Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Sadhan Pande

Sadhan Pande: একদা বড়তলা থেকে আজকের মানিকতলা, কখনও তিনি হারেননি বিধানসভার ভোটে

১৯৮৫-র উপনির্বাচন, ১৯৮৭, ১৯৯১, ১৯৯৬, ২০০১ ও ২০০৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বড়তলা কেন্দ্র থেকে জেতেন সাধন। ১৯৮৫ থেকে ২০০১ কংগ্রেসের বিধায়ক। ২০০১ থেকে আমৃত্যু তৃণমূল বিধায়ক। আসন পুনর্বিন্যাসের কারণে ২০০৯ সালে লুপ্ত হয়ে যায় বড়তলা কেন্দ্র। নতুন বিধানসভা কেন্দ্র মানিকতলা থেকে জেতেন ২০১১, ২০১৬, ২০২১-এ।

১৯৮৫ থেকে টানা ন’বার জিতে রাজ্য বিধানসভার সদস্য হয়েছেন সাধন। ছবি: আনন্দবাজার আর্কাইভ।

১৯৮৫ থেকে টানা ন’বার জিতে রাজ্য বিধানসভার সদস্য হয়েছেন সাধন। ছবি: আনন্দবাজার আর্কাইভ।

অমিত রায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ১১:৪৪
Share: Save:

সাধন পাণ্ডের রাজনৈতিক জীবন বরাবরই উত্তর কলকাতা কেন্দ্রিক। সত্তরের দশকের শেষের দিক থেকে মানিকতলা-বড়তলা এলাকায় রাজনৈতিক জীবন শুরু করেন তিনি। এলাকার তৎকালীন সবচেয়ে প্রভাবশালী কংগ্রেস নেতা অজিত পাঁজার অনুগামী বলে পরিচিত ছিলেন সাধন। অজিতের হাত ধরেই এআইসিসি-তে নিজের যোগাযোগ বাড়ানোর কাজ শুরু করেছিলেন। অল্প সময়েই সর্বভারতীয় কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক রাজেন্দ্রকুমারী বাজপেয়ীর ঘনিষ্ঠ হন। কলকাতার কয়েকজন প্রথম সারির নেতার পাশাপাশি তিনিও ঘনঘন দিল্লি যাতায়াত করতেন।

১৯৮৪ সালের ডিসেম্বরে লোকসভা নির্বাচনে কলকাতা উত্তর-পূর্ব আসন থেকে জিতে প্রথমবারের জন্য সাংসদ হন অজিত। তার পরেই বড়তলার বিধায়ক পদ থেকে পদত্যাগ করেন। ১৯৮৫ সালের মার্চে বড়তলা বিধানসভার উপনির্বাচন হয়। সেই নির্বাচনেই সাংসদ অজিত ও রাজেন্দ্রকুমারীর সমর্থনে প্রার্থী হয়ে জয়লাভ করেন সাধন।

সেই থেকে টানা ন’বার রাজ্য বিধানসভার সদস্য হয়েছেন তিনি। পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় কেবলমাত্র সুব্রত মুখোপাধ্যায়ই তাঁর থেকে বেশি বার বিধায়ক হয়েছেন। ১৯৮৫-র উপনির্বাচন, ১৯৮৭, ১৯৯১, ১৯৯৬, ২০০১ ও ২০০৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বড়তলা কেন্দ্র থেকে জেতেন তিনি। এর মধ্যে ১৯৮৫ থেকে ২০০১ পর্যন্ত ছিলেন কংগ্রেসের বিধায়ক। ২০০১ থেকে আমৃত্যু তৃণমূলের বিধায়ক।

তৃণমূলের গোড়ার পর্বে দলের ওয়ার্কিং কমিটির সদস্যদের সঙ্গে মমতা। একেবারে ডানদিকে সাধন। ছবি: আনন্দবাজার আর্কাইভ।

তৃণমূলের গোড়ার পর্বে দলের ওয়ার্কিং কমিটির সদস্যদের সঙ্গে মমতা। একেবারে ডানদিকে সাধন। ছবি: আনন্দবাজার আর্কাইভ।

১৯৯৮ সালে কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূল গঠন করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই বছরেরই ফেব্রুয়ারিতে লোকসভা নির্বাচনে কলকাতা উত্তর-পূর্ব আসন থেকে তৃণমূল প্রার্থী হন অজিত পাঁজা। সেই নির্বাচনে তাঁর বিরুদ্ধে কংগ্রেসের প্রার্থী হন সাধন। কিন্তু লোকসভায় তাঁর শোচনীয় পরাজয় হয়। দু’জনে একসঙ্গে কংগ্রেসে থাকাকালীনই একদা রাজনৈতিক গুরু অজিত পাঁজার সঙ্গে সাধনের মনোমালিন্য চরমে পৌঁছেছিল।

কংগ্রেসের রাজনীতিতে কোনও বড় নেতার অনুগামী না হলেও, এক স্বতন্ত্র ব্যক্তিত্ব হয়ে উঠেছিলেন সাধন। ২০০১ সালের বিধানসভা ভোটের আগে কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন। ২০০১ এবং ২০০৬ সালে তৃণমূল প্রতীকেই বড়তলার বিধায়ক হন। তবে ২০০৬ সালে ভোটে জয়ের পরেই মমতার সঙ্গে সঙ্ঘাত বাঁধে বড়তলার বিধায়কের। প্রকাশ্যে দলবিরোধী মন্তব্য করতে শুরু করেন তিনি। কিন্তু সিঙ্গুর-নন্দীগ্রাম আন্দোলনের সময় যাবতীয় বিবাদ ভুলে দলের আন্দোলনে যোগ দেন।

ইন্দিরা গাঁধী জন্মশতবর্ষে বক্তৃতা দিচ্ছেন সাধন। ছবি: আনন্দবাজার আর্কাইভ।

ইন্দিরা গাঁধী জন্মশতবর্ষে বক্তৃতা দিচ্ছেন সাধন। ছবি: আনন্দবাজার আর্কাইভ।

আসন পুনর্বিন্যাসের কারণে ২০০৯ সালে লুপ্ত হয়ে যায় সাধনের বড়তলা কেন্দ্র। নতুন বিধানসভা মানিকতলা। ২০১১ সালে মানিকতলায় তাঁকে প্রার্থী করেন মমতা। জিতে মমতার প্রথম মন্ত্রিসভায় ক্রেতা সুরক্ষা দফতরের মন্ত্রী হন তিনি। ২০১৬ এবং ২০২১ সালের ভোটে জিতেও ওই দফতরের মন্ত্রী হন তিনিই। এর সঙ্গে স্বনির্ভর গোষ্ঠী এবং স্বনিযুক্তি দফতরের মন্ত্রীও ছিলেন সাধন। বিধানসভা ভোটে কখনও পরাজিত না হওয়ার নজির নিয়ে চলে গেলেন তিনি।

অন্য বিষয়গুলি:

Sadhan Pande Bengal politics Mamata Banerjee TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy