ফাইল চিত্র।
এক বার বাতিল হওয়ার পরে আগামী পরশুদিন, বৃহস্পতিবার ঠাকুরনগরে জনসভা করতে আসছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। বিজেপি নেতৃত্ব সোমবার এ কথা জানান। বিধানসভা ভোটকে সামনে রেখে গত ৩০ জানুয়ারি ঠাকুরনগরে জনসভা করে নাগরিকত্ব নিয়ে মতুয়াদের বার্তা দেওয়ার কথা ছিল শাহের। কিন্তু দিল্লিতে ইজ়রায়েল দূতাবাস চত্বরে বিস্ফোরণ-কাণ্ডের জেরে সে দিন তাঁর বঙ্গ সফর বাতিল হয়। বৃহস্পতিবার ঠাকুরনগরের সভায় শাহ কী বলেন, সে বিষয়ে রাজনৈতিক শিবিরে আগ্রহ তৈরি হয়েছে। নয়া নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) তৈরি হলেও তার বিধি এখনও প্রণয়ন হয়নি। এমনকি, সংসদের বাজেট অধিবেশনে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিত্যানন্দ রাই জানিয়েছেন, সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিধি প্রণয়নের কাজ চলছে। তাই লোকসভা ও রাজ্যসভার আইন প্রণয়ন কমিটি যথাক্রমে আগামী ৯ এপ্রিল এবং ৯ জুলাই পর্যন্ত ওই বিধি প্রণয়নের জন্য বাড়তি সময় ধার্য করেছে। এই প্রেক্ষিতে মতুয়া সমাজের একাংশে চর্চা চলছে—সিএএ-র বিধিই যদি এখনও তৈরি না হয়ে থাকে, তা হলে কেন্দ্র কী ভাবে তাদের নাগরিকত্ব দেবে? এ বিষয়ে কেন্দ্রের সদিচ্ছা নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন মতুয়াদের অনেকে।
এ দিকে পশ্চিমবঙ্গের পাশাপাশি অসমেও বিধানসভা ভোট আসন্ন। সেখানে জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি) তৈরির সময় ওই তালিকা থেকে হিন্দু বাঙালিদের অনেকের নাম বাদ পড়েছে। তাই পশ্চিমবঙ্গের হিন্দু বাঙালিদেরও অনেকে নাগরিকত্বের প্রশ্নে আতঙ্কে রয়েছেন। সেই চাপও বিজেপির উপরে রয়েছে বলে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের অনেকের মত। সে দিক থেকেও মতুয়ারা শাহের আগামী পরশুর ঠাকুরনগরের সভার বক্তব্য নিয়ে কৌতূহলী।
কেন্দ্রের কাছ থেকে নাগরিত্বের প্রতিশ্রুতি পেয়ে মতুয়া সমাজের একটা বড় অংশ লোকসভা নির্বাচনে বিজেপিকে ভোট দিয়েছিল। লোকসভা ভোটে বিজেপি দ্বিতীয় বার জেতার পর সংসদে সংশোধিত নাগরিকত্ব বিল (সিএবি) পাশও হয়। কিন্তু এখনও পর্যন্ত মতুয়ারা নাগরিকত্ব না পাওয়ায় তাঁদের একাংশ বিজেপির প্রতি ক্ষুব্ধ। একই কারণে বনগাঁর বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুরও কয়েক দিন ‘বেসুরো’ হয়েছিলেন। পরে বিজেপি নেতৃত্ব তাঁর ক্ষোভ প্রশমিত করেন। শান্তনু-সহ মতুয়া সমাজের প্রতিনিধিরা আশা করে বসেছিলেন, ৩০ জানুয়ারি শাহ ঠাকুরনগরে গিয়ে নাগরিকত্ব নিয়ে তাঁদের ইতিবাচক বার্তা দেবেন। কিন্তু সে দিন শাহের ওই সভা বাতিল হওয়ায় মতুয়াদের মধ্যে নতুন করে সংশয় তৈরি হয়।
রাজ্যের শাসক তৃণমূল এবং বিরোধী বাম ও কংগ্রেস অবশ্য আগাগোড়াই বলে আসছে, মতুয়ারা এ দেশের নাগরিক আছেন এবং থাকবেন। ভোট আদায়ের জন্য বিজেপি তাঁদের বে-নাগরিক দেখিয়ে নতুন করে নাগরিকত্বের টোপ দিচ্ছে। এটা একটা ফাঁদ। অন্য দিকে, মধ্যপ্রদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বিজেপির নরোত্তম মিশ্র এ দিন বাঁকুড়ার বেলিয়াতোড়ে সভায় বলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সিএএ নিয়ে ভুল বোঝানো আর ভয় দেখানোর রাজনীতি করছেন।’’
ঠাকুরনগরের সভার পাশাপাশি বৃহস্পতিবার শাহের কোচবিহারে বিজেপির পরিবর্তন রথযাত্রারও উদ্বোধন করার কথা। ঝাড়গ্রাম এবং তারাপীঠ থেকে বিজেপির অন্য দু’টি পরিবর্তন রথযাত্রার উদ্বোধন করতে আজ, মঙ্গলবার ফের রাজ্যে আসছেন দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জগৎপ্রকাশ নড্ডা। গত শনিবার তিনি নবদ্বীপে গিয়ে সেখানকার রথযাত্রার সূচনা করেছেন। সে দিন মালদহেও তাঁর সভা এবং রোড শো হয়েছে। বীরভূমের তারাপীঠ থেকে আজ যে রথ রওনা হবে, তার যাত্রাপথে কোথাও উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথকে আনার চেষ্টা করছে বিজেপি। আগামী শনিবার তিনি আসতে পারেন। তবে যোগীর সফরের দিনক্ষণ এখনও চূড়ান্ত হয়নি বলে বিজেপি নেতৃত্ব সোমবার জানান। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য এ দিনই বিধানসভায় কটাক্ষের সুরে বলেন, ‘‘শুনছি, নানুরে নাকি যোগী-ভোগী আসবেন। চেনেন উনি? নানুর কিছু জানেন?’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy