এপ্রিলেই কি দেশে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) প্রয়োগ করতে চলেছে মোদী সরকার? — ফাইল ছবি।
এপ্রিলে কি দেশে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) চালু হতে চলেছে? মঙ্গলবার রাতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বাসভবনে বাংলার ১৭ জন সাংসদের উপস্থিতিতে এমনই ইঙ্গিত মিলেছে মিলেছে অমিত শাহের কথায়। বঙ্গ বিজেপি সূত্রে খবর, তৃণমূলের দুর্নীতি নিয়ে বাংলার বিজেপি সাংসদরা সরব হলেও শাহ তাতে খুব একটা গুরুত্ব দিতে চাননি। শাহি বৈঠকে বাংলায় আসন্ন পঞ্চায়েত এবং লোকসভা ভোটের প্রস্তুতি নিয়েও আলোচনা হয়েছে।
গত এক বছরে বেশ কয়েক বার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বঙ্গ বিজেপির প্রতিনিধিদের বৈঠকের কথা হয়। কিন্তু বিভিন্ন কারণে তা বাতিল হয়। ঠিক যেমন বঙ্গ বিজেপির সাংসদের এ বারের দিল্লিযাত্রার সময় হল। কথা ছিল, মঙ্গলবার বেলা ১২টায় সুকান্ত মজুমদার, দিলীপ ঘোষ, সুভাষ সরকারদের সঙ্গে দেখা হবে প্রধানমন্ত্রীর। শেষ মুহূর্তে তা বাতিল হয়ে যায়। তবে একেবারে খালি হাতে ফিরতে হল না বাংলা থেকে নির্বাচিত ১৭ জন বিজেপি সাংসদকে। মঙ্গলবার রাতে বিজেপির সদর দফতরের একটি অনুষ্ঠান শেষে বাংলার বিজেপি সাংসদদের সাক্ষাৎ হয় শাহের সঙ্গে, তাঁরই বাসভবনে। সেখানে দ্রুত সিএএ চালুর ব্যাপারে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ‘সদর্থক বার্তা’ পেয়েছেন বলে দাবি বিজেপি সাংসদদের।
এ দিকে বুধবার সকাল থেকে কেন্দ্রীয় প্রকল্পে অনিয়মের অভিযোগে শ্যামবাজার পাঁচ মাথার মোড়ে ধর্নায় বসছে বঙ্গ বিজেপি। তাতে বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর পাশাপাশি থাকার কথা রাজ্য সভাপতি সুকান্তেরও। কথা ছিল, বেলায় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ সেরে মঙ্গলবার রাতেই কলকাতায় ফিরবেন নেতারা। কিন্তু শাহি-বৈঠকের জেরে সেই পরিকল্পনায় অদলবদল করতে হয়েছে সুকান্তদের। মঙ্গলবার রাতে শাহি বৈঠক সেরে বুধবার সকালের মধ্যে দিল্লি থেকে কলকাতার বিমান ধরার তোড়জোড় চলছে।
মঙ্গলবার রাতের বৈঠকে রাজ্যের সাম্প্রতিক দুর্নীতির বিষয় নিয়ে রাজ্যের সাংসদরা সরব হন শাহের সামনে। বিজেপির একটি সূত্রে দাবি, তা শাহ খুব একটা মন দিয়ে শোনেননি। বরং রাজ্যের উন্নয়নের জন্য কী কী করা দরকার, তা জানতে চান বাংলার সাংসদদের কাছে। ১৭ জন সাংসদই উন্নয়নের রূপরেখা নিয়ে মত জানান। কেউ কেউ লিখিত ভাবেও তা জমা দেন। সূত্রের খবর, সবচেয়ে বেশি আলোচনা হয় চা বাগান এলাকা, আদিবাসী, জনজাতি সম্প্রদায়, মতুয়াদের বিষয়ে। ঘটনাচক্রে, এই অংশের মানুষের মধ্যে বিজেপির প্রভাব ব্যাপক। বিগত ভোটগুলিতে তা ব্যালট বাক্সেও প্রতিফলিত হয়েছে। শরণার্থী সমস্যা নিয়েও বিশদে আলোচনা হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। শরণার্থী সমস্যা নিয়ে আলোচনার সময়ই বনগাঁর সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় জাহাজ প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর সিএএ-র দাবিতে সরব হন। উপস্থিত আরও কয়েক জন সাংসদও একই প্রশ্ন করেন শাহকে। সূত্রের খবর, সাংসদদের শাহ বলেন, ‘‘আরও ১৫-২০ দিন অপেক্ষা করুন, তার পর দেখুন কী হয়।’’ (‘‘অউর ১৫-২০ দিন আপ ওয়েট কিজিয়ে। ফির দেখিয়ে কেয়া হোতা হ্যায়।’’)
আইন হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়ার পর এখনও পর্যন্ত সিএএ প্রয়োগ হয়নি। এ নিয়ে বাংলার বিজেপির জনপ্রতিনিধিদের প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়, কিন্তু কোনও গ্রহণযোগ্য জবাব তাঁরা দিতে পারেন না বলেও শাহকে জানানো হয়। বিগত কয়েক দিন ধরেই শুভেন্দু থেকে সুকান্ত বার বার অবিলম্বে সিএএ চালুর কথা বলছেন। এ বার এল শাহি-আশ্বাসবাণী। এর পর আসন্ন পঞ্চায়েত এবং ২০২৪-এর লোকসভা ভোটের প্রচারে বঙ্গ বিজেপির নেতাদের সিএএ-অস্ত্রে শান দেওয়া কার্যত নিশ্চিত বলেই মনে করা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy