পুজোর শেষ লগ্নে ঘূর্ণিঝড়ের চোখরাঙানি ছিল। তবে শারদোৎসবের আনন্দকে ম্লান করতে পারেনি দুর্যোগ। মঙ্গলবার দশমীর দিন গাঙ্গেয় বঙ্গে বিক্ষিপ্ত ভাবে হালকা বৃষ্টি হয়েছে। উপকূলীয় এলাকায় তুলনায় বৃষ্টি সামান্য বেশি হয়েছে। তবে একাদশীর দিন থেকেই সেই পরিস্থিতি বদলাতে পারে বলে মনে করছেন আবহবিদেরা। আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড় হামুন বঙ্গোপসাগরে থাকার সময়ে শক্তি বাড়িয়ে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে। তবে সেই শক্তি ধরে রাখতে পারেনি সে। বরং যতই সে বাংলাদেশের উপকূলের দিকে এগিয়েছে ততই তার শক্তি কমেছে। আজ, বুধবার ভোরে দক্ষিণ চট্টগ্রামের কাছাকাছি আছড়ে পড়তে পারে সে। সে সময়ে উপকূলে ঘণ্টায় ৮০-৯০ কিলোমিটার বেগে ঝড় বইতে পারে। এ দিকে আজও, দুই ২৪ পরগনায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে। হালকা বৃষ্টির আশঙ্কা আছে গাঙ্গেয় বঙ্গের বাকি জেলাগুলিতেও। আগামিকাল, বৃহস্পতিবার থেকে ফের শরৎ আকাশ ফিরতে চলেছে বলে আবহবিদেরা জানান।
বর্ষা বিদায় নিয়েছে। এ সময়ে বঙ্গোপসাগর এবং আরব সাগরে ঘূর্ণিঝড় তৈরির অনুকূল পরিস্থিতি থাকে। তাই বর্ষার পরের এই দু’মাসকে ঘূর্ণিঝড়ের মরসুম বলেও অনেকে অভিহিত করেন। এ বার প্রায় একই সময়ে আরব সাগরে ঘূর্ণিঝড় তেজ এবং বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় হামুন জন্ম দিয়েছিল। হামুন নামটি ইরানের দেওয়া। মরুভূমির মধ্যে প্রাকৃতিক ভাবে তৈরি হওয়া হ্রদ বা জলাভূমিকে ফার্সি ভাষায় হামুন বলা হয়। তা থেকেই এই নাম দিয়েছে ইরান। আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড় এ দেশে না এলেও তার প্রভাবে সাগর উত্তাল থাকবে। তাই আজ, বুধবার পর্যন্ত বঙ্গোপসাগরে মৎস্যজীবীদের যেতে নিষেধ করা হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় পশ্চিমবঙ্গ উপকূলে হাজির না হলেও তার প্রভাবে জলীয় বাষ্প বাতাসে ঢুকেছে। আবহবিদদের একাংশের মতে, দিন কয়েক আগেও উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঠান্ডা শুকনো বাতাস বয়ে আসছিল। গায়ের চামড়ায় অল্পবিস্তর টান ধরছিল। এ বার ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব কাটলেই ফের শুকনো বাতাস ঢুকবে। তার জেরে বাতাসে আর্দ্রতা যেমন কমবে তেমনই গভীর রাতে বা ভোরে তাপমাত্রাও কিছুটা নামতে পারে।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)