কৃষ্ণা বসুর সঙ্গে অমর্ত্য সেন। ছবি আনন্দবাজার আর্কাইভ থেকে।
খুব বড় রকম ক্ষতি হল। কৃষ্ণার মতো মানুষ পাওয়া খুবই কঠিন। তিনি যে এখানে ছিলেন তা ভারতবর্ষের পক্ষে খুবই ভাগ্যের কথা ছিল। তিনি যে শুধু এখানে ছিলেন তা না, সেই সঙ্গে ভারতীয় রাজনীতি, ভারতের সমাজচিন্তা এ বিষয়ে তাঁর অবদানগুলি বিশ্বস্তভাবে আমাদের কাছে তুলে ধরেছিলেন। সংসদের সদস্য হিসেবে কাজ করেছেন। সেখানে বিদেশনীতি বিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যান, সভাপতি হিসেবে তাঁর যা করণীয় করেছেন। তার জন্য অনেক কিছু থেকে আমরা সবাই খুব লাভবান হয়েছি। অন্যদিকে, ভারতবর্ষ বা পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতি কী রকম চলছে, এ বিষয়ে তাঁর বহু মূল্যবান কথা থেকে আমরা উপকৃত হয়েছি ঠিকই। কিন্তু আমার পক্ষে অবশ্য শুধু ওঁর গুণের কথা বললে চলবে না। তিনি আমার ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন। তাঁর সঙ্গে কথা বলার সুযোগ যখনই পেতাম, তখন আমার খুব ভাল লাগত। অনেক সময় তিনি তাঁর পুত্র, হার্ভার্ডের অধ্যাপক সুগত বসুর কাছে যেতেন। তখন আমাদের পক্ষে একটা বড় রকম সুযোগ হত। তাঁর সঙ্গে কাছে বসা, তাঁর সঙ্গে কথা বলার সুযোগ হত।
আমি নিজেকে খুব ভাগ্যবান বলে মনে করি, যে তাঁর স্নেহ, বন্ধুত্ব পাওয়ার সুযোগ আমার হয়েছে এবং তাঁর থেকে নানাভাবে লাভবান হয়েছি। এতে কোনও সন্দেহ নেই। তাই নানা দিক মনে পড়বে। কোনওটা কাজের দিক, কোনওটা মানসিক যোগাযোগের দিক, কোনওটা চিন্তার জগত, কোনওটা কাজের জগৎ। সব কিছুর মধ্যেই কৃষ্ণা বসু আমাদের চিন্তায়, বিশেষত আমার চিন্তায় মধ্যে বারবারই আসবেন। এই অভাব পূরণ করা সহজ হবে না। আমার ধারণা তাঁর অভাব বহুদিন আমরা বোধ করব। সেই নিয়ে আমরা কতটা ক্ষতিতে পড়লাম, এই মুহূর্তে সেই নিয়েও আমাদের চিন্তা চলতে থাকবে। অনেক সময় যার জন্য লোকে যা যা করেছেন, তার ফলে আমরা কতটা লাভবান হচ্ছি, সেটা খুব স্পষ্টভাবে বোঝা যায় না, যতক্ষণ তাঁরা কাছে থাকেন।
কিন্তু তাঁরা চলে গেলে, আমরা বুঝতে পারি, কে কীভাবে, কতভাবে আমাদের সাহায্য করেছেন, জীবনকে সমৃদ্ধ করেছেন। এ সমস্ত কথা নিশ্চিতভাবেই আমাদের মাথায় এখন ঘুরবে। তাই কৃষ্ণা বসু চলে যাওয়া নিয়ে দুঃখ করার হাজারও কারণের মধ্যে আমাদের নিজেদের যে লোকসান হল, সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy