Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
জেএমবি-যোগে ধৃত ভাতারের যুবক

শিমুলিয়ার মাদ্রাসায় নিয়মিত যেত আসাদুল্লা

মঙ্গলবার ভোরে কলকাতা পুলিশের বিশেষ টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ) আসাদুল্লা ওরফে রাজাকে চেন্নাইয়ের থোরিয়াপক্কনম এলাকার একটি বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে। মাস তিনেক ধরে ওই বাড়িতেই ভাড়া ছিল সে। তবে খাগড়াগড় বিস্ফোরণেরপ পর থেকেই এনআইএ-র নজরে ছিল আসাদুল্লা।

ডাঙাপাড়ার এই বাড়িতেই থাকত আসাদুল্লা। —নিজস্ব চিত্র

ডাঙাপাড়ার এই বাড়িতেই থাকত আসাদুল্লা। —নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
ভাতার শেষ আপডেট: ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০১:২৮
Share: Save:

টিনের চালের দু’কামরার মাটির বাড়ি। উঠোনে ভরা আগাছা। মাটির বারান্দায় পাখির বাসা। ভাতার থানার নিত্যানন্দপুর পঞ্চায়েতের ডাঙাপাড়ার এই বাড়ির দিকে একবার তাকালেই বোঝা যায়, এখানে দীর্ঘকাল ধরে কেউ থাকে না। তবে একসময় এখানেই থাকত জামাতুল মুজাহিদিন (বাংলাদেশ) ওরফে জেএমবি-র জঙ্গি সন্দেহে ধৃত আসাদুল্লা শেখ।

মঙ্গলবার ভোরে কলকাতা পুলিশের বিশেষ টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ) আসাদুল্লা ওরফে রাজাকে চেন্নাইয়ের থোরিয়াপক্কনম এলাকার একটি বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে। মাস তিনেক ধরে ওই বাড়িতেই ভাড়া ছিল সে। তবে খাগড়াগড় বিস্ফোরণেরপ পর থেকেই এনআইএ-র নজরে ছিল আসাদুল্লা।

জাতীয় তদন্তকারী সংস্থার এক আধিকারিক বলেন, “খাগড়াগড় বিস্ফোরণের পরে আমাদের কাছে বেশ কয়েকজনের নাম আসে। তার মধ্যে ভাতারের আসাদুল্লার নামও ছিল। মঙ্গলকোটের কুলসুনো গ্রামের জঙ্গি আবুল কালামের সঙ্গেই শিমুলিয়ার মাদ্রাসায় যেত সে। জেহাদি প্রশিক্ষণও নিত।’’ গত কয়েক বছরে বেশ কয়েকবার ভাতারের ডাঙাপাড়ার এই বাড়িতেও তল্লাশি চালিয়েছেন তদন্তকারীরা।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আসাদুল্লারা ছ’ভাই। সে পঞ্চম। প্রতিবেশীরা জানান, খাগড়াগড় বিস্ফোরণের পর থেকেই বাড়িছাড়া সে। কিছুদিন পরেই আসাদুল্লার স্ত্রী হালিমা বিবি তাঁর দুই মেয়েকে নিয়ে মঙ্গলকোটের কুলসুনো গ্রামে বাপেরবাড়ি চলে যান। তারপর থেকে ওই বাড়ি তালাবন্ধ হয়ে রয়েছে। শ্বশুরবাড়িতে যাতায়াতের সূত্রেই আবুল কালামের সঙ্গে আসাদুল্লার পরিচয়, জানান এনআইয়ের এক কর্তা।

নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক কয়েকজন পড়শি বলেন, “ওই সময় এনআইএ আসাদুল্লার খোঁজে এসে আমাদেরও জেরা করেছিল। তারপর থেকে ওই বাড়ির ধারেকাছে যাই না আমরা।’’ এ দিন আসাদুল্লার ধরা পড়ার খবর পৌঁছতেই ডাঙাপাড়া কার্যত ভয়ে সিঁটিয়ে গিয়েছে। কেউ মুখ খুলতে রাজি হচ্ছেন না।

গ্রামেই থাকেন আসাদুল্লার মা, দাদারা। ভাই কি ভাবে ‘জঙ্গি’ হয়ে উঠল, ধারণা নেই আসাদুল্লার দিনমজুর দাদা এবনেসউদ শেখ ও বাসেদ শেখের। তাঁদের দাবি, ১২-১৪ বছর আগে চেন্নাইয়ে ইট ভাটার কাজে যাওয়ার নাম করে বাড়ি থেকে বেড়িয়ে গিয়েছিল ভাই। মাঝেমধ্যে বাড়ি আসত। তবে পাঁচ বছর ধরে আর কোনও যোগাযোগ নেই। তাঁরা বলেন, “ভাই যদি দোষী হয়, তাহলে সাজা পাবে। আর নির্দোষ হলে ছাড়া পাবে।’’ পাঁচ বছর ছেলেকে দেখেননি অশীতিপর বৃদ্ধা আশেদা বিবি। কাঁপা কাঁপা গলায় তিনি বলেন, ‘‘ছেলেটাকে দেখতেও পাইনি কত দিন। কোথায় থাকে, কী করে, কে জানে!’’

অন্য বিষয়গুলি:

JMB Khagragarh Blast Shimulia Madrasa
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy