Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪

সেতু হোক, শাখা সংগঠনের স্বাধীনতা নিয়ে চর্চা তৃণমূলে

ছাত্র, যুব, মহিলা, শ্রমিক বা কৃষক—লোকসভা ভোটে দলের কোনও শাখা সংগঠনই কি তৃণমূলকে প্রত্যাশিত সাহায্য করতে পেরেছে?

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

রবিশঙ্কর দত্ত
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ জুলাই ২০১৯ ০১:৪৩
Share: Save:

শাখা সংগঠন কি শুধু দলের জয় গানই করবে? তাদের নিজস্ব দাবি বা চাহিদা নিয়ে আন্দোলন থাকবে না? লোকসভা ভোটের ফল পর্যালোচনায় এই প্রশ্ন উঠেছে তৃণমূলের অন্দরে।

ছাত্র, যুব, মহিলা, শ্রমিক বা কৃষক—লোকসভা ভোটে দলের কোনও শাখা সংগঠনই কি তৃণমূলকে প্রত্যাশিত সাহায্য করতে পেরেছে? লোকসভা নির্বাচনে ধাক্কা খাওয়ার পর শাখা সংগঠন নিয়ে এই বিশ্লেষণ শুরু হয়েছে শাসকদলে। নেতৃত্বের একটা বড় অংশের ধারণা, আন্দোলন ও কর্মসূচিতে স্বাধীনতা না থাকায় প্রায় কোনও শাখারই আলাদা কোনও প্রভাব তৈরি হয়নি সংশ্লিষ্ট অংশের মধ্যে। তাই বিভিন্ন অংশের অপূর্ণ প্রত্যাশাকে কাজে লাগানোর সুযোগ পেয়েছে বিরোধীরা।

সেই সূত্রেই শাখা সংগঠনের স্বাধীনতা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে তৃণমূলের অন্দরে। দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘শাখা সংগঠনে দলের নিয়ন্ত্রণ যেমন থাকবে, তেমন তাদের স্বাধীনতার বিষয়টিও গুরুত্বপূর্ণ। তবে সেই আন্দোলন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দেখানো পথে হওয়াই বাঞ্ছনীয়। দল তা-ই দেখে।’’

লোকসভা নির্বাচনে সরকারি কর্মচারীদের ভোটে ধাক্কা খেয়েছে তৃণমূল। ডিএ, বেতন কমিশনের মতো কয়েকটি বিষয় নিয়ে রাজ্য সরকারের প্রতি ক্ষোভ তৈরি ছিল তাঁদের। এই অংশে প্রভাবের অভাবেই দলের সরকারি কর্মচারী সংগঠন তা সামাল দিতে পারেনি বলেই সাংগঠনিক বিশ্লেষণে মেনে নিয়েছেন কর্মচারী নেতারাই। দলীয় নেতৃত্বের একাংশের মতে, সরকারের সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও কর্মচারীদের প্রাপ্যকে স্বীকৃতি দিতে আন্দোলন দরকার। তাতে তাঁদের অসন্তোষ দলের বিরুদ্ধে যেত না।

একই ভাবে যুব সমাজের প্রত্যাশার সঙ্গেও গলা মেলানোর প্রয়োজন মেনে নিচ্ছেন দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। সে ক্ষেত্রে শীর্ষনেতাদের অনেকেই মনে করেন, মূল্যবৃদ্ধি, সাম্প্রদায়িকতা নিয়ে কেন্দ্র বিরোধী আন্দোলন হয়েছে। কিন্তু একই ভাবে রাজ্য সরকারের কাছে যুব সমাজের কর্মসংস্থানের প্রত্যাশা নিয়ে পথে নামলে তাদের সঙ্গে রাখা সহজ হতে পারত। এ ভাবে প্রায় সব ক্ষেত্রেই অপ্রাপ্তি নিয়ে তৈরি ক্ষোভে ‘বাষ্প’ বার করে দেওয়া যেত বলে ধারণা দলের একাংশের। দলীয় নেতৃত্বের ব্যতিক্রমী অভিজ্ঞতা কৃষি ও কৃষক নিয়ে।

দলের এক নেতার কথায়, ‘‘তৃণমূল আমলে কৃষকেরা সরাসরি কাজ পেয়েছেন। ভোটে তার ফল স্পষ্ট।’’ তবু ফসলের ন্যায্য দাম, ফড়েমুক্ত বাজারের মতো দাবিতে বছরভর কর্মসূচির প্রয়োজন রয়েছে বলেও মনে করেন তাঁরা।

তৃণমূল আমলে সব থেকে সঙ্কটে রয়েছে দলের ছাত্র সংগঠন। ভর্তির প্রক্রিয়া বদল হওয়ায় ক্যাম্পাসে তাদের চেনা ভূমিকা কমেছে। ছাত্র সংসদ নির্বাচনও বন্ধ। এই অবস্থায় সংগঠন চলবে কীভাবে, ছাত্রনেতাদের এমন প্রশ্নের মুখে পড়তে হচ্ছে দলীয় নেতৃত্বকে। প্রাক্তন ছাত্রনেতা তথা রাজ্যের এক মন্ত্রীর কথায়, ‘‘এ রকম ভাবে চললে দলের সাপ্লাই লাইন বন্ধ হয়ে যাবে।’’

ঘুরে দাঁড়ানোর প্রস্তুতিপর্বে শাখা সংগঠনের স্বাধীনতার প্রয়োজন মেনে নিয়েই আলোচনা চলছে তৃণমূলে। এ সম্পর্কে পার্থবাবু বলেন, ‘‘সর্বত্রই শাখা সংগঠন দল ও সরকারের সঙ্গে মানুষের সেতুবন্ধনের কাজ করে। এ সব নিয়ে সব সময়ই আলোচনা চলে।’’

এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy