ছবি: পিটিআই।
চিকিৎসার খরচ নিয়ে অভিযোগ ছিলই। এ বার পরিষেবার মান নিয়েও বেসরকারি হাসপাতালগুলির একাংশের ক্ষেত্রে প্রশ্ন উঠে গেল। কোভিড প্রোটোকল নজরদারির জন্য স্বাস্থ্য দফতরের তৈরি চিকিৎসকদের পরিদর্শক দলের পর্যবেক্ষণে উঠে এসেছে এই তথ্য।
সম্প্রতি করোনা আক্রান্ত এক প্রবীণ চিকিৎসক উত্তর শহরতলির বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। ২৮ দিনে ওই হাসপাতালে খরচ হয়েছে ২২ লক্ষ টাকা। তার মধ্যে ৭ লক্ষ টাকা শুধু পরীক্ষা বাবদ। এর পরে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে কোভিড আক্রান্ত চিকিৎসককে স্থানান্তর করানো হলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।
উত্তর শহরতলির সেই হাসপাতালে পরিদর্শনে গিয়ে প্রয়াত চিকিৎসকের রিপোর্ট দেখতে চান স্বাস্থ্য ভবনের প্রতিনিধিরা। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, প্রয়াত চিকিৎসকের ১৩ জুলাইয়ের সিটি স্ক্যানে রেডিওলজিস্ট নিজের পর্যবেক্ষণে লিখেছেন, গত সপ্তাহের তুলনায় রোগীর সিটি স্ক্যানের রিপোর্ট ভাল। অথচ ওই দিনই রোগীকে ছুটি দেওয়ার সময় ‘ডিসচার্জ সামারি’তে রোগীর ‘পালমোনারি ফাইব্রোসিস’ হওয়ার কথা লেখা আছে।
বেলেঘাটা আইডি’র বক্ষ রোগের চিকিৎসক কৌশিক চৌধুরী জানান, ‘পালমোনারি ফাইব্রোসিস’-এর জেরে প্রবল শ্বাসকষ্টে ভোগেন রোগী।
একই হাসপাতালে কোভিড রোগীকে ছুটি দেওয়ার প্রশ্নেও প্রোটোকল মানা হচ্ছে না বলে খবর। রোগীকে স্থানান্তরের সময় একটি কাগজে সই করানোর বিষয় নজরে এসেছে। সেই সইয়ের অর্থ হল, রোগী বলছেন, তিনি স্বেচ্ছায় হাসপাতাল ছেড়ে যাচ্ছেন। প্রোটোকল অনুযায়ী, এ ভাবে কোভিড রোগীকে হাসপাতাল থেকে ছাড়া যায় না। ওই হাসপাতালের পিপিই খোলা-পরার জায়গাও স্বাস্থ্যবিধি সম্মত নয় বলে জানিয়েছেন পরিদর্শকেরা।
উত্তর শহরতলির সেই হাসপাতালের কর্ণধার বলেন, ‘‘সিটি স্ক্যানের প্লেট দেখে রেডিয়োলজিস্ট যে পর্যবেক্ষণ জানিয়েছিলেন, তা পুরনো রিপোর্ট ছিল। পরে রেডিওলজিস্ট রিপোর্ট চেঞ্জ করে দেন। সব রোগীকে ছুটি দেওয়ার সময় লিখিত নেওয়া হচ্ছে তা নয়। ভুল করে একজন রোগীর ফাইলে এ ধরনের কাগজটি ছিল। পিপিই খোলা-পরার জায়গা কেমন তা তো স্বাস্থ্য দফতরের প্রতিনিধিরা আগে একাধিকবার দেখে গিয়েছেন। তখন তো এ নিয়ে কোনও প্রশ্ন তোলা হয়নি!’’
স্বাস্থ্য ভবনের বক্তব্য, কয়েকটি বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রোগীদের অহেতুক পরীক্ষা করছেন। এ রকমই একটি হাসপাতালে পাঁচদিন অন্তর রোগীর আরটি-পিসিআর পরীক্ষা করানোর হয়েছে বলে পরিদর্শক দলের নজরে এসেছে। চিকিৎসকদের একাংশের বক্তব্য, প্রথমবার পজ়িটিভ হওয়ার দশ দিন আগে এ ধরনের পরীক্ষা করানো কার্যত অর্থহীন।
আইএমএ’র রাজ্য শাখার সম্পাদক শান্তুনু সেন বলেন, ‘‘বেসরকারি হাসপাতালে এ ধরনের খামতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে।’’
ওয়েস্ট বেঙ্গল ডক্টরস ফোরামের সম্পাদক কৌশিক চাকী বলেন, ‘‘কোভিড রোগীর শারীরিক অবস্থা অত্যন্ত জটিল না হলে বেসরকারি হাসপাতালে লাগামছাড়া খরচ হওয়ার কথা নয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy