Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪

রাজীবের আগাম জামিন খারিজ করল আলিপুর আদালত

মিশ্রের অভিযোগ, সারদা-কর্তা সুদীপ্ত সেন ও তাঁর স্ত্রী পিয়ালির একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে লকার ছিল। সিট ওই লকার খুলে যে সব নথিপত্র পেয়েছিল, তা সিবিআই-কে দেয়নি।

আলিপুর আদালত। (ইনসেটে) রাজীব কুমার। ফাইল চিত্র।

আলিপুর আদালত। (ইনসেটে) রাজীব কুমার। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০৪:৩৫
Share: Save:

রাজ্যের গোয়েন্দা প্রধান রাজীব কুমারের আগাম জামিনের আবেদন খারিজ করে দিল আলিপুর আদালত। শনিবার আলিপুরের ভারপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা বিচারক সুজয় সেনগুপ্ত ওই আবেদন খারিজ করেন। কলকাতা হাইকোর্ট আগেই জানিয়ে দিয়েছে, সারদা মামলায় তদন্তের প্রয়োজনে রাজীবকে গ্রেফতার করতে আইনি বাধা নেই। আলিপুর আদালতের অতিরিক্ত মুখ্য বিচার বিভাগীয় বিচারকও বৃহস্পতিবার জানিয়ে দিয়েছেন, কলকাতার প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার রাজীবের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানার নির্দেশ জারির প্রয়োজন নেই। শনিবার বিচারক সেনগুপ্ত রাজীবের আগাম জামিনের আবেদন খারিজ করে দেওয়ার পরে তাঁকে যে কোনও সময় গ্রেফতার করতে সিবিআইয়ের আর কোনও বাধা রইল না বলে মনে করছেন আইনজীবীদের একাংশ। তবে হাইকোর্টের আইনজীবী কল্লোল মণ্ডল জানান, রাজীব এখন হাইকোর্টে আগাম জামিনের আবেদন জানাতে পারেন। সেখানে আর্জি খারিজ হলে যেতে পারেন সুপ্রিম কোর্টে। আর তাঁর বিরুদ্ধে সিবিআইয়ের সমস্ত রকম কার্যকলাপকে চ্যালেঞ্জ করে মামলা করতে পারেন হাইকোর্টে।

এ দিন সিবিআইয়ের আইনজীবী কালীচরণ মিশ্র আদালতে জানান, সারদা মামলায় কলকাতা পুলিশের প্রাক্তন কমিশনার এত দিন নিজেকে ‘সাক্ষী’ বলে দাবি করলেও এখন নিজেকে ‘অভিযুক্ত’ বলে মেনে নিচ্ছেন। এক জন অভিযুক্তই আগাম জামিনের আবেদন জানান। তিনি অভিযোগ করেন, যত দিন সুপ্রিম কোর্ট ও কলকাতা হাইকোর্ট তাঁকে গ্রেফতার না-করার রক্ষাকবচ দিয়েছিল, তত দিন রাজীব সিবিআইয়ের জিজ্ঞাসাবাদে হাজির হচ্ছিলেন। কিন্তু আদালত রক্ষাকবচ তুলে নেওয়ার পর থেকে তিনি সিবিআইয়ের নোটিস পেয়েও জিজ্ঞাসাবাদে আর হাজির হচ্ছেন না।

মিশ্র জানান, সারদা-কাণ্ডে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ রয়েছে, সিবিআই-কে সব রকম ভাবে সাহায্য করবে রাজ্য সরকার। রাজীব রাজ্যেরই অফিসার। সারদা-কাণ্ডের তদন্তের জন্য গড়া সিটের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অফিসারও ছিলেন। অথচ তদন্তে সাহায্য না-করে তিনি এখন পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। রাজ্য পুলিশের ডিজি সিবিআইয়ের কাছে হাজির হতে নির্দেশ দিলেও তা মানছেন না। তিনি যদি অভিযুক্ত না-হবেন, তা হলে পালিয়ে বেড়াবেন কেন?

মিশ্রের অভিযোগ, সারদা-কর্তা সুদীপ্ত সেন ও তাঁর স্ত্রী পিয়ালির একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে লকার ছিল। সিট ওই লকার খুলে যে সব নথিপত্র পেয়েছিল, তা সিবিআই-কে দেয়নি। সারদার কাছ থেকে কোন কোন প্রভাবশালী ব্যক্তি কত টাকা পেয়েছেন, তার নথি সল্টলেকের মিডল্যান্ড পার্কের অফিসে রাখা ছিল। সিটের এক অফিসার সেই নথি বাজেয়াপ্ত করে রাজীবের হাতে দেন। রাজীব সেই নথিও সিবিআই-কে দেননি।

রাজীবের আইনজীবী পাল্টা জানান, রাজীবকে সিবিআই যত বার নোটিস দিয়েছে, তত বার তিনি জবাব দিয়েছেন। সরকারি নানা কাজে ব্যস্ত থাকায় তিনি সিবিআইয়ের দফতরে সব সময় যেতে পারেননি। কিন্তু শিলংয়ে গিয়ে ৩৯ ঘণ্টা ৪৫ মিনিট ধরে তাদের সব প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন। যদিও তার ভিডিয়ো ফুটেজ সিবিআই তাঁর হাতে বা আদালতে জমা দেয়নি। রাজীবের কাছে যা নথি ছিল, তার সবই তিনি সিবিআই-কে দিয়েছেন।

কিন্তু মিশ্র জানান, সুদীপ্ত ও দেবযানী মুখোপাধ্যায়ের মোবাইল ফোনের কল ডিটেলস রাজীব দেননি। সিটের সদস্যরা সারদার সব গুরুত্বপূর্ণ নথি ও তথ্যপ্রমাণ বিধানগরের তৎকালীন গোয়েন্দা প্রধান অর্ণব ঘোষের হাতে তুলে দিয়েছিলেন। অর্ণব সেগুলো রাজীবকে দিয়েছিলেন বলে সিবিআই-কে জানিয়েছেন। কিন্তু সেগুলো সিবিআই হাতে পায়নি।

অন্য বিষয়গুলি:

CBI Rajeev Kumar Alipore Court Saradha Scam
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy