পরিমল দে। —নিজস্ব চিত্র।
আরজি কর-কাণ্ডে অসন্তোষ প্রকাশ করে বঙ্গরত্ন সম্মান ফেরানোর কথা জানালেন আলিপুরদুয়ারের বিশিষ্ট সাহিত্যিক পরিমল দে। রবিবার সাংবাদিক সম্মেলন করে এ কথা ঘোষণা করেছেন এই প্রবীণ শিক্ষক। তিনি বলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গে দীর্ঘ দিন ধরেই নৈরাজ্য চলছে। দুর্নীতি তো হয়েছেই, পাশাপাশি আরজি করে যে অমানবিক ঘটনা ঘটেছে, তাতে উত্তাল হয়ে উঠেছে বাংলা। এই আন্দোলনে যাঁরা শামিল, তাঁদের পাশে দাঁড়াতেই বঙ্গরত্ন সম্মান ফিরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম।’’ প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালে কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামে উত্তরবঙ্গ উৎসবের মঞ্চে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজের হাতে বঙ্গরত্ন সম্মান তুলে দিয়েছিলেন পরিমলের হাতে।
আরজি করে মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ-খুনের ঘটনা সমাজের নানা স্তরের আলোড়ন ফেলেছে। ঘটনার বিচার চেয়ে রাজ্য জুড়ে প্রায় প্রতিদিনই প্রতিবাদ-মিছিল হচ্ছে। পথে নেমেছেন আট থেকে আশি, প্রায় সকলেই। গোটা ঘটনায় প্রশ্নের মুখে পড়েছে রাজ্য প্রশাসনের ভূমিকা। কলকাতা হাই কোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্টেও সমালোচিত হয়েছে সরকার। এই পরিস্থিতিতে সরকারের দেওয়া দুর্গাপুজোর অনুদানও প্রত্যাখ্যান করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বেশ কয়েকটি ক্লাব। এ বার বঙ্গরত্ন ফেরালেন পরিমল। তিনি জানান, শারীরিক অসুস্থতার কারণে আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে তিনি পথে নামতে পারছেন না। তবে সব রকম ভাবে তাঁদের পাশে রয়েছেন বলেই জানান তিনি। পরিমল বলেন, ‘‘যাঁরা আমার মুখ চেয়েছিলেন, আমি তাঁদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি। রাজ্য জুড়ে শিক্ষা ক্ষেত্রে দুর্নীতির পাশাপাশি আরজি করের ঘটনায় আমি সত্যিই আহত!’’
কোনও ঘটনার প্রেক্ষিতে সমাজের বিশিষ্ট জনেদের সম্মান বা পদক ফেরানোর বিষয়টি এ দেশে নতুন কিছু না। জাতীয় স্তরে নানা সময়েই এমনটা দেখা গিয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারের দেওয়া সম্মান ফিরিয়ে দিতে দেখা গিয়েছে বাংলার অনেককেও। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ সরকারের দেওয়া সম্মান ফেরানোর তালিকা ততটাও দীর্ঘ নয় সাম্প্রতিক কালের প্রেক্ষিতে। ২০২২ সালে মুখ্যমন্ত্রী মমতাকে বিশেষ সম্মান দিয়েছিল বাংলা অ্যাকাডেমি। তার প্রতিবাদে অন্নদাশঙ্কর স্মারক সম্মান ফিরিয়ে দিতে দেখা গিয়েছিল রত্না রশিদ বন্দ্যোপাধ্যায়কে। এ বার আরজি কর-কাণ্ডের আবহে সম্মান ফেরানোর সিদ্ধান্ত নিলেন পরিমল।
এতে ‘অশনিসঙ্কেত’ দেখছে শাসকদল তৃণমূল। দলের কেউ কেউ মনে করছেন, বিশিষ্ট জনেরা সম্মান ফেরালে তা সমাজে অন্য রকম আলোড়ন তৈরি করে। এমনিতেই আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে নারী-পুরুষ, ছোট-বড় নির্বিশেষে যে ভাবে সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন, তাতে বেজায় চাপে দল। এর পর সম্মান ফেরানোর প্রবণতা তৈরি হলে সেই চাপ আরও বাড়বে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy