বজবজে ডাকাতি এবং মহিলার গণধর্ষণের ঘটনায় আট বছর পর শাস্তি ঘোষণা করল আলিপুর আদালত। আলিপুরের সেকেন্ড ফাস্ট ট্র্যাক আদালতের বিচারক অয়ন মজুমদার বুধবার এই ঘটনায় তিন জন অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করেছেন এবং যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছেন। বজবজ-কাণ্ডের চতুর্থ অভিযুক্তের মৃত্যু হয়েছে আগেই।
২০১৭ সালের ৩১ জানুয়ারি বজবজের একটি বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। মাঝরাতে বাড়িতে ঢুকে টাকাপয়সা এবং গয়নাগাটি হাতিয়ে নেয় চার দুষ্কৃতী। অভিযোগ, স্বামী এবং সন্তানকে বেঁধে রেখে মহিলাকে গণধর্ষণ করেন তাঁদের মধ্যে তিন জন। আলিপুর আদালতে আট বছর ধরে মামলাটি চলেছে। বিচারপ্রক্রিয়া শেষে আদালত গণধর্ষণের ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত করেছে শেখ রামজান এবং ধনু শেখকে। গণধর্ষণের অপরাধে তাঁদের দু’জনকে ২০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জরিমানা করা হয়েছে ১০ হাজার টাকা।
আরও পড়ুন:
রামজান এবং ধনু ছাড়াও বজবজে ডাকাতির অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন আব্দুল হামিদ মোল্লা। তাঁদের তিন জনকেই ডাকাতির অপরাধে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক মজুমদার। এ ছাড়াও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হবে তাঁদের থেকে। বজবজে গণধর্ষণের ঘটনায় যুক্ত অন্যতম অভিযুক্তের নাম ইমাম। আগেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে।
কী ঘটেছিল আট বছর আগে? সরকারি আইনজীবী অরবিন্দ মিত্র বলেন, ‘‘বজবজ থানার অন্তর্গত একটি গ্রামে ২০১৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর নিজেদের বাড়িতে সাত বছরের সন্তানকে নিয়ে বাবা-মা ঘুমোচ্ছিলেন। রাত ১১টা ৪৫ মিনিট নাগাদ আচমকা তাঁদের ঘুম ভেঙে যায়। দরজায় লাথি মারার শব্দ শুনতে পেয়েছিলেন তাঁরা। তার পর দরজা ভেঙে তিন জন বাড়িতে ঢোকেন। স্বামী-স্ত্রী এবং সন্তানকে দড়ি দিয়ে বাঁধা হয়। মোবাইল, টাকা, সোনাদানা সব ওরা নিয়ে নেয়। তার পর মহিলাকে বারান্দায় নিয়ে গিয়ে তিন জন মিলে ধর্ষণ করেন। বজবজ থানা অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে। উদ্ধার করা হয় লুট হওয়া জিনিসপত্র। বিচারপ্রক্রিয়া চলাকালীন শিশুটিও আদালতে এসে ঘটনার বর্ণনা দিয়েছে। এত দিনে সেই ঘটনার শাস্তি ঘোষণা করা হল। এক জন আসামি বিচারপ্রক্রিয়া চলাকালীন জেলে মারা গিয়েছেন।’’