Advertisement
E-Paper

বঙ্গোপসাগর থেকে কি ক্রমে ঝড়ঝাপটার সংখ্যা বাড়ছে? ‘ডেনা’ ঘিরে প্রশ্ন, কী বলছে আবহাওয়া দফতর

বৃষ্টি আর বৃষ্টিতে কেটেছে দুর্গাপুজো। বঙ্গে বর্ষার যেন সময়-অসময় নেই। নিম্নচাপের বৃষ্টির জল শুকোতে না শুকোতেই ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ‘ডেনা’। সম্প্রতি ঘূর্ণিঝড়ের সংখ্যা কি বাড়ছে?

গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ অক্টোবর ২০২৪ ০৯:১৩
Share
Save

আবহবিদেরা বলেন, বিশ্বের সবচেয়ে প্রাণঘাতী ঘূর্ণিঝড়ের উৎপত্তিস্থল বঙ্গোপসাগর। শেষ ২০০ বছরে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় প্রাণ কেড়েছে লক্ষ লক্ষ মানুষের। বঙ্গোপসাগরের ত্রিভুজ আকৃতি এবং ভৌগোলিক অবস্থানই ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির কারণ। কিন্তু সম্প্রতি কি বাংলার উপর দিয়ে ঝড়ঝাপটা বেশি যাচ্ছে? গত মে মাসে ‘রেমাল’ এবং জুলাইয়ে ঝড়-সহ গভীর নিম্নচাপের পর ঘূর্ণিঝড় ‘ডেনা’ ধেয়ে আসার সম্ভাবনায় এই আলোচনা শুরু হয়েছে। এ নিয়ে আবহাওয়া দফতরের কী মত? কী বলছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর?

বৃষ্টি আর বৃষ্টিতে কেটেছে দুর্গাপুজো। বঙ্গে বর্ষার যেন সময়-অসময় নেই। নিম্নচাপের বৃষ্টির জল শুকোতে না শুকোতেই ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড়। আবহবিদেরা জানাচ্ছেন, বঙ্গোপসাগরে গভীর নিম্নচাপের সৃষ্টি হচ্ছে মঙ্গলবারই। বুধবার সেটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়ে আছড়ে পড়তে পারে ওড়িশা এবং বাংলার উপকূলে। কাতার যে ঘূর্ণিঝড়ের নাম দিয়েছে ‘ডেনা’। অর্থ, মুক্ত বা স্বাধীনতা। হাওয়া অফিস পূর্বাভাস দিয়েছে, ঝড়ের গতিবেগ থাকতে পারে ঘণ্টায় ১০০ থেকে ১২০ কিলোমিটার। বাংলা ছাড়াও ওড়িশা এবং তামিলনাড়ুর জন্য সতর্কতা জারি হয়েছে। আবহাওয়া দফতর বলছে, পর পর নিম্নচাপ সৃষ্টির ফলে দুর্যোগের ব্যবধান কমে এসেছে বটে, তবে ঘূর্ণিঝড় হচ্ছে ‘নিয়মমাফিক’। অর্থাৎ, ঘূর্ণিঝড়ের ধরন বদল হয়নি। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের এইচ আর বিশ্বাস বলেন, ‘‘গত ১০০ বছরের যে গড় রেকর্ড রয়েছে, তাতে ঘূর্ণিঝড়ের সময়, সংখ্যা বদলে গিয়েছে, এমন প্রমাণ পাওয়া যায়নি।’’ বস্তুত, অক্টোবর, নভেম্বর এবং ডিসেম্বর, বছরের এই শেষ তিন মাস পশ্চিমবঙ্গ-সহ পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে গড় ঘূর্ণিঝড়ের সংখ্যা একই আছে। তিনি জানিয়েছেন, গত ১০০ বছরের যে গড় পাওয়া যাচ্ছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির ‘আসল সময়’ মূলত বছরের শেষ তিন মাস। এ ছাড়া মার্চ থেকে মে— এই ত্রৈমাসিকের মধ্যে একটি থেকে দুটি ঘূ্র্ণিঝড় হয়। চলতি বছরে যেমন ‘রেমাল’ হয়েছে।

গত মে মাসে পশ্চিমবঙ্গ এবং বাংলাদেশের উপকূলে আছড়ে পড়ে ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’। তার প্রভাবে প্রবল ঝড়বৃষ্টি হয় কলকাতা, হাওড়া এবং হুগলিতে। স্থলভাগে ‘ল্যান্ডফল’-এর সময় ‘রেমাল’-এর গতিবেগ ঘণ্টায় ১১০-১২০ কিলোমিটার ছিল। ঝোড়ো হাওয়ায় কলকাতার কয়েকটি জায়গায় গাছ ভেঙে পড়ে রাস্তা অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। জেলাগুলিতেও অল্পবিস্তর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তবে তা তেমন বড় নয়। হাওয়া অফিস জানাচ্ছে, বছরে দু’বার সাধারণত ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কা থাকে। তা ছাড়া নিম্নচাপের বৃষ্টিতে দুর্ভোগ পোহাতে হয়। কিন্তু ঘূ্র্ণিঝড়ের হিসাবে কোনও অনিয়ম লক্ষ করা যাচ্ছে না। এ বছরের খতিয়ানে চোখ রাখলে দেখা যাচ্ছে, মোট দু’টি ঘূর্ণিঝড় হয়েছে এ পর্যন্ত। ২৪ থেকে ২৮ মে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় রেমালের দাপট দেখা গিয়েছে। তার পর অগস্টে ধেয়ে এসেছে ‘আসনা’। ওই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব বাংলায় পড়েনি। তবে গুজরাতের জনজীবন বিপর্যস্ত হয়েছে। গুজরাত উপকূলে আরব সাগরের উপর গভীর নিম্নচাপ ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়ে রাজকোট, দ্বারকা, বরোদা, কচ্ছ এবং জামনগরের মতো জায়গাকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। ভারী বর্ষণের কারণে বিধ্বস্ত হয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর রাজ্য। প্রাণ গিয়েছে প্রায় ৪০ জনের। তা ছাড়া ১৯-২০ জুলাই বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট একটি নিম্নচাপের প্রভাবে বৃষ্টি হয়েছে রাজ্যে। অগস্টে গভীর নিম্নচাপ সৃষ্টি হয়েছিল। তাতে ঝাড়খণ্ড-সহ প্রতিবেশী রাজ্যগুলিতে ভারী বৃষ্টি হয়েছে। আর বাংলায় এখনও পর্যন্ত শেষ নিম্নচাপের প্রভাব পড়েছে গত ৩১ অগস্ট থেকে ২ অক্টোবর। ২০২২ এবং ’২৩ সালেও একই প্রবণতা দেখা গিয়েছে। তাই ঘূর্ণিঝড় বেড়ে গিয়েছে, এমনটা মনে করার কোনও প্রভাব নেই। গত কয়েক বছরের গড় দেখে এমনটাই বলছেন আলিপুর আবহাওয়া দফতরের এইচ আর বিশ্বাস।

The Bay of Bengal Cyclonic Storm Cyclone Dana Cyclone Weather

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}