ছবি: সংগৃহীত।
শিক্ষার মৌলিক বিষয়কে বাদ দিয়ে কেন্দ্র নতুন শিক্ষানীতি তৈরি করেছে বলে অভিযোগ অনেকের। কেউ বা বলছেন, শিক্ষানীতির নামে শিক্ষা ক্ষেত্রে পুরোপুরি বেসরকারিকরণের রাস্তা খুলে দেওয়া হচ্ছে। কারও কারও চোখে এই শিক্ষানীতি ‘সাম্প্রদায়িক’। কেন্দ্রীয় শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে বাংলার সরকারপন্থী ও বিরোধী বেশির ভাগ শিক্ষক সংগঠনই একজোট।
জাতীয় শিক্ষানীতি নিয়ে আপত্তি কোন কোন জায়গায়, রাজ্যের গড়া কমিটি সেই বিষয়ে রিপোর্ট দেওয়ার পরে ১৫ অগস্টের মধ্যে লিখিত ভাবে বিষয়টি কেন্দ্রকে জানানো হবে। শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় রাজ্যের শিক্ষক সংগঠনগুলির মতামত চেয়েছেন। সরকারপন্থী শিক্ষক সংগঠন তো বটেই, রাজ্যের অধিকাংশ বিরোধী শিক্ষক সংগঠনও এই নীতির বিরুদ্ধে। আপত্তির কথা জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রীকে চিঠি লেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে ওই সব সংগঠন। বাম সংগঠন নিখিল বঙ্গ শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সুকুমার পাইন বলেন, ‘‘এই নীতি শিক্ষার বাণিজ্যায়ন ও বেসরকারিকরণের পথ প্রশস্ত করবে। উপরন্তু ধর্মীয় মেরুকরণ ঘটাবে এই নীতি। কেন্দ্রের এই উদ্যোগের বিরুদ্ধে আমরা রাজ্য সরকারের পাশে আছি।’’
তৃণমূল শিক্ষক সংগঠন পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির রাজ্য সম্পাদক দিব্যেন্দু মুখোপাধ্যায়ও এই শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে নিজেদের বক্তব্য লিখে পাঠাচ্ছেন শিক্ষামন্ত্রীকে। ‘‘মাধ্যমিকের মতো জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষা তুলে দেওয়ার চেষ্টারও বিরোধিতা করছি আমরা। শিক্ষা যৌথ তালিকাভুক্ত বিষয়। তা হলে রাজ্যের সঙ্গে কোনও আলোচনা না-করে এমন নীতি তৈরি করা হল কেন,’’ প্রশ্ন দিব্যেন্দুবাবুর।
একই সুরে শিক্ষক শিক্ষকর্মী শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চের রাজ্য সম্পাদক কিঙ্কর অধিকারীর প্রশ্ন, ‘‘অতিমারির প্রকোপে দেশ যখন বিপর্যস্ত, তখন এমন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে কোনও আলোচনা না-করেই নীতি আনা হল কেন? যাঁরা স্কুলের পড়ুয়াদের সঙ্গে ওতপ্রোত ভাবে জড়িত, তাঁদের মতামত নেওয়া হয়নি। কেন্দ্র বলছে, রাজ্যের সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে। তার প্রমাণ কোথায়?’’
পশ্চিমবঙ্গ সরকারি বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সৌগত বসু জানান, নতুন নীতিতে আপত্তির জায়গা অনেক। অষ্টম শ্রেণির পরে ছাত্রছাত্রীরা কোন ভাষায় পড়বে, তা স্পষ্ট নয়। ‘‘নবম থেকে দ্বাদশ পর্যন্ত সিমেস্টার পরীক্ষা নিয়েও আমাদের আপত্তি আছে। পুরো নীতির প্রতিটি পয়েন্ট ধরে আমরা রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রীকে লিখছি,’’ বলেন সৌগতবাবু। মাধ্যমিক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির অন্যতম নেতা অনিমেষ হালদার জানান, কেন্দ্রীয় শিক্ষানীতির অনেক বিষয়ে তাঁদের ঘোরতর আপত্তি আছে। পুরোটাই তাঁরা শিক্ষামন্ত্রীর কাছে তুলে ধরবেন।
তবে বিজেপির পশ্চিমবঙ্গ শিক্ষক সেল স্বভাবতই এই নীতির পক্ষে। ওই সেলের রাজ্য আহ্বায়ক দীপল বিশ্বাস বলেন, ‘‘কোনও আপত্তির জায়গা পাইনি। এই বাস্তববাদী শিক্ষানীতি দেশকে অগ্রগতির পথে নিয়ে যাবে। অকারণে বিতর্ক তৈরি করা হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy