— ফাইল চিত্র
লেজের পিছনে হাওয়ার ধাক্কা লাগলে সাধারণত সুবিধাই হয় বিমানের। নির্দিষ্ট সময়ের আগেই পৌঁছে যাওয়া যায় গন্তব্যে। বিমান পরিবহণের পরিভাষায় একে ‘টেল উইন্ড’ বলে। শীতের শুরুতে সেই টেল উইন্ড নিয়েই এ বার বিপদে পড়েছেন পাইলট ও বিমানবন্দরের অফিসারেরা।
এখন সপ্তাহে চার দিন দিল্লি, মুম্বই, চেন্নাই, আমদাবাদ, পুণে এবং নাগপুর থেকে কলকাতায় যাত্রী-উড়ান আসার উপরে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। যে তিন দিন নিষেধাজ্ঞা নেই, সেই সোম, বুধ ও শুক্রবারকে পুরোপুরি ব্যবহার করতে চাইছে উড়ান সংস্থাগুলি। তাই রবি, মঙ্গল ও বৃহস্পতিবার রাতেই দিল্লি-মুম্বই থেকে রওনা করিয়ে দেওয়া হচ্ছে যাত্রীদের। বিমান রাত ১২টার পরে এসে কলকাতায় নামছে। রাত ১২টা বাজলেই পরের দিন হিসেবে ধরা হচ্ছে।
তবে শীত যত বাড়ছে, ততই পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে উড়ে আসার সময়ে বিমানের পিছনে ধাক্কা মারছে হাওয়া। মাঝেমধ্যে রাত ১২টার আগেই কলকাতার আকাশে পৌঁছে যাচ্ছেন পাইলট। ১২টা বাজার আগে নেমে পড়লে নিয়ম লঙ্ঘনের আশঙ্কা দেখা দিচ্ছে। আর ১২টা বাজা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হলে আকাশে চক্কর মারতে গিয়ে প্রচুর পরিমাণ জ্বালানি ও অর্থের অপচয় হচ্ছে। ফলে, দোটানায় পড়ে যাচ্ছেন পাইলট ও অফিসারেরা।
আরও পড়ুন: মদ-গাঁজা বিক্রি করা নিয়ে বোমাবাজি, ‘নিষ্ক্রিয়’ পুলিশ
গত জুলাই মাসের গোড়ায় রাজ্যের অনুরোধে ওই ছ’টি শহর থেকে সরাসরি উড়ান বন্ধের নির্দেশ জারি করেছিল কেন্দ্র। সেপ্টেম্বরের গোড়ায় রাজ্য সরকার সেই নিষেধাজ্ঞা আংশিক তুলে নিয়ে জানায়, সপ্তাহে তিন দিন করে ওই ছ’টি শহর থেকে সরাসরি কলকাতার উড়ান চালানো যাবে। কিন্তু তার পরে বহু অনুরোধেও সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেনি রাজ্য সরকার। বিভিন্ন উড়ান সংস্থা ও ট্র্যাভেল এজেন্টদের প্রশ্ন, ট্রেন চালু হয়ে গিয়েছে। জীবনযাপন স্বাভাবিক হয়ে যাচ্ছে। তার পরেও কেন এই নিষেধাজ্ঞা? ভুগতে হচ্ছে সাধারণ যাত্রীদের। সঙ্গে প্রচুর লোকসান হচ্ছে উড়ান সংস্থা ও ট্র্যাভেল এজেন্টদের।
জার্মানি থেকে বাড়ি ফিরছেন সায়ন্তন ঘোষ। কলকাতার বাসিন্দা সায়ন্তনের টিকিট করা হয়েছে নভেম্বরে। ফ্রাঙ্কফুর্ট থেকে শনিবার মাঝরাতে দিল্লিতে নেমে কলকাতার সরাসরি উড়ান। কিন্তু, ডিসেম্বরের গোড়াতেই জানা যায়, রবিবারের উড়ান বাতিল। সোমবার পর্যন্ত দিল্লিতে অপেক্ষা করা মুশকিল। তাই সায়ন্তন দিল্লি থেকে হায়দরাবাদ হয়ে কলকাতায় ফিরবেন। প্রতিটি উড়ান সংস্থাই সপ্তাহে সাত দিনের টিকিটই বিক্রি করছে। যখন দেখছে নিষেধাজ্ঞা উঠছে না, তখন ১০ দিন আগে উড়ান বাতিল করে দিচ্ছে। এর ফলে বহু যাত্রী সমস্যার মুখে পড়ছেন।
আরও পড়ুন: শিশুর দুগ্ধপানের আলাদা ঘরের ভাবনা ইকো পার্কে
কলকাতায় উড়ান সংস্থাগুলিকে নিয়ে গঠিত ‘এয়ারলাইন্স অপারেটর্স কমিটি’র চেয়ারম্যান অনুশীলা চতুর্বেদী সোমবার জানিয়েছেন, এই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার জন্য অনুরোধ করে ইমেল পাঠাবেন রাজ্য সরকারকে। এর আগেও পাঠিয়েছেন, কিন্তু লাভ হয়নি। ট্র্যাভেল এজেন্ট ফেডারেশনের কর্তা অনিল পঞ্জাবির কথায়, ‘‘প্রতি মাসে নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ আপনা-আপনিই বেড়ে যাচ্ছে। অন্য শহর থেকে আসার সময়ে কোভিড নেগেটিভ সার্টিফিকেট সঙ্গে আনা বাধ্যতামূলক করে এই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার জন্য আমি অনুরোধ করেছিলাম। লাভ হয়নি।’’
‘ট্র্যাভেল এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশন’-এর কর্তা মানব সোনিও এ দিন জানিয়েছেন, সপ্তাহে সাত দিনই উড়ান চালু করার জন্য নভেম্বরের শেষে রাজ্যকে অনুরোধ করা হয়েছে। কিন্তু, সবাই অন্ধকারে। কেউ জানেন না, কবে এই নিষেধাজ্ঞা উঠবে। কলকাতা বিমানবন্দরের অধিকর্তা কৌশিক ভট্টাচার্যের কথায়, ‘‘নিষেধাজ্ঞা না থাকায় তিন দিন গড়ে ৪২ হাজার করে যাত্রী হচ্ছে। অন্য দিন যাত্রী হচ্ছে ৩০ হাজার করে। সোম, বুধ ও শুক্রবার আগে ১৩৫টি উড়ান যাতায়াত করছিল। এখন তা বেড়ে হয়েছে ১৫০টি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy