এ বারের পরীক্ষা শুধু কর্মপ্রার্থীদের নয়, পরীক্ষাটা আয়োজক সংস্থা প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদেরও। প্রতীকী ছবি।
রাত পোহালেই প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতার জন্য কমবেশি সাত লক্ষ প্রার্থী আবার যোগ্যতা নির্ধারক পরীক্ষা টেটে বসতে চলেছেন। সারা বাংলার স্কুলে নিয়োগ-দুর্নীতি নিয়ে আলোড়নের মধ্যে কাল, রবিবারের রাজ্যজোড়া এই পরীক্ষার বাড়তি তাৎপর্য দেখছে শিক্ষা শিবির। ওই শিবিরের একাংশের মতে, এ বারের পরীক্ষা শুধু কর্মপ্রার্থীদের নয়, পরীক্ষাটা আয়োজক সংস্থা প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদেরও। তাই সমস্ত রকমের সম্ভাব্য অনিয়ম এবং ফাঁকফোকর এড়াতে ইতিমধ্যেই বেশ কিছু ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে পর্ষদ। পরীক্ষার্থী থেকে শুরু করে পরিদর্শক পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট সকলের জন্য নিয়মাবলি জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। পর্ষদের সেই নিয়ম মেনে সব পরীক্ষা কেন্দ্রই তৈরি বলে জানান সেন্টার ইনচার্জেরা।
পরীক্ষার আগেই, শুক্রবার পর্ষদের তরফে ভুলভ্রান্তি শুধরে নেওয়ার পালা শুরু হয়ে গিয়েছে। টেট কেন্দ্রের নাম ঘোষণার সময় কয়েকটি পরীক্ষা কেন্দ্রের ঠিকানায় কিছু তথ্যগত ভুল থেকে গিয়েছিল। এ দিন নিজেদের ওয়েবসাইটে সেই সব ভুল সংশোধন করে দিয়েছে পর্ষদ। তারা জানিয়েছে, পরীক্ষার্থীরা চাইলে সেই সংশোধিত তথ্য লিখে আবার অ্যাডমিট কার্ড ডাউনলোড করে নিতে পারেন।
এ বারের পরীক্ষায় আগাগোড়া স্বচ্ছতা বজায় রাখাই পর্ষদের কাছে সব থেকে বড় চ্যালেঞ্জ বলে শিক্ষা-সহ সংশ্লিষ্ট সব মহলের অভিমত। সেই জন্য এই প্রথম ১৪৬০টি পরীক্ষা কেন্দ্রের প্রতিটিতে থাকছে সিসি ক্যামেরার নজরদারি। পরীক্ষা শুরু হওয়ার আগেও কিছু পরীক্ষা থাকছে কর্মপ্রার্থীদের জন্য। পরীক্ষা কেন্দ্রে ঢোকার আগে তাঁদের বায়োমেট্রিক পরীক্ষা হবে। মোবাইল বা অন্য কোনও বৈদ্যুতিন সামগ্রী নিয়ে পরীক্ষাগৃহে ঢোকা যাবে না। তাই পরীক্ষা হবে মেটাল ডিটেক্টর দিয়েও।
শুক্রবার টেটের অন্যতম কেন্দ্র যাদবপুর বিদ্যাপীঠে পৌঁছে দেখা যায়, প্রবেশ ও প্রস্থানের ফটকে সিসি ক্যামেরা বসেছে। প্রধান শিক্ষক পার্থপ্রতিম বৈদ্য বলেন, “আমাদের স্কুলে এমনিতেই সিসি ক্যামেরা রয়েছে। তার উপরে পর্ষদের তরফে স্কুলে ঢোকা এবং বেরোনোর জায়গায় ক্যামেরা লাগানো হয়েছে আলাদা ভাবে। পরীক্ষার্থীদের বায়োমেট্রিক পরীক্ষার পরিকাঠামো তৈরি করা হবে শনিবার। পর্ষদের নিয়মবিধি মেনেই প্রস্তুতি প্রায় সম্পূর্ণ। পরীক্ষা কেন্দ্রের আশপাশের সব ফোটোকপির দোকান রবিবার বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। আমাদের স্কুলে এক হাজার চাকরিপ্রার্থী পরীক্ষা দেবেন।’’
টেট-কেন্দ্র টাকি হাউস গভর্নমেন্ট গার্লস স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা শম্পা চক্রবর্তী জানান, পর্ষদের নিয়ম মেনে স্কুলে স্ট্রংরুম, যাঁরা পরীক্ষা নেবেন, তাঁদের জিনিসপত্র রাখার ক্লোক রুম, অসুস্থ পরীক্ষার্থীদের জন্য সিক রুম— সব তৈরি। ‘‘আমাদের স্কুলে ৫০০-র মতো প্রার্থী পরীক্ষা দেবেন। বেলা ১১টার পরে কোনও প্রার্থীকে পরীক্ষা কেন্দ্রে ঢুকতে দেওয়া হবে না,” বললেন ওই প্রধান শিক্ষিকা।
পর্ষদ জানায়, শুধু পরীক্ষার্থীদের মোবাইল নিষিদ্ধ নয়, পরীক্ষা কেন্দ্রের কোনও কর্মীই মুঠোফোন সঙ্গে রাখতে পারবেন না। সুপারভাইজার, অফিসার ইনচার্জ এবং বোর্ড পর্যবেক্ষকদের মোবাইল একটি জায়গায় জমা রাখতে হবে। ফোন বাজলে ধরতে হবে সেখানে গিয়ে। কত ক্ষণ কথা হল, তা লগ-বুকে লিখে রাখতে হবে।
ঘড়ি বা জলের বোতল নিয়েও প্রার্থীরা পরীক্ষার্থী কেন্দ্রে ঢুকতে পারবেন না। তাই সব পরীক্ষাগৃহে দেওয়াল ঘড়ি লাগানো হচ্ছে। তার জন্য সংশ্লিষ্ট স্কুল ও কলেজগুলিকে অতিরিক্ত দেওয়াল ঘড়ি কিনতে হচ্ছে। এবং প্রতিটি ঘরে রাখতে হচ্ছে পানীয় জলের ব্যবস্থাও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy