প্রতীকী ছবি।
নামেই লৌহকপাট। রুপোলি পর্দায় যেমন দেখা যায়, বাস্তবেও সেই কারাগারে বসে বহির্জগতে মাদকের ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করে চলেছে মাদক কারবারি। প্রথমে বর্ধমান শহরে এবং পরে মুর্শিদাবাদের নবগ্রামের মথুরাপুর থেকে দুই দম্পতিকে গ্রেফতার করার পরে জেলে নিরাপত্তার এমনই ফস্কা গেরোর কথা জানাচ্ছে রাজ্য পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স বা এসটিএফ। ওই দুই জায়গাতেই হেরোইন তৈরির কারখানা তৈরি হয়েছিল। নিষেধাজ্ঞার তোয়াক্কা না-করে জেলে যে দেদার মোবাইল ফোন এবং অন্যান্য নিষিদ্ধ জিনিসপত্র সরবরাহ করা হয়, বিভিন্ন ঘটনায় তার প্রমাণ মিলেছে। এবং সেই দুষ্কর্মে এক শ্রেণির কারাকর্মীর যোগসাজশের অভিযোগও পুরনো। কিন্তু বঙ্গের জেলে বসে মাদকের ব্যবসা নিয়ন্ত্রণের নতুনতর ঘটনায় আইনরক্ষকদের মাথাব্যথা বেড়েছে।
পুলিশি সূত্রের খবর, মাদক পাচারে অভিযুক্ত চাঁইয়েরা আছে বহরমপুর, মালদহ ও মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন জেলে। শ্রীঘরে বসেই তারা বাইরে থাকা মাদ কারবারি ও শাগরেদদের নির্দেশ দিচ্ছে বলে অভিযোগ। এক পুলিশকর্তা জানান, পিয়ারুল শেখ নামে এক দুষ্কৃতীকে দেড় কেজি হেরোইন-সহ গ্রেফতার করা হয়েছিল। বহরমপুর জেলে বসেই সে এখন বাইরের ব্যবসা দেখভাল করছে।
এসটিএফ সূত্রের খবর, স্বামীর সঙ্গে স্ত্রীও মাদক কারবারে যোগ দিচ্ছে মালদহ, লালগোলা, পলাশির মতো এলাকায়। বাড়িতে কারখানা বানিয়ে সেখানে হেরোইনের মতো মাদক তৈরি করার পরে তা বিক্রি করছে স্ত্রী। গত মঙ্গলবার মুর্শিদাবাদের নবগ্রামের মথুরাপুরের একটি বাড়িতে হানা দিয়ে হেরোইন তৈরির অভিযোগে তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের মধ্যে ছিল আশরাফ আলি ওরফে ফিরোজ ও মর্জিনা খাতুন নামে এক দম্পতি। তৃতীয় অভিযুক্তের নাম আব্দুর রহমান। পুলিশ জানায়, কয়েক বছর ধরে ওই কাজ করছিল তারা। মূলত মণিপুর থেকে হেরোইন তৈরির কাঁচা মাল এনে বাড়ির কারখানায় তা থেকে মাদক বানানো হচ্ছিল। পরে বাংলাদেশ-সহ স্থানীয় বিভিন্ন জায়গায় পাচার হচ্ছিল সেই মাদক।
পুলিশের অভিযোগ, পুরো ব্যবসা দেখভাল করত মর্জিনা। রাজ্য পুলিশের এসটিএফ এবং জেলা পুলিশ যৌথ ভাবে অভিযান চালায়। পরে জেলা পুলিশ ওই ঘটনার তদন্তভার নেয়। ওই তিন জন এখন পুলিশি হেফাজতে। এক পুলিশ অফিসার জানান, মাদক কারখানা চালানোর অভিযোগে ধৃত ফিরোজ ২০১৮ সালেও মাদক পাচারের ঘটনায় গ্রেফতার হয়েছিল। কিছু দিন আগে সে জামিন পায়। অভিযোগ, ছাড়া পেয়েই সে বাড়িতে মাদক কারখানা খুলে বসে। পিয়ারুলের সঙ্গে ফিরোজের যোগ আছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এসটিএফ জানিয়েছে, জেলে বসেই মাদক পাচারের নেটওয়ার্ক অটুট পিয়ারুলদের। যা ফিরোজের মতো মাদক তৈরিতে ওস্তাদদের কাজে লাগছে। পলাশি, লালগোলা, মালদহ এবং উত্তরবঙ্গের কিছু এলাকায় মাদকের যে-কারবার চলছে, দুষ্কৃতীরা বিভিন্ন জেলে বসে তা নিয়ন্ত্রণ করছে বলে পুলিশি সূত্রের খবর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy