সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র। —ফাইল চিত্র।
সময় ঘণ্টা দেড়েক। বুধবার মধ্যরাতে তার মধ্যেই ১৫ থেকে ২০ রকম ভঙ্গিতে কণ্ঠস্বরের নমুনা নেওয়া হয়েছে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র ওরফে ‘কালীঘাটের কাকু’র।
সূত্রের দাবি, এসএসকেএম হাসপাতাল থেকে ঘণ্টা খানেকের মধ্যে নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ‘কাকু’কে জোকার ইএসআই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া যেমন নাটকীয় ছিল, তার থেকে কোনও অংশে কম ছিল না তাঁর কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহ। ইডি সূত্রে দাবি, ওই ১৫-২০ রকম স্বরক্ষেপণের ভঙ্গি সংগ্রহ করতে দিল্লি থেকে সেন্ট্রাল ফরেন্সিক ল্যাবরেটরির এক বিশেষজ্ঞ এসেছিলেন কলকাতায়। নমুনা সঙ্গে নিয়ে বৃহস্পতিবার দিল্লি ফিরেছেন তিনি। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাটির আশা, সপ্তাহ খানেকের মধ্যেই কণ্ঠস্বরের নমুনার রিপোর্ট হাতে পাওয়া যাবে। তার পরে তা পেশ করা হবে আদালতে।
দুর্নীতির তদন্তের স্বার্থে ‘কাকু’র কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহ যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, তা বারবার বলেছে ইডি। সূত্রের খবর, ‘কাকু’র একাধিক ভয়েস কল রেকর্ডিং মোবাইল থেকে উদ্ধার করেছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাটি। ওই কথোপকথন একাধিক ভাগে ভাগ করে তার সঙ্গে মিলিয়েই গলার স্বরের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এক তদন্তকারী অফিসারের কথায়, ‘‘সুজয় ঠিক যেমন ভাবে ফোনে কখনও উচ্চস্বরে, কখনও নিম্নস্বরে কথা বলেছিলেন, ঠিক তেমন ভাবেই বুধবার রাতে তাঁকে কথা বলতে বলে, তাঁর গলার স্বরের নমুনা নেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে একই কথা একাধিক বার বলানো হয়েছে।’’
‘কাকু’র কণ্ঠস্বর কোনও ভাবে বিকৃত করার চেষ্টা হতে পারে কি না, সেই প্রশ্নও তুলেছিল বিরোধী শিবির। তদন্তকারীদের সূত্রে দাবি, ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞদের মতে, কোনও ভাবে স্বর বিকৃত করার চেষ্টা হলেও, নমুনা যদি একাধিক ভাগে ভাগ করে নেওয়া যায়, তা হলে অসুবিধা হওয়ার কথা নয়।
নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে নেমে ‘কাকু’, দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলা পরিষদের প্রাক্তন সদস্য জ্ঞানানন্দ সামন্ত ও সিভিক ভলান্টিয়ার রাহুল বেরার কাছ থেকে পাঁচটি মোবাইল বাজেয়াপ্ত করেছিল ইডি। সেখান থেকে হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট, সাধারণ মেসেজ এবং ভয়েস কল রেকর্ডিং উদ্ধার হয়েছিল। তদন্তকারীদের সূত্রে দাবি, এ ছাড়াও ‘কাকু’র সঙ্গে অত্যন্ত ‘প্রভাবশালী’ কয়েকজনের কথাবার্তার ভয়েস কল রেকর্ডিংও পাওয়া গিয়েছিল। যা আদালতে গুরুত্বপূর্ণ তথ্যপ্রমাণ হিসেবে গণ্য হতে পারে।
তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে দাবি, ইতিমধ্যেই রাহুলের গলার স্বরের নমুনা নিয়ে তা ফরেন্সিক পরীক্ষা করে আদালতে জমা দেওয়া হয়েছে। কাকুর গলার স্বরের ফরেন্সিক রিপোর্ট হাতে আসার পরে জ্ঞানানন্দের কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহ করে তার ফরেন্সিক পরীক্ষা করা হবে। এর পরে দু’জনের গলার স্বর মিলিয়ে দেখা হতে পারে। এ দিন রাহুলের ফোন বন্ধ ছিল। তাঁকে পাঠানো বার্তার জবাব মেলেনি। এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি জ্ঞানানন্দ। তদন্তকারীদের সূত্রে দাবি, যে সব ‘প্রভাবশালীর’ সঙ্গে ‘কাকু’র কথোপকথন পাওয়া গিয়েছে, ডাকা হবে তাঁদেরও।
বুধবার এসএসকেএম থেকে ‘কাকু’কে ইএসআই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরে এক ঘণ্টা ধরে তাঁর যাবতীয় শারীরিক পরীক্ষা করে মেডিক্যাল বোর্ড। বোর্ডের সম্মতি পেয়ে তবেই তদন্তকারী অফিসার ও চিকিৎসকদের উপস্থিতিতে কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে বলেইসূত্রের খবর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy