বিশ্বাস বাড়িতে অমিত শাহকে আপ্যায়নের তোড়জোড়।
বিধানসভা নির্বাচনের আগে এ রাজ্যের উদ্বাস্তুদের বার্তা দিতে ফের ‘ভোজন রাজনীতি’ই হাতিয়ার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের। বৃহস্পতিবার নামখানায় জনসভা রয়েছে শাহের। ইন্দিরা ময়দানের ওই জনসভা থেকে রথযাত্রার সূচনাও হবে তাঁর হাতেই। তবে দলীয় কর্মসূচির ফাঁকে তিনি মধ্যাহ্নভোজ সারবেন নারায়ণপুরের তফসিলি জাতিভুক্ত উদ্বাস্তু পরিবারে।
বৃহস্পতিবার নামখানার নারায়ণপুরের বাসিন্দা পেশায় মাছ বিক্রেতা সুব্রত বিশ্বাসের অতিথি হতে চলেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। এক সময় বাংলাদেশ থেকে ভারতে চলে এসেছিলেন সুব্রতর বাবা। নামখানায় এক টুকরো জমির উপর তৈরি করেছিলেন মাথাগোঁজার ঠাঁই। বাবা এবং মা দু’জনের মৃত্যুর পর স্ত্রী ও মেয়েকে নিয়ে নারায়ণপুরের বসতভিটাতেই রয়েছেন সুব্রত। কিন্তু দারিদ্র পিছু ছাড়েনি তাঁদের। পরিবারে সুদিন ফেরানোর আশায় স্ত্রী অর্চনাও পরিচারিকার কাজ করতে শুরু করেন। বাছাই করা এমন একটি পরিবারেই বৃহস্পতিবার দুপুরের খাবার খাবেন শাহ।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সফরের আগে তাঁর নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে ইতিমধ্যেই দফায় দফায় প্রতিনিধি দল পর্যবেক্ষণ করেছেন গোটা এলাকা। তার পর তোড়জোড় শুরু হয়েছে বিশ্বাস পরিবারে। বাড়ির দেওয়ালে পড়েছে রঙের পোঁচ। পরিষ্কার করা হচ্ছে বাড়ির সামনের রাস্তা। গৃহকর্তা সুব্রত বললেন, ‘‘দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আমার বাড়িতে আসছেন। আমরা ভীষণ খুশি। তাঁর জন্য বিশেষ কোনও খাবারের ব্যবস্থা না করতে পারলেও সামর্থ্য অনুযায়ী কয়েকটি নিরামিষ পদের আয়োজন করছি। এর মধ্যে যদি সম্ভব হয়, নিজেদের সমস্যার কথা তাঁকে জানাব।’’
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) নিয়ে দেশ জোড়া বিতর্ক আপাতত ঘুমন্ত। সিএএ নিয়ে শাহি-আশ্বাসের অপেক্ষায় ছিলেন মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষ। কিন্তু সম্প্রতি তাঁদের ভক্তিকেন্দ্র ঠাকুরনগরে গিয়ে নাগরিকত্ব দেওয়া নিয়ে নতুন কোনও বার্তা দিতে পারেননি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। এই আবহে উদ্বাস্তু পরিবারেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন কি ভিন্ন কোনও ইঙ্গিত দিচ্ছে? বিজেপির কলকাতা জোনের আহ্বায়ক দেবজিৎ সরকার অবশ্য এ প্রসঙ্গে জোর গলায় বলছেন, ‘‘আমরা সংকীর্ণতার রাজনীতি করি না। তাই রাজনৈতিক পরিচয় না জেনেই নামখানার বিশ্বাস পরিবারে মধ্যাহ্নভোজন সারতে চলেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। সর্বস্তরের মানুষকে সঙ্গে নিয়েই বিজেপি গণতন্ত্র রক্ষার লড়াই জারি রাখবে।’’
গত বছর নভেম্বর মাসে বোলপুর সফরে এক বাউল শিল্পীর বাড়িতে মধ্যাহ্নভোজ সারেন অমিত। ওই বছরই ডিসেম্বরে নয়া কৃষি আইন নিয়ে দিল্লি যখন উত্তপ্ত ঠিক সে সময় মেদিনীপুরে এক কৃষকের বাড়িতেও দুপুরের খাবার খান তিনি। কোচবিহার সফরে আসার আগে গত ১০ ফেব্রুয়ারি অসমে বসবাসকারী কোচবিহারের রাজবংশি সম্প্রদায়ের মহারাজা হিসাবে পরিচিত অনন্ত রায়ের বাড়িতেও অতিথির ভূমিকায় দেখা যায় অমিতকে। অনন্তর বাড়িতে গিয়ে পিঠে এবং নাড়ু খান শাহ।
এ বার অবশ্য অমিতের পছন্দ তফসিলি জাতিভুক্ত এক উদ্বাস্তু পরিবার। নামখানার বিশ্বাস পরিবারের সদস্যদের সূত্রে জানা গিয়েছে, সপ্তাহ খানেক আগে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন বিজেপির দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার নেতারা। সেই প্রস্তাবে রাজি হয়ে যান সুব্রত। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর জন্য ঘরোয়া এবং নিরামিষ খাবারের আয়োজন করতে চলেছেন তাঁরা। শাহি মেনুতে থাকতে পারে ভাত, ডাল, সবজির তরকারি, চাটনি, দই এবং মিষ্টি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy