অনুব্রত মণ্ডল। —ফাইল চিত্র।
অনুব্রত মণ্ডল, সুকন্যা মণ্ডলের পরে এ বার অনুব্রতের প্রাক্তন দেহরক্ষী সেহগাল হোসেনও গরু পাচারের তদন্তে ইডি-র মামলায় জামিন পেয়ে গেলেন। এর আগে গরু পাচার মামলার প্রধান অভিযুক্ত এনামুল হক, অনুব্রত, সুকন্যা, অনুব্রতের হিসাবরক্ষক মণীশ কোঠারি জামিন পেয়েছেন। একমাত্র সেহগালই দিল্লির তিহাড় জেলে ছিলেন। দীর্ঘ ২৮ মাস জেলবন্দি থাকার পরে এ বার দিল্লি হাই কোর্ট সেহগালের জামিনও মঞ্জুর করল। সেহগালের স্ত্রী সুমাইয়া আক্তার বলেন, ‘‘জামিন পেলেও এখনও জেল থেকে ছাড়া পায়নি। সত্যের জয় হবে, আমরা জানতাম।’’
রাজ্য পুলিশের কনস্টেবল সেহগালকে অনুব্রতের দেহরক্ষী নিয়োগ করা হয়েছিল। সিবিআই, ইডি-র অভিযোগ, অনুব্রত তাঁর মাধ্যমেই গরু পাচারকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন। গরু পাচারে সাহায্যের বিনিময়ে ঘুষের টাকাও সেহগালের মাধ্যমেই আদায় করতেন অনুব্রত। সিবিআই প্রথমে ২০২২-এর ৯ জুন সেহগালকে গরু পাচার মামলায় গ্রেফতার করে। ওই বছরেরই ৭ অক্টোবর সেহগালকে গ্রেফতার করে ইডি। সেহগাল ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের নামে আইনের সঙ্গে সঙ্গতিহীন বিপুল অর্থ এবং সম্পত্তিরও খোঁজ পেয়েছিল সিবিআই, ইডি।
দিল্লি হাই কোর্টের বিচারপতি নীনা বনসল কৃষ্ণ সেহগালের জামিন মঞ্জুর করে বলেছেন, সেহগাল ও অন্যান্য অভিযুক্তদের নামে চার্জশিট দায়ের হলেও গত দু’বছরে বিচারপ্রক্রিয়া এগোয়নি। বিচার প্রক্রিয়া শুরু হলেও তাতে সময় লাগবে। শুধু ইডি-র মামলাতেই সেহগাল দু’বছর জেলে রয়েছেন। মাঝে শুধু ছয় সপ্তাহের জন্য চিকিৎসার কারণে জামিন পেয়েছিলেন তিনি। সিবিআইয়ের মামলায় তিনি আগেই জামিন পেয়ে গিয়েছেন। তাঁর বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা নেই। তাঁর বিরুদ্ধে তথ্যপ্রমাণ সবই নথিবদ্ধ। ফলে তথ্যপ্রমাণ নষ্ট করা বা সাক্ষীদের প্রভাবিত করার সম্ভাবনাও কম। অনুব্রতের মতো অন্যান্য অভিযুক্তরাও জামিন পেয়ে গিয়েছেন।
সেহগালকে পাঁচ লক্ষ টাকার বন্ড জমা ও জামিনদার রাখতে হবে। আদালতের অনুমতি ছাড়া তিনি দেশ ছাড়তে পারবেন না। তদন্তকারী অফিসারের কাছে ফোন নম্বর দিতে হবে। বিচারপতি নীনা বনসল কৃষ্ণ এর আগে সুকন্যার জামিনও মঞ্জুর করেছিলেন।
অনুব্রত-সুকন্যার মতো সেহগালের জামিন মঞ্জুরের ক্ষেত্রেও দিল্লি হাই কোর্ট মণীশ সিসৌদিয়া ও অরবিন্দ কেজরীওয়ালের জামিন নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায়কে সামনে রেখেছে। এত দিন ইডি-র মামলায় যে কোনও অভিযুক্তের পক্ষেই জামিন পাওয়া কঠিন ছিল। কারণ, ইডি যে আর্থিক নয়ছয় প্রতিরোধ আইনে মামলা করে, তার ৫০ নম্বর ধারায় বলা হয়েছে, কোনও অভিযুক্তকে জামিন পেতে হলে জোড়া শর্ত পূরণ করতে হবে। এক, অভিযুক্তকে আদালতকে বিশ্বাস করাতে হবে যে, প্রাথমিক ভাবে তাঁকে দোষী মনে করার কারণ নেই। দুই, জামিন পেলে অভিযুক্ত অন্য অপরাধ করবেন না বলেও আদালতকে বিশ্বাস করাতে হবে। কিন্তু দিল্লির আবগারি দুর্নীতি মামলায় প্রথমে সিসৌদিয়া, তার পরে কেজরীওয়ালকে জামিন দিয়ে সুপ্রিম কোর্ট বলে, আইনে জামিনের কঠিন শর্ত থাকলেও ‘জামিনই নিয়ম, দোষী সাব্যস্ত না হওয়া পর্যন্ত জেলে আটক থাকা ব্যতিক্রম’—এর নীতিই মেনে চলতে হবে। আইনে অভিযুক্তকে আটক করে রাখার ক্ষেত্রে যে শর্তই থাক, সংবিধানের ২১-তম অনুচ্ছেদে ব্যক্তি স্বাধীনতার অধিকারই সর্বোচ্চ। দোষী সাব্যস্ত না হওয়া পর্যন্ত কাউকে আটক করে রাখা শাস্তির সমান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy