শিলদার বাড়িতে অনিকেত মাহাতোর বাবা অপূর্বকুমার মাহাতো ও মা তারারানি মাহাতো। শুক্রবার। —নিজস্ব চিত্র।
আপনাদের ছেলেমেয়ে অনশন করছেন কলকাতার ধর্মতলার ধর্নামঞ্চে। তাঁদের বোঝান! শিলদার অনিকেত মাহাতো, বাঁকুড়া শহরের স্নিগ্ধা হাজরার পরিবারকে পুলিশের তরফে এই ধরনের ‘অনুরোধ’ জানানো হয়েছে বলে সূত্রের খবর। একই ভাবে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে অনশনরত চিকিৎসকের বাড়িতেও এমন ‘চাপ’ দেওয়া হয়েছে বলে পরিবারগুলি থেকে অভিযোগ জানানো হয়েছে।
আমরণ অনশনে বসে গুরুতর অসুস্থ ঝাড়গ্রামের শিলদার ছেলে অনিকেত মাহাতো। হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছে। তাই চিন্তায় অনিকেতের বাবা অবসরপ্রাপ্ত স্বাস্থ্যকর্মী অপূর্বকুমার মাহাতো ও মা তারারানি মাহাতো। শুক্রবার অনিকেতের বাবা জানান, বৃহস্পতিবার রাতে বিনপুর থানার পুলিশ এসে ছেলেকে ফোন করে বোঝাতে অনুরোধ করে। ছেলের সঙ্গে কথা বলতে তাঁদের সঙ্গে কলকাতায় যেতেও প্রস্তাব দেওয়া হয়। মাহাতো দম্পতি পুলিশকে জানান, ছেলের সিদ্ধান্তে হস্তক্ষেপ করবেন না। অপূর্ব বলেন, “ওখানে সিনিয়র চিকিৎসকেরা আছেন। তাঁরা দেখছেন।” তারারানি বলেন, “ছেলের অসুস্থতায় উদ্বেগে আছি। তবে ন্যায়বিচারের দাবিতে ছেলের আন্দোলনে পূর্ণ বিশ্বাস আছে।”
বাঁকুড়ার শুভঙ্কর সরণির বাসিন্দা, কলকাতা মেডিক্যালের জুনিয়র ডাক্তার স্নিগ্ধা হাজরাও ধর্মতলায় অনশনে বসেছেন। তাঁর বাবা প্রাক্তন রেলকর্মী কাজল হাজরার দাবি, “বৃহস্পতিবার রাত ১টা নাগাদ পুলিশ বাঁকুড়ার বাড়িতে কথা বলতে এসেছিল। তাঁদের সকালে আসতে বলি।” সকাল হতেই বাড়ি ছাড়েন হাজরা দম্পতি।
যদিও বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার বৈভব তিওয়ারির দাবি, “মাঝ রাতেই আমাদের কাছে খবর এসেছিল, ওঁদের মেয়ের শারীরিক অবস্থা ভাল নয়। তাই সময় নষ্ট না করে তাঁদের খবর দেওয়া জরুরি ছিল বলে তখনই বাড়িতে যাওয়া হয়। ওঁদের তরফে কেউ পুলিশের সঙ্গে ভাল করে কথা পর্যন্ত বলেননি।” স্নিগ্ধার বাবা-মা কাজল ও চঞ্চলার পাল্টা প্রশ্ন, “তা বলে রাত ১টায় পুলিশ বাড়িতে আসবে! এই ঘটনায় আমরা মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত।” কয়েক মাস আগে কলকাতা মেডিক্যালের জুনিয়র ডাক্তার দেবাশিস হালদারের সঙ্গে বিয়ে হয় স্নিগ্ধার। হাজরা দম্পতি বলেন, “জামাই-সহ অন্যান্য চিকিৎসক বন্ধুরা মেয়ের পাশে আছেন, এটাই আমাদের বড় ভরসা।”
উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালেও দুই জুনিয়র চিকিৎসক অনশনে বসেছেন। তাঁদের মধ্যে মানসিক রোগ বিভাগের পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ট্রেনি (পিজিটি) অলোককুমার বর্মার অভিযোগ, উত্তরপ্রদেশের লখনউয়ের বাড়িতে গিয়ে পুলিশ তাঁর মাকে বলেছে, ‘আপনাদের ছেলের শরীর খারাপ হচ্ছে। কথা বলতে পারছে না।’ অলোককুমারের কথায়, “মা ফোন করছেন। মনে হচ্ছে, পুলিশ চাপ দিয়ে অনশন প্রত্যাহারের চেষ্টা করছে। অথচ অনশন মঞ্চে প্রশাসনের কেউ কথা বলতে আসছেন না।” অন্য অনশনকারী, সৌভিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, তাঁর বাঁকুড়ার বাড়িতে পুলিশ ফোন করে একই কথা বলেছে। যদিও বাঁকুড়ার পুলিশ এমন দাবি মানেনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy