‘গাইব শুধু গান’। এই অঙ্গীকার নিয়েই আগামী ৩ তারিখ কলকাতার বুকে একই জায়গায় একই মঞ্চে আসতে চলেছেন এই মূহূর্তে বাংলার জনপ্রিয় ১১ জন মৌলিক সঙ্গীতশিল্পী। ইতিমধ্যেই শহরের বাতাসে হাল্কা ঠান্ডার পরশ। শুরু হয়েছে শীতের আমেজ। তারই মধ্যে হেমন্তের শেষ বিকেলে যাদবপুরে একই ছাদের নীচে কেবল গানের অঙ্গীকার নিয়ে জড়ো হতে চলেছেন স্বাধীন এই শিল্পীরা।
চিরকালই সিনেমার গানের আধিক্য এবং প্রচার সব জায়গায় বেশি। স্বভাবতই তাই সিনেমায় গান গাওয়া গায়ক-গায়িকাদের চাহিদাও অনেক বেশি। তবে তাঁদের বাইরেও এমন কিছু গায়ক বা গায়িকা থাকেন, যাঁরা নিজেরাই রচনা করেন নিজেদের গান। সুরও দেন নিজেরাই। এই মঞ্চ তাঁদের জন্য। এই রবিবার তাঁদের নামেই।
অনুষ্ঠানে গাইবেন অভিষেক চক্রবর্তী, আকাশ চক্রবর্তী, অনীক বিশ্বাস, অর্ক চট্টোপাধ্যায়, অস্মিতা পাত্র, দেবর্ষি গঙ্গোপাধ্যায়, ঈশান গঙ্গোপাধ্যায়, কবীর চট্টোপাধ্যায়, সৌম্যদীপ রায়, সূর্য রায়, এবং তমালকান্তি হালদার।
আগামী ৩ ডিসেম্বর ২০২৩ দুপুর সাড়ে তিনটেয় শুরু হবে এই অনুষ্ঠান। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ত্রিগুণা সেন অডিটোরিয়ামে, প্রায় ৩০০ শ্রোতার সামনে। আগ্রহীরা অনলাইনে সংগ্রহ করতে পারেন অনুষ্ঠানের টিকিট।
উদ্যোক্তাদের কথায়, মৌলিক গায়ক-গায়িকাদের জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরির উদ্দেশ্যেই এই অনুষ্ঠানের আয়োজন। প্রথমে সমাজমাধ্যমে ‘হাওয়া বদল’ নামে একটি চ্যানেলের হাত ধরে এই প্রচেষ্টার শুরু। তার এক বছর পরে এই প্রচেষ্টাকে আরও বেশি মানুষের কাছে নিয়ে যাওয়ার ভাবনা থেকেই জন্ম ‘গাইব শুধু গান’-এর। যাঁরা নতুন গান লিখছেন বা গান লেখার কথা ভাবছেন, তাঁদের সাহস জোগাবে এই প্ল্যাটফর্ম।
শিল্পী অর্ক চট্টোপাধ্যায় বলেন, “আমরা অনেকেই হয়তো ছোটবেলা থেকেই গান লিখছি। কিন্তু সেই গান মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য প্রয়োজন ছিল একটি মঞ্চের। এ বার সেই মঞ্চ আমরা নিজেরাই নিজেদের দিচ্ছি ‘গাইব শুধু গান’-এর মাধ্যমে। তা ছাড়া ১১ জন শিল্পীর প্রত্যেকের নিজস্ব একটি সত্ত্বা রয়েছে। তাঁরা নানা ধরনের গান লেখেন। তাই এই ১১ জন শিল্পীর ৩৩টি গানে সমাজের অনেক আয়না মানুষ দেখতে পাবেন।”
শিল্পী অভিষেক চক্রবর্তীর কথায়, “আমরা প্রত্যেকেই আলাদা আলাদা ভাবে অনেক দিন ধরে গান-বাজনা করছি। আমি ২০ বছর ধরে গান করছি, আবার কেউ হয়তো পাঁচ বছর গান করছেন। সবাইকে এক ছাদের তলায় আনতে আমরা প্রথমে ‘হাওয়া বদল’-এর মতো একটা কাজ করি। এ বার এই স্বাধীন গায়কদের জন্য একটি মঞ্চ তৈরি করতেই আমরা নিজেরা আয়োজন করেছি ‘গাইব শুধু গান’।”
শিল্পী আকাশ চক্রবর্তী বলেন, “বাংলায় নিজেই গান লিখে, সুর করে গান গাওয়ার ধারা চিরকালের। সেই চর্যাপদ থেকে সাধক রামপ্রসাদ হয়ে রূপম ইসলাম, অনুপম রায় সবাই তা-ই করেছেন। আজও আমাদের চার পাশে বহু শিল্পী রয়েছেন, যাঁরা নিজে গান লেখেন, সুর করেন এবং তার মাধ্যমে নিজের মনের কথা বলেন। কিন্তু মূল ধারার সঙ্গীত জগতে তাঁরা যোগ্য প্ল্যাটফর্ম পান না। এই ভাবনা থেকেই আমরা কয়েক জন মিলে আলোচনা করে প্রথমে ‘হাওয়া বদল’ দিয়ে শুরু করি। তার পরেই একটা লাইভ শো করার ভাবনা থেকে ‘গাইব শুধু গান’-এর উদ্যোগ।”
শিল্পী তমালকান্তি হালদার এ বিষয়ে বলেন, “প্রায় ২০০৬-০৭ সাল থেকেই আমার আর অভিষেকের বাংলা মৌলিক গায়কদের নিয়ে এ রকম একটা অনুষ্ঠান করার ইচ্ছা ছিল। যে কোনও কারণেই হোক, সেটা হয়ে ওঠেনি। গত বছর অভিষেক ‘হাওয়া বদল’ করে এক ছাদের তলায় অনেক জন শিল্পীকে নিয়ে আসে। সেখান থেকেই সবার জন্য একটা মঞ্চ তৈরির ভাবনায় এই ‘গাইব শুধু গান’। এর আগে বাংলায় এমন কোনও মৌলিক গানের অনুষ্ঠান হয়েছে কি না জানা নেই। এই অনুষ্ঠানে এলে শ্রোতারা বুঝতে পারবেন, এখনও নতুন বাংলা গান তৈরি হচ্ছে। কেবল যে কোনও কারণেই হোক না কেন, সেটা তাঁদের কাছে পৌঁছয়নি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy