(বাঁ দিকে) নিশিকান্ত দুবে এবং সুব্রত মৈত্র। —ফাইল চিত্র।
বাংলার মালদহ ও মুর্শিদাবাদ নিয়ে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের দাবি সংসদে তুলে শোরগোল ফেলে দিয়েছেন ঝাড়খণ্ডের গোড্ডার বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে। তাঁর দাবিকে সমর্থন করেছে মুর্শিদাবাদের বিজেপি বিধায়ক গৌরীশঙ্কর ঘোষ। এ বার মুর্শিদাবাদ জেলার বহরমপুরের বিজেপি বিধায়ক সুব্রত মৈত্র আরও এক ধাপ এগিয়ে মালদহ-মুর্শিদাবাদের সঙ্গে দক্ষিণ দিনাজপুর ও নদিয়া জেলার একাংশও চেয়ে বসলেন নিশিকান্ত প্রস্তাবিত কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের জন্য! যা পাল্টা সুর চড়িয়েছে বঙ্গের শাসকদল তৃণমূল।
সংসদে ঝাড়খণ্ডের গোড্ডার বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দাবি করেছিলেন, বিহার এবং বাংলার মালদহ ও মুর্শিদাবাদ-সহ মোট পাঁচটি জেলা নিয়ে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল করা উচিত। এই দাবিকে সমর্থন করে শুক্রবার বিধানসভার বাইরে গৌরীশঙ্করও মূলত আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিকে সামনে রেখে মালদহ ও মুর্শিদাবাদকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল করার দাবি জানান। এই মর্মে ২০২২ সালের ১৮ অগস্ট কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে চিঠি দিয়েছিলেন বলে জানিয়ে গৌরীর বক্তব্য, সীমান্তে বিস্তীর্ণ এলাকায় কাঁটাতারের বেড়া দেওয়া যাচ্ছে না রাজ্যের অসহযোগিতার জন্য। বিদ্যুৎ নেই। অবাধে পাকিস্তানের চরেরা বাংলাদেশ হয়ে ঢুকে সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। আইএস-এর জঙ্গিরা মুর্শিদাবাদে ধরা পড়েছে। ধর্মীয় স্বাধীনতা ক্ষুণ্ণ হচ্ছে, মানুষ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। দেশকে ভাঙতে চাওয়া শক্তি মুর্শিদাবাদ-মালদহ হয়ে দেশে ছড়িয়ে পড়লেও রাজ্য নির্বিকার বলে অভিযোগ তাঁর।
এ বার সুব্রত বলেন, ‘‘লোকসভা নির্বাচন চলাকালীন মুর্শিদাবাদ জেলার এক তৃণমূল বিধায়ক জাতিগত বিন্যাসের তত্ত্ব খাড়া করে গঙ্গায় ভাসিয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন। এই ধরনের ঘৃণাভাষণের পর থেকে আমরা ভীত। এ কথা অস্বীকার করার কোনও জায়গা নেই, মুর্শিদাবাদ, মালদা, নদিয়ার কিছুটা অংশ এবং দক্ষিণ দিনাজপুরে আমাদের সংখ্যা কোথাও ৩০ শতাংশ বা কোথাও ৪০ শতাংশ। অনুপ্রবেশ ও জাতিগত বিন্যাসের কারণে সেখানে সনাতনীরা আজ চ্যালেঞ্জের মুখে। তাই মুর্শিদাবাদ, মালদহ দক্ষিণ দিনাজপুর ও নদিয়া উত্তরের বেশ কিছুটা অংশ নিয়ে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল গড়ার দাবি জানাচ্ছি।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘যে ভাবে বাংলাদেশ, পাকিস্তান, মায়ানমার থেকে অনুপ্রবেশ ঘটছে, তাতে আমরা আতঙ্কিত। দুর্গাপুজো, রামনবমী, সরস্বতী পুজো এমনকি, মৃতদেহ নিয়ে গেলেও অশান্তিতে পড়তে হচ্ছে সনাতনী ধর্মাবলম্বী মানুষদের। জেলার বিভিন্ন গ্রামে তাঁদের সংখ্যা শূন্য হয়ে যাচ্ছে। প্রশাসনের কর্তারা সব জেনেও চুপ।’’
বিজেপি বিধায়কের এই মন্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে তৃণমূল। জঙ্গিপুরের তৃণমূল সাংসদ খলিলুর রহমান বলেন, ‘‘মুর্শিদাবাদ অখণ্ড বঙ্গের অঙ্গ হিসেবে আগামী কয়েক হাজার বছর থাকবে। যারা বঙ্গভঙ্গের চক্রান্ত করছে, তাদেরকে মানুষ নির্বাচনের মাধ্যমে শিক্ষা দিয়েছেন। ভবিষ্যতে ধুয়ে মুছে দেবেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy