অমিত শাহ।—ছবি পিটিআই।
বক্সিরহাটের বাসিন্দা আরতি গোপ। বিয়ে হয়েছে অসমে। কিন্তু কয়েক দশক কেটে যাওয়ার পরেও নাম নেই নাগরিকপঞ্জিতে। এর মধ্যে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ঝাড়খণ্ডে জানিয়ে দিয়েছেন, ২০২৪-এর আগে গোটা দেশে এনআরসি হবে। তারপরেই যেন নতুন করে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে অসমে নাগরিকপঞ্জি থেকে বাদ পড়া বাসিন্দাদের মধ্যে। একটা অস্বস্তির মধ্যে দিন কাটছে ওদের। আরতির মেয়ে লুনা গোপ বলেন, “খুবই ভয়ের মধ্যে আছি। উপযুক্ত কাগজপত্র থাকার পরেও আমার মায়ের নাম ওঠেনি। স্বরাষ্টমন্ত্রীর ওই বক্তব্যে আমরা অবাক! পাশে দাঁড়ানোর মতো কাউকে পাচ্ছি না।”
কোচবিহারের এমন কয়েক হাজার এমন বাসিন্দা রয়েছেন যাদের মেয়ের বিয়ে হয়েছে অসমে। শুধু লুনাই নন, ওই বক্তব্যে ভয়ের কথা জানিয়েছেন মোয়ামারির বাসিন্দা আজিজ মিয়াঁ। তাঁর মেয়ে আর্জিনা খাতুনের বিয়ে হয়েছে অসমের গড়েরহাটে। তাঁর মেয়ের নামও নেই অসমের নাগরিকপঞ্জিতে। তিনি জানিয়েছেন, ১৯৪৬ সালে রাজ আমলের জমির দলিল এবং ১৯৬৬ সালে তাঁর ভোটার তালিকায় থাকা তাঁর বাবার নামের নথি জোগাড় করে তা জমা দেওয়া হয়। তারপরেও নাম ওঠেনি। তিনি বলেন, “আমরা আতঙ্কিত। আর কি জমা দেব? এই নথিতে না হলে কি আমাদের ডিটেনশন ক্যাম্পে যেতে হবে? সারা দেশে হলেও তো আমাকে ওই নথি দেখাতে হবে। কী করব বুঝে উঠতে পারছি না।’’ আতঙ্কে রয়েছেন সাবেক ছিটমহলের মশালডাঙার বাসিন্দা সাদ্দাম হোসেন। তাঁর বোনের বিয়ে হয়েছে অসমে। আতঙ্কিত গলায় বলেন, ‘‘ভয় দেখানোর একটা চেষ্টা চলছে।’’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ওই বক্তব্যের পরে নতুন করে ময়দানে নামতে শুরু করেছে তৃণমূল। রাজ্যের শাসক দল প্রচার করছে, বিজেপি সরকার দেশের মানুষকে ডিটেনশন ক্যাম্পের দিকে ঠেলে দিতে চাইছে। তৃণমূলের জয়হিন্দ বাহিনীর কোচবিহার জেলা সভাপতি প্রবাল গোস্বামী এনআরসি বিরোধী আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত। তিনি বলেন, “এখন আমাদের একটাই বক্তব্য— নো এনআরসি, নো বিজেপি। বিজেপি গোটা দেশকে অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিয়েছে। মানুষের সামনে ভয়াবহ বিপদ। বিজেপির বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলতে হবে।”
তবে দলের কোচবিহার জেলার সাধারণ সম্পাদক সঞ্জয় চক্রবর্তী বলেন, “এনআরসি নিয়ে এই মুহূর্তে আমরা কিছু বলব না। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী স্পষ্ট জানিয়েছেন, এনআরসি’র আগে নাগরিকত্ব বিল আনা হবে। তা আনা হলে তৃণমূলের আর কিছুই বলার থাকবে না। মানুষ জবাব দেবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy