গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
তৃণমূল নেতা শিবপ্রসাদ হাজরা ওরফে শিবু গ্রেফতার হয়েছেন শনিবার। রবিবার তাঁকে আদালতে তোলার সময় উঠল ‘চোর-চোর’ স্লোগান। আর তৃণমূল নেতার গ্রেফতারি ‘উপলক্ষে’ সন্দেশখালির রাস্তায় রাস্তায় নেমে মিষ্টি বিতরণ করলেন মহিলারা। কেউ বললেন, ‘‘এ বার শান্ত হবে এলাকা। শুধু শাহজাহান বাকি। তার পর তো পুরো শান্তি।’’ বিলি হওয়া গরম জিলিপিতে কামড় বসিয়ে এক মহিলার ঘোষণা, ‘‘এ বার তো শুধু মিষ্টিমুখ হল। শাহজাহান ধরা পড়লেই পিকনিক হবে।’’
সন্দেশখালি-২ ব্লকের সভাপতি শিবুর নাম উঠে আসে শাহজাহানের সূত্র ধরে। জমি দুর্নীতি থেকে মহিলাদের উপর নির্যাতন— তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ বিস্তর। শনিবার তাঁকে ন্যাজাট এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রবিবার বসিরহাট থানা থেকে বসিরহাট মহকুমা আদালতে তোলার সময় শিবুকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন স্থানীয়দের একাংশ। এমনকি, থানার সামনে শিবুকে দেখেই উঠল ‘চোর-চোর’ স্লোগান। বসিরহাট থানার সামনে ওই বিক্ষোভ সামলাতে পুলিশ যখন পদক্ষেপ করছে, তখন ভিড় থেকে উড়ে আসে টুকরো টুকরো মন্তব্য এবং হুঁশিয়ারি। কেউ বললেন, ‘‘আদালতে না, ওকে সাধারণ মানুষের হাতে তুলে দেওয়া হোক।’’ কেউ চিৎকার করলেন, ‘রেপিস্ট’ বলে।
থানা থেকে বেশ খানিকটা দূরে সন্দেশখালির গ্রামে গ্রামে দেখা গেল হাতে মিষ্টির প্যাকেট নিয়ে নেমেছেন মহিলারা। ব্যাপারটা কী? হাতে মিষ্টি ধরিয়ে দিয়ে হাসিমুখে এক মহিলা বললেন, ‘‘শিবু গ্রেফতার তো। তাই...।’’ মহিলারা একে অপরকে মিষ্টি খাইয়ে শিবুর গ্রেফতারির উদ্যাপন করছেন। পথচারি থেকে টোটোচালক, যাকেই সামনে পাচ্ছেন জিলিপি, লাড্ডু ধরিয়ে দিচ্ছেন। এক টোটোচালক টোটোতে বসে তারিয়ে তারিয়ে জিলিপি খাচ্ছিলেন। তাঁর মন্তব্য, ‘‘এলাকায় এ বার শান্তি ফিরল।’’ সন্দেশখালির মহিলারা বলছেন, তাঁরা সবাই ভীষণ আনন্দিত। তবে আরও আনন্দ পাবেন, যে দিন শাহজাহান গ্রেফতার হবেন। এক জন বললেন, ‘‘সে দিন তো গ্রামে গ্রামে পিকনিক হবে।’’
গত ৫ জানুয়ারি শাহজাহানের বাড়িতে ইডির তল্লাশি করতে যাওয়া এবং আধিকারিকদের আক্রান্ত হওয়ার পর থেকে আর দেখা মিলছিল না তাঁর। শিবুও তার পর থেকে অধরা ছিলেন। গত ৭ ফেব্রুয়ারি শিবু হাজরা, উত্তম সর্দারদের বিরুদ্ধে নারী নির্যাতনের অভিযোগে গর্জে ওঠে সন্দেশখালি। ভাঙচুর চলে জেলা পরিষদের সদস্য তথা তৎকালীন অঞ্চল তৃণমূল সভাপতি উত্তমের বাড়িতে। পর দিন ভাঙচুর চলে শিবুর বাগানবাড়ি এবং মুরগির খামারে। আগুনও ধরিয়ে দেওয়া হয়। সেই শিবুকে ১০ দিনের হেফাজতে চেয়ে আদালতে আবেদন করেছে পুলিশ। তবে সন্দেশখালির মহিলারা বলছেন, তাঁরা শাহজাহানের গ্রেফতারির অপেক্ষায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy