Advertisement
১৯ ডিসেম্বর ২০২৪

নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগ রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থায়

সংস্থা দেখে, ওই ৩৩টি সিরিয়াল নম্বরের ২৩ জনেরই উত্তরপত্র হুবহু এক। সকলেই একই প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন। এবং তাঁদের উত্তরও এক।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

পিনাকী বন্দ্যোপাধ্যায় ও নীলোৎপল বিশ্বাস
কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০৪:০৫
Share: Save:

৩৩ জন পরীক্ষার্থীর সিরিয়াল নম্বর এবং বারকোড লেখা উড়ো ই-মেল এসেছিল পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিদ্যুৎবন্টন সংস্থার অফিসে। তাতে দাবি করা হয়েছিল, গত জুনের বিদ্যুৎ দফতরের ‘অফিস এগজ়িকিউটিভ’ এবং ‘জুনিয়র অপারেটর টেকনিশিয়ান কাম টেকনিক্যাল অ্যাসিস্ট্যান্ট’ পদে নিয়োগে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে। সরকারি ওই পরীক্ষায় পাশ করানোর জন্য কারও থেকে নেওয়া হয়েছে তিন লক্ষ টাকা। কাউকে আবার দিতে হয়েছে আড়াই লক্ষ! এও দাবি করা হয়েছিল, এই ৩৩ জনের খাতা দেখলেই সব জানা যাবে।

সংস্থা দেখে, ওই ৩৩টি সিরিয়াল নম্বরের ২৩ জনেরই উত্তরপত্র হুবহু এক। সকলেই একই প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন। এবং তাঁদের উত্তরও এক। আর সব উত্তরই নির্ভুল! এর পরেই পুলিশের দ্বারস্থ হয় পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিদ্যুৎবন্টন সংস্থা। বিধাননগর পূর্ব থানায় দায়ের হওয়া এফআইআর অনুযায়ী, সংস্থার মানবসম্পদ বিভাগের জেনারেল ম্যানেজার অতীশ ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, চুক্তির ভিত্তিতে এক বেসরকারি নিয়োগ সংস্থা তাঁদের হয়ে ওই পরীক্ষা নেওয়ার দায়িত্বে রয়েছে। পরীক্ষার্থীদের খাতা দেখে মেধাতালিকাও তারাই প্রকাশ করে। সুতরাং ওই সংস্থার তরফেই দুর্নীতি করা হয়েছে। পুলিশ অভিযোগের তদন্ত শুরু করেছে। অতীশবাবু অবশ্য এ নিয়ে প্রকাশ্যে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।

রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় অবশ্য জানান, তাঁদের সংস্থায় ১১৫০টি শূন্য পদের জন্য চলতি বছরের ৯ জুন পরীক্ষা হয়। প্রায় ৩৬ হাজার পরীক্ষার্থী পরীক্ষা দিয়েছিলেন। ২০১৮ সালের ২৮ ডিসেম্বর পরীক্ষার বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছিল। পরীক্ষার পরে উত্তরপত্র (ওএমআর শিট) ওই সংস্থার কাছেই ছিল।

এরপর ২৭ জুন উড়ো মেল আসে বিদ্যুৎবন্টন সংস্থায়। মেল প্রেরক এ-ও দাবি করেছেন যে, তিনিও একাধিক পরীক্ষার্থীকে পাশ করানোর জন্য ৩০ লক্ষ টাকা দিয়েছিলেন। তবে টাকা নিলেও তাঁর কাজ করে দেওয়া হয়নি। শিয়ালদহ এলাকার একটি হোটেলে পরীক্ষার্থীদের ডেকে সম্ভাব্য প্রশ্ন কী হতে পারে তা-ও বলে দেওয়া হয়েছিল বলে ওই মেল প্রেরকের দাবি। শোভনবাবু বলেন, ‘‘পুলিশকে আমরা গোটাটাই বলেছি। আপাতত ওই পরীক্ষা বন্ধ রাখা হয়েছে।’’ তবে বিদ্যুৎ দফতরের কর্মীদের একাংশের প্রশ্ন, ‘‘বিদ্যুৎবন্টন সংস্থার ভিতরের লোক না থাকলে কি এত বড় দুর্নীতি সম্ভব? পুলিশ সকলকে খুঁজে বার করুক।’’

অভিযুক্ত সংস্থার সঙ্গে এ দিন বারবার যোগাযোগের চেষ্টা হলেও কেউ ফোন ধরেননি। মেলে উল্লেখ করা সংস্থার দুই কর্তার ফোনও বন্ধ। বিধাননগর পুলিশ জানাচ্ছে, ওই সংস্থা বিহারে বেশি সক্রিয়। সেখান থেকে তথ্য নেওয়ার পাশাপাশি সংস্থার আধিকারিকদের খোঁজ চালানো হচ্ছে। পরীক্ষার্থীদের সঙ্গেও এ ব্যাপারে কথা বলা হচ্ছে। উড়ো মেলটির আইডি ধরে প্রেরকের খোঁজ চলছে। বিধাননগর পুলিশের কমিশনার লক্ষ্মীনারায়ণ মিনা এ দিন বলেন, ‘‘থানা

তদন্ত করছে। দুর্নীতিতে যাঁরাই

জড়িত, সকলের বিরুদ্ধেই কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Scam Exam Recruitment WBSEDCL
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy