মহাকুম্ভে যাওয়ার হিড়িকে নয়াদিল্লি স্টেশনে পদপিষ্টের ঘটনায় ১৮ জনের প্রাণ গিয়েছে। তা নিয়ে শোরগোলের মধ্যে নয়াদিল্লি স্টেশনের মতোই উদ্বেগের ছবি দেখা গেল আসানসোল স্টেশনেও। লোটাকম্বল, চেয়ার নিয়ে হাজার হাজার কুম্ভযাত্রীকে স্টেশনে ঢুকতে দেখা গেল রবিবার সন্ধ্যায়। সেই পরিস্থিতি সামলাতে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছে রেল।
রবিবার সন্ধ্যায় আসানসোল-মুম্বই এক্সপ্রেস ট্রেন ধরতে আসানসোল স্টেশনে ভিড় জমান হাজার হাজার মানুষ। ট্রেন প্ল্যাটফর্মে ঢুকতেই স্টেশনের উদ্দেশে রওনা দেয় ওই ভিড়। কুম্ভযাত্রীদের হুড়োহুড়ি দেখে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাচ্ছেন, নয়াদিল্লি স্টেশনের মতোই পদপিষ্টের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল আসানসোলে।
দিল্লির মতো পরিস্থিতি যাতে তৈরি না হয়, তার জন্য আগে থেকেই সতর্ক ছিল রেল। সেইমতো বিশেষ ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছিল। সকালেই আসানসোল স্টেশন পরিদর্শন করে গিয়েছিলেন পূর্ব রেলের ডিআরএম চেতনা নন্দ সিংহ। তাঁর নির্দেশমতোই স্টেশনের বাইরে অস্থায়ী ক্যাম্প করে যাত্রীদের রাখা হয়েছিল। পার্সেল অফিসের পাশ দিয়ে বিকল্প রাস্তা করে দেওয়া হয়েছিল কুম্ভযাত্রীদের জন্য, যাতে তাঁরা নির্বিঘ্নেই আসানসোল-মুম্বই ট্রেন ধরতে পারেন। কিন্তু এত ব্যবস্থার পরেও সেই উদ্বেগের ছবিই ধরা পড়ল স্টেশনে।
নয়াদিল্লি স্টেশনে শনিবার রাতে পদপিষ্ট হয়ে ১৮ জনের মৃত্যু হয়। আহতেরা এখনও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। দিল্লি পুলিশ জানাচ্ছে, রেলের ঘোষণাকে কেন্দ্র করেই যাত্রীদের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছিল। ওই বিভ্রান্তির জেরেই পদপিষ্টের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল প্ল্যাটফর্মে। প্রয়াগরাজ যাওয়ার দু’টি ট্রেনের নাম প্রায় একই! একটির নাম ‘প্রয়াগরাজ স্পেশাল’ এবং অন্যটি ‘প্রয়াগরাজ এক্সপ্রেস’। এর জেরেই গোলযোগের সূত্রপাত বলে মনে করছে পুলিশ।
দিল্লি পুলিশ জানাচ্ছে, নামের শুরুতে ‘প্রয়াগরাজ’ থাকা দুই ট্রেনের ঘোষণা ঘিরেই বিভ্রান্তি ছড়ায়। নয়াদিল্লি স্টেশনের ১৪ নম্বর প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়ে ছিল ‘প্রয়াগরাজ এক্সপ্রেস’। এরই মধ্যে রেল ঘোষণা করে, ‘প্রয়াগরাজ স্পেশাল’ ১৬ নম্বর প্ল্যাটফর্মে আসছে। ফলে যে যাত্রীরা ১৪ নম্বর প্ল্যাটফর্মে পৌঁছে উঠতে পারেননি, তাঁরা মনে করেন ‘প্রয়াগরাজ এক্সপ্রেস’ ট্রেনটি ১৬ নম্বর প্ল্যাটফর্মে আসছে। এর ফলে শেষ মুহূর্তে মালপত্র নিয়ে এক প্ল্যাটফর্ম থেকে অন্য প্ল্যাটফর্মে যাওয়ার জন্য যাত্রীদের মধ্যে হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। সেই কারণেই পদপিষ্টের পরিস্থিতি তৈরি হয়। যদিও সেই দাবি উড়িয়ে দিয়েছে রেল!
শনিবার রাতে নয়াদিল্লি স্টেশন থেকে মোট চারটি ট্রেন ছিল প্রয়াগরাজে যাওয়ার। রেলের দাবি, সব ট্রেন সময়েই চলছিল। যদিও প্রাথমিক অনুসন্ধানের পরে পুলিশের দাবি, প্রয়াগরাজমুখী চারটি ট্রেনের মধ্যে তিনটি ট্রেনই দেরিতে চলছিল। এর ফলে স্টেশনে যাত্রীদের অপ্রত্যাশিত ভিড় হয়ে যায়।