ফাইল চিত্র।
অর্থনীতির বৃদ্ধির হার এবং তা কষে দেখার পদ্ধতি নিয়ে কয়েক বছর ধরেই রাজনীতি সরগরম। চলতি আর্থিক বছরে বৃদ্ধির হারের অধোগতি নিয়ে চর্চা আরও তীব্র হয়েছে।
তবে নবান্নের দাবি, সারা দেশের বৃদ্ধির হার মন্থর হলেও দিব্যি এগোচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ। জাতীয় গড়ের চেয়ে বাংলার বৃদ্ধির হার যে প্রায় দ্বিগুণ, তা মেনে নিয়েছে কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান মন্ত্রকও। তা সত্ত্বেও কৃষি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, পরিষেবা ইত্যাদি ক্ষেত্রে বৃদ্ধির হার এবং তার সাপেক্ষে নানান ‘সূচক’ গণনার ব্যাপারে বিভিন্ন দফতরকে সতর্ক করে দিল অর্থ দফতর। এ ক্ষেত্রে সব দফতরেরই ক্ষমতা খর্ব করে তারা জানিয়ে দিয়েছে, পরিকল্পনা ও পরিসংখ্যান দফতরের ‘অনুমোদন’ ছাড়া বৃদ্ধির হারের সাপেক্ষে কোনও রকম সূচক গণনা করা যাবে না।
অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র বলেন, ‘‘এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকারী পরিসংখ্যান দফতরই। তাই কোনও দফতরের বৃদ্ধির আগাম আভাসের হিসেব কষা বা তার ভিত্তিতে সূচক তৈরি করার আগে পরিসংখ্যান দফতরের মতামত ও অনুমোদন নিতে বলা হয়েছে। এই নিয়ে কোনও বিতর্ক নেই। সমন্বয় বাড়াতেই এমন নির্দেশ।’’
অর্থসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী সব দফতরের সচিবদের চিঠি লিখে বৃদ্ধির আগাম হিসেব কষার ব্যাপারে সতর্ক করেছেন। তিনি সচিবদের লিখেছেন, রাজ্যের বৃদ্ধির হার ঠিক করে পরিসংখ্যান দফতরের অধীন ‘বুরো অব অ্যাপ্লায়েড ইকনমিক্স অ্যান্ড স্ট্যাটিস্টিক্স’। স্টিস্টেম অব ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টস (এসএনএ)-এর নির্ধারিত পদ্ধতি মেনে জটিল এই প্রক্রিয়া চালানো হয়। বৃদ্ধির হারের সাপেক্ষেই আবার অর্থনীতির বিভিন্ন ক্ষেত্রের বিভিন্ন সূচক তৈরি করা হয়ে থাকে। রাজ্যের উন্নয়নের অভিমুখ ঠিক করার ক্ষেত্রে এই বৃদ্ধির হার ও তার সাপেক্ষে সূচকগুলির গণনা খুবই জরুরি।
আরও পড়ুন: পরিকাঠামো ছাড়া প্রাথমিকে পঞ্চম, জুটছে না পড়ুয়া
অর্থসচিব লিখেছেন, দেখা যাচ্ছে, বিভিন্ন দফতর নিজেরাই বৃদ্ধির (জিএসডিপি) হারের আগাম আভাস তৈরি করছে। সেটা ধরে নিয়ে অন্যান্য সূচকেরও আভাস (অ্যাডভান্স এস্টিমেটস) দিচ্ছে। কিন্তু অনেক সময়েই সেটা পরিসংখ্যান দফতরের নির্দিষ্ট পদ্ধতি মেনে করা হচ্ছে না। সাধারণত আগাম আভাস দেওয়ার পরে চূড়ান্ত বৃদ্ধির হার এবং তার সাপেক্ষে সূচক তৈরি করতে তিন বছর লেগে যায়। সেই জন্য যেখানে বিবিধ সূচক ধরে কাজ করতে হয়, সেই কৃষি, স্বাস্থ্য শিক্ষা, কৃষির মতো দফতরকে পরিসংখ্যান দফতরের চূড়ান্ত অনুমোদন নিয়েই বৃদ্ধির হার বা সূচকের গণনা করতে হবে।
আরও পড়ুন: সচেতনতাই সহজ করে দিল ছাত্রের অঙ্গদান
অর্থকর্তাদের বক্তব্য, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, শিল্পের মতো দফতরে বিবিধ সূচক তৈরি করতে হয়। সেই সূচকের ভিত্তিতেই রাজ্যের উন্নয়নের পরিমাপ করা হয়। কেন্দ্র বা বিদেশি সংস্থা থেকে উন্নয়নের বরাদ্দ নির্ধারিত হয় সেই সব সূচকের মাধ্যমেই। সেই জন্য এই নিয়ে ভুল বোঝাবুঝি কাটাতে শুধু পরিসংখ্যান দফতরের মাধ্যমেই তথ্য প্রকাশের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
রাজ্যের বৃদ্ধির হার নিয়ে বিবাদ কেন্দ্র পর্যন্ত গড়িয়েছিল। ২০১১ সালে ক্ষমতার আসার পরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার রাজ্যের যে-বৃদ্ধির হার দাবি করেছিল, তা মানতে রাজি হয়নি কেন্দ্র। চতুর্দশ অর্থ কমিশনের মধ্যস্থতায় কেন্দ্রের সঙ্গে রাজ্যের সেই বিবাদ মেটে। ২০১১-১২ ভিত্তিবর্ষের সাপেক্ষে কনস্ট্যান্ট প্রাইসে রাজ্য ২০১৭-১৮ সালে ১১.৪৬% বৃদ্ধি দাবি করলেও কেন্দ্রের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে তা কমিয়ে ৯.১৫% করা হয়। কেন্দ্রের পদ্ধতি মেনেই ২০১৮-১৯ অর্থবর্ষে কনস্ট্যান্ট প্রাইসে ১০.৭১% বৃদ্ধির আভাস দেওয়া হয়েছে। সদ্য শেষ হওয়া অর্থবর্ষের আভাসও আসন্ন রাজ্য বাজেটে ঘোষণা করবেন অর্থমন্ত্রী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy