Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪

সংরক্ষণ চালু রাজ্যেও, তবু ইডব্লিউএস পেতে হিমশিম

কেন্দ্রীয় ভাবে জারি হওয়া নির্দেশিকা অনুসারে ইডব্লিউএস শংসাপত্র পেতে গেলে কিছু শর্ত পূরণ করতে হবে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

সন্দীপন চক্রবর্তী
শেষ আপডেট: ২৮ অগস্ট ২০১৯ ০৩:২১
Share: Save:

কেন্দ্রীয় সরকারের সিদ্ধান্ত অনুসরণ করে রাজ্য সরকার ঘোষণা করে দিয়েছে গত মাসেই। বিধানসভার গত অধিবেশন চলাকালীন রাজ্য মন্ত্রিসভায় পাশ করিয়ে অর্থনৈতিক ভাবে দুর্বল (ইডব্লিউএস) শ্রেণির জন্য ১০% সংরক্ষণ কার্যকর করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে ওই সংরক্ষণের সুযোগ নেওয়ার জন্য শংসাপত্র জোগাড় করতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। সর্বভারতীয় নানা পরীক্ষায় বসতে ইচ্ছুক পড়ুয়াদের ক্ষেত্রে এমন সমস্যার কথা পৌঁছেছে শিক্ষা দফতরের কানেও। গোটা প্রক্রিয়ার সরলীকরণের দাবি উঠেছে।

কেন্দ্রীয় ভাবে জারি হওয়া নির্দেশিকা অনুসারে ইডব্লিউএস শংসাপত্র পেতে গেলে কিছু শর্ত পূরণ করতে হবে। তার মধ্যে আছে— পরিবারের বার্ষিক আয় ৮ লক্ষ টাকার কম হতে হবে, কৃষিজমি থাকলে তার পরিমাণ ৫ একরের কম হতে হবে, ফ্ল্যাট থাকলে তার আয়তন ১ হাজার বর্গফুটের মধ্যে হতে হবে এবং রেসিডেন্সিয়াল প্লট থাকলে তার আয়তন এলাকা ভেদে ১০০ বা ২০০ বর্গ গজের কম হতে হবে। সমস্যা দেখা দিয়েছে, আবেদনকারীর জানানো তথ্য যাচাই করে সুপারিশের জটিল প্রক্রিয়া নিয়ে। তফসিলি জাতি বা উপজাতির ক্ষেত্রে বিডিও দফতর থেকে শংসাপত্র নেওয়া সম্ভব। কিন্তু ইডব্লিউএস-এ এমন কোনও এক জানালা পদ্ধতি এখনও নেই।

ভুক্তভোগীদের বক্তব্য, আবেদনপত্রে মোট ১৩টা বিষয় পূরণ করতে হচ্ছে। গ্রামীণ এলাকায় রোজগার বা জমির খতিয়ান সংক্রান্ত সুপারিশ লেখানোর জন্য তাঁরা সাধারণত যাচ্ছেন পঞ্চায়েতের প্রধান বা উপ-প্রধানের কাছে। তিনি যদি লিখে দেন, তার পরে বিডিও-র দফতরে যেতে হচ্ছে। বিডিও-র দফতর থেকে তথ্য যাচাইয়ের জন্য সময় নেওয়া হচ্ছে। তার পরে কাগজপত্র যাচ্ছে মহকুমা শাসকের কাছে। শংসাপত্র জারি করার ক্ষমতা দেওয়া আছে জেলাশাসক বা কোনও স্টাইপেন্ডিয়ারি ম্যাজিস্ট্রেটকে। সংশ্লিষ্ট এলাকার মহকুমা শাসকও শংসাপত্র দিতে পারবেন। ভুক্তভোগীরা জানাচ্ছেন, গ্রামের ক্ষেত্রে খামার বা গবাদি পশু রাখার জায়গাও অনেক সময় বাস্তুজমির খতিয়ানে দেওয়া থাকে। তার ফলে রোজগার কম হলেও সেই খতিয়ানের নিরিখে আবেদন খারিজ হয়ে যাচ্ছে।

নেট পরীক্ষার জন্য ইডব্লিউএস-এর আবেদনকারী এক পড়ুয়ার কথায়, ‘‘একটা শংসাপত্রের জন্য এত কাগজ এত জায়গা থেকে জোগাড় করতে হচ্ছে। সময় চলে যাচ্ছে প্রচুর। এই ভাবে চললে পরের নেট পরীক্ষার সময়েও ইডব্লিউএস-এর সুযোগ পাব না!’’ আবার নদিয়া জেলায় কর্মরত এক বিডিও-র বক্তব্য, ‘‘আমাদের হাত-পা বাঁধা। নিয়মে যেমন আছে, সে সব মিলিয়েই কাজ করতে হচ্ছে।’’

শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় অবশ্য সমস্যা সম্পর্কে সহানুভূতিশীল। তাঁর বক্তব্য, ‘‘সরকার সিদ্ধান্ত নিয়ে বিষয়টি চালু করে দিয়েছে। কিন্তু পদ্ধতিগত জটিলতা নিয়ে নানা অভিযোগ যে আসছে, তার সুরাহার জন্য কী করণীয় দেখতে হবে। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করব।’’

অন্য বিষয়গুলি:

EWS EWS Certificate Partha Chatterjee
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE