উদ্ধার: উদয়ন দাসের রায়পুরের বাড়ি থেকে মাটি খুঁড়ে বার করা হচ্ছে কঙ্কাল। —ফাইল চিত্র
আকাঙ্ক্ষা শর্মা খুনে অভিযুক্ত উদয়ন দাসকে বুধবার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে বাঁকুড়া আদালত। তবে নিহতের পরিবার তাতে সন্তুষ্ট নয়। এখন ছত্তীসগঢ়ের রায়পুর আদালতে উদয়নের বিরুদ্ধে চলা বাবা-মাকে খুনের মামলায় কী রায় হয়, সে দিকে তাকিয়ে আছে তারা।
জোড়া খুনের ওই মামলার তদন্তকারী আধিকারিক তথা বর্তমানে ছত্তীসগঢ়ের মহাসমুন্দ জেলার ডিএসপি (ট্রাফিক) পৃথ্বী দুবে জানান, রায়পুরের বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া কঙ্কালগুলি যে উদয়নের বাবা-মায়ের, ডিএনএ-পরীক্ষায় তা নিশ্চিত হয়েছে। রিপোর্ট পেশ করা হয়েছে আদালতে। খুন ও দেহ লোপাটের অভিযোগ হয়েছে। তবে করোনা-পরিস্থিতির জন্য সমস্ত সাক্ষীর বয়ান এখনও নেওয়া যায়নি।
২০১৭ সালের ২ ফেব্রুয়ারি ভোপালের সাকেতনগরে উদয়নের বাড়ি থেকে উদ্ধার হয় বাঁকুড়ার তরুণী আকাঙ্ক্ষা শর্মার দেহ। জেরায় পুলিশ জেনেছে, ২০১০ সালে নিজের মা ইন্দ্রাণী দাসকে গলা টিপে আর বাবা বীরেন্দ্রকুমার দাসকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে খুন করে উদয়ন। রায়পুরের সুন্দরনগরে বাড়ির বাগানেই পুঁতে দেয় দেহ দু’টি। বাড়ি বিক্রিও করে দেয়।
পুলিশের দাবি, উদয়ন লোককে বলত, হৃদ্রোগে বাবার মৃত্যু হয়েছে। মা রয়েছেন আমেরিকায়। জালিয়াতি করে মায়ের পেনশনের ২৮ হাজার টাকাও তুলছিল প্রতি মাসে। ২০১৭ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি তার দেখানো জায়গা থেকে মাটি খুঁড়ে উদ্ধার হয় দু’টি কঙ্কাল। রায়পুরের দীনদয়াল উপাধ্যায়নগর থানায় উদয়নের বিরুদ্ধে দায়ের হয় জোড়া খুনের মামলা।
পৃথ্বী দুবে জানান, ২০১৭ সালের ১৫ মে রায়পুর আদালতে ওই মামলার চার্জশিট দাখিল করে পুলিশ। তিনি বলেন, ‘‘উদয়নের এক মাসি একটি কঙ্কালের হাতে কিছু গয়না দেখে তা উদয়নের মা-র বলে শনাক্ত করেন। তাঁর সাক্ষ্য এই মামলায় খুবই গুরুত্বপূর্ণ। করোনা-পরিস্থিতির ফলে বিচার প্রক্রিয়া থমকে রয়েছে। ফের কোর্ট সচল হলেই ওই মহিলাকে হাজির করানো হবে।”
উদয়নের বিরুদ্ধে চলা জোড়া খুনের মামলায় প্রথমে সরকারি আইনজীবী ছিলেন মরিসা নাইডু। তিনি বলেন, “প্রায় ১৮ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। অল্প কিছু বাকি।’’ বর্তমানে ওই মামলার সরকারি আইনজীবী রাঘবেন্দ্র সিংহের বক্তব্য, “আদালত চালু হলে মাস ছয়েকের মধ্যে মামলার নিষ্পত্তি হয়ে যাবে। যে সব তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে মামলা এগোচ্ছে, তাতে উদয়নকে চূড়ান্ত শাস্তি দেওয়ার পথ আরও মসৃণ হচ্ছে।” বাঁকুড়ার নিহত তরুণী আকাঙ্ক্ষার মা শশী শর্মা বৃহস্পতিবার বলেন, “আমার মেয়েকে খুনের জন্য উদয়নের ফাঁসি চেয়েছিলাম। কিন্তু বাঁকুড়া আদালত ওকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে। আশা করি, নিজের বাবা-মাকে খুনের মামলায় ও চূড়ান্ত শাস্তি পাবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy