জিতেন্দ্রর প্রতিক্রিয়া, ‘‘কোন পরিস্থিতিতে কোন প্রসঙ্গে উনি এই মন্তব্য করেছেন, তা জানা নেই।’’
‘ভাইরাল’ ভিডিয়োটি নজরে এসেছে বিজেপি নেতাদেরও। দলের পশ্চিম বর্ধমান জেলা সভাপতি লক্ষ্মণ ঘোড়ুইয়ের বক্তব্য, ‘‘আমরা আগেই বলেছি, তৃণমূলের অন্তর্কলহেই খুনের ঘটনা ঘটেছে। যে কোনও ঘটনায় তৃণমূল এখন আমাদের দায়ী করে। কিন্তু প্রকৃত পরিস্থিতি কী, তা এই মন্তব্যেই পরিষ্কার।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy