Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪
WB Panchayat Election 2023

অতীত ভুলে ভোটে গান্ধীবাদী ‘বাহুবলী’

পঞ্চায়েত ভোটের প্রচারে নিজেকে ‘বাহুবলী’ বলে ফ্লেক্সে লিখে গোপীবল্লভপুরে প্রচার চালাচ্ছেন বিজেপির এক প্রভাবশালী নেতা মানিক কুমার শ্যামল। যা নিয়ে ইতিমধ্যেই কটাক্ষ শুরু করেছে তৃণমূল।

Manik Kumar Shyamal

‘বাহুবলী’ প্রচার। —নিজস্ব চিত্র।

রঞ্জন পাল
গোপীবল্লভপুর শেষ আপডেট: ২৬ জুন ২০২৩ ০৭:৩০
Share: Save:

ভোট প্রচারে কখনও তিনি রুপোলি পর্দার অমরেন্দ্র বাহুবলী। কখনও সাগরপাড়ের জনদরদি রবিন হুড। আবার সেই তিনিই কখনও অহিংসার প্রতীক মোহনদাস কর্মচন্দ্র গান্ধী। পার্থক্য একটাই। গান্ধীজি হন, অমরেন্দ্র বাহুবলী কিংবা রবিন হুড— এঁদের কারও ‘তথাকথিত’ পদ তথা সিংহাসনে বসার আকাঙ্খা ছিল না। এ ক্ষেত্রে চিত্রটি ‘কিঞ্চিৎ’ বিপরীত!

পঞ্চায়েত ভোটের প্রচারে নিজেকে ‘বাহুবলী’ বলে ফ্লেক্সে লিখে গোপীবল্লভপুরে প্রচার চালাচ্ছেন বিজেপির এক প্রভাবশালী নেতা মানিক কুমার শ্যামল। যা নিয়ে ইতিমধ্যেই কটাক্ষ শুরু করেছে তৃণমূল। শাসকদলের প্রশ্ন, যিনি নিজেকে ‘বাহুবলী’ বলে দাবি করছেন, তিনি একাধিক বার জেলও খেটেছেন। সেই মানুষটা কী ভাবে জনগণের সেবা করবেন? ছবিতে সত্য তথা ন্যায়ের পথে চলতে সিংহাসনে বসার সুযোগ ছেড়েছিলেন অমরেন্দ্র বাহুবলী। তবে এ ক্ষেত্রে ভোটে দাঁড়িয়ে শামিল মানিক বলছেন, ‘‘গরিবদের জন্য কেউ নেই। আমি গরিবদের জন্য তো বটেই, সকলের আপদে-বিপদে পাশে রয়েছি। সে জন্যই নিজেকে বাহুবলী বলে প্রচার করছি।’’

গোপীবল্লভপুর ১ ব্লকের ১৫ নম্বর আসনে পঞ্চায়েত সমিতির আসনে বিজেপির হয়ে দাঁড়িয়েছেন মানিক। তিনি বিজেপির গোপীবল্লভপুর মোর্চার পর্যবেক্ষক। তাঁর বিরুদ্ধে তৃণমূলের প্রার্থী হয়েছেন সত্যরঞ্জন বারিক। ওই আসনে আরও দু’জন নির্দল প্রার্থীও রয়েছেন। তাঁরা হলেন শেখ ওসমান আলি ও তপন দেহুরি। সত্যরঞ্জন জেলা তৃণমূলের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ২০১৩ ও ২০১৮ সালে পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য ছিলেন সত্যরঞ্জন। তৃণমূলের দাবি, ভারতী ঘোষ পুলিশ সুপার থাকাকালীন তাঁর সঙ্গেও ঘনিষ্ঠতা ছিল মানিকের। সেই সময় তোলাবাজির অভিযোগও ওঠে তাঁর বিরুদ্ধে। জেলও খেটেছেন। এই প্রসঙ্গে মানিকের যুক্তি তিনি জনদরদি। তাঁর কথায়, ‘‘মানুষের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করি। কেউ মেয়ের বিয়ে দিতে না পারলে, তাঁদেরও নানা ভাবে সাহায্য করেছি। কেউ মারা গেলেও সাহায্য করেছি। গত ১০ বছর ধরে সমাজসেবা করছি। চোরচিতায় কাঠের সাঁকো করেছি। আশুই হাট তৈরি করেছি।’’ যদিও মানিকের সাফাই মানছেন না তাঁর মূল প্রতিদ্বন্দ্বী সত্যরঞ্জন। তিনি বলছেন, ‘‘মানুষ সব জানেন। তাঁরাই ভাল-মন্দ বিচার করবেন।’’

সারিয়া অঞ্চলের আমঝুড়ি গ্রামে বাড়ি মানিকের। তিনি ‘বাহুবলী’ ফ্লেক্স ছাপিয়ে নিজের প্রচার চালাচ্ছেন এলাকায়। প্রসঙ্গত, এনএনডিপিএস ধারায় (নার্কোটিক ড্রাগস অ্যান্ড সাইকোট্রপিক সাবস্ট্যান্সেস অ্যাক্ট) ২০১৮ সাল থেকে দু’বছর জেল খেটেছেন মানিক। তাঁর কথায়, ‘‘বিগত তিন বছরে আমি সুস্থ ভাবে রয়েছি। মানুষের জন্য কাজ করতে চাইছি। গান্ধীজির পথে হেঁটে এখন জনগণ এক চড় মারলে আর এক গাল পেতে দেব। জনগণও আমাকে চাইছেন।’’ মুখে অহিংসার কথা বললেও, ভোটের ময়দানে বিরোধীদের বিঁধতে ছাড়ছেন না মানিক। তাঁর দাবি, ‘‘তৃণমূলের প্রার্থী সত্যরঞ্জনের পাশে কেউ নেই। উনি চাকরি বিক্রি করেছেন। চাকরি করে দেওয়ার নামে কাটমানি খেয়েছেন।’’ সত্যরঞ্জনের পাল্টা, ‘‘মানিকের অভিযোগ ভিত্তিহীন।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE