ফাইল ছবি
দু’বছর আগে, ২০ মে রাজ্যে আছড়ে পড়েছিল আমপান। তছনছ হয়ে গিয়েছিল দুই ২৪ পরগনার বিস্তীর্ণ এলাকা। ভেঙে পড়েছিল হাজার হাজার বাড়ি, গাছ, বিদ্যুতের খুঁটি। বাঁধ ভেঙে জলমগ্ন হয় গ্রামের পর গ্রাম। নোনা জলে নষ্ট হয়েছিল চাষ। গাছ-বাড়ি চাপা পড়ে মৃত্যু হয় বেশ কয়েক জনের। সেই বিপর্যয় কাটিয়ে দু’বছরে একটু একটু করে ঘুরে দাঁড়িয়েছেন উপকূল এলাকার মানুষ। তবে এখনও অনেক জায়গাতেই রয়ে গিয়েছে ক্ষত।
সরকারি হিসেবে শুধু দক্ষিণ ২৪ পরগনাতেই প্রায় ১৪ হাজার হেক্টর জমির চাষ নষ্ট হয়েছিল আমপানে। উত্তর ২৪ পরগনায় প্রায় ১০ হাজার বিঘা জমির ফসল নষ্ট হয়। নোনা জল অনেক দিন জমে থাকায় বেশ কিছু জমিতে এখনও চাষ হচ্ছে না। সাগরের বোটখালি এলাকায় বড় প্রভাব পড়েছিল ঝড়ের। ঘর-বাড়ি, মাছের পুকুর, পানের বরজ সবই ভেসে গিয়েছিল। দীর্ঘদিন এলাকায় চাষ হয়নি। স্থানীয় মানুষ জানান, আমপান ও পরে ইয়াসের জেরে নোনা জল ঢুকে এলাকার বহু জমি এখনও চাষযোগ্য হয়ে ওঠেনি।
দুই জেলার উপকূলবর্তী বিভিন্ন এলাকায় ছবিটা একই। কৃষির পাশপাশি বড় ক্ষতি হয়েছিল মাছ চাষে। শ’য়ে শ’য়ে পুকুর-ভেড়িতে নোনা জল ঢুকে মাছ চাষ নষ্ট হয়। বিপুল ক্ষতি মাথায় নিয়ে অনেকে মাছ চাষ ছেড়ে বিকল্প পেশা বেছে নিয়েছেন। দুই জেলা মিলিয়ে সরকারি হিসেবে প্রায় ১০০ কিলোমিটার নদীবাঁধ ভেঙে গিয়েছিল। অনেক জায়গায় এখনও ঠিকমতো বাঁধ মেরামত হয়নি বলে অভিযোগ।
নামখানার মৌসুনি দ্বীপে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার নদীবাঁধ তছনছ হয়ে গিয়েছিল। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, অনেকটা অংশ এখনও ভাল মতো মেরামত হয়নি। সাগরের ধবলাট শিবপুরের বাসিন্দা রঞ্জিত মণ্ডল বলেন, “এখনও ঠিকঠাক ধান চাষ হয় না। নদীবাঁধগুলিও বেহাল। পূর্ণিমা-অমাবস্যার কটালেও এলাকায় জল ঢোকে। প্রশাসন ব্যবস্থা নেয়নি।”
আমপানে দুই জেলা মিলিয়ে বাড়ি ভেঙেছিল প্রায় দেড় লক্ষ। এখনও অনেক বাড়িতে রয়ে গিয়েছে আমপানের ক্ষত। ঘর হারিয়ে এখনও কারও কারও দিন কাটছে অস্থায়ী ছাউনিতে। বাগদার পালপাড়ার বাসিন্দা বিধান দাস জানান, আমপানে ঘর ভেঙেছিল। সেই ঘরই কোনও রকমে জোড়াতালি দিয়ে বাস করছেন।
ত্রাণ ও ক্ষতিপূরণ বিলি নিয়ে দুর্নীতি, স্বজনপোষণের অভিযোগে উত্তাল হয় রাজ্য রাজনীতি। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অভিযোগ আঙুল ওঠে শাসকদলের দিকে। অভিযোগ, সেই দুর্নীতির কোনও সুরাহা হয়নি। ক্ষতিপূরণের টাকা পাননি অনেকেই।
জয়নগর সাংগঠনিক জেলার বিজেপি নেতা বিকাশ সর্দার বলেন, “জেলা জুড়ে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তেরা ক্ষতিপূরণ পাননি। বেছে বেছে তৃণমূল নেতা-কর্মীরা ক্ষতিপূরণ নিয়েছিলেন।” গোসাবার তৃণমূল নেতা তথা পঞ্চায়েত সমিতির সহকারী সভাপতি কৈলাশ বিশ্বাস অবশ্য বলেন, “আমপানে যাঁরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলেন, তাঁদেরই ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে।”
উত্তর ২৪ পরগনার জেলাশাসক সুমিত গুপ্তা বলেন, ‘‘আমপানে ক্ষতিগ্রস্তদের উপযুক্ত সাহায্য করা হয়েছিল। বাড়িঘর মেরামত করা হয়েছিল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy