প্রদীপ ভট্টাচার্য, অধীর চৌধুরী এবং আব্দুল মান্নান।—ফাইল চিত্র।
প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি পদের জন্য আপাতত তিনটি নাম পেলেন এআইসিসি-র পর্যবেক্ষক। তাঁদের কেউই নতুন মুখ নন, দলের বর্ষীয়ান নেতা। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি পদে থেকেই প্রয়াত হয়েছেন সোমেন মিত্র। বাংলার কংগ্রেসের জন্য এমন পরিস্থিতি অভূতপূর্ব। প্রয়াত সভাপতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ৭ দিনের জন্য সব রাজনৈতিক কর্মসূচি স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কংগ্রেস। এই সময়ে এআইসিসি-র নেতারা প্রদেশ কংগ্রেসের নেতৃত্বের সঙ্গে ভবিষ্যতের সাংগঠনিক দায়িত্ব ঠিক করার ব্যাপারে কথা বলবেন। তবে কাউকে ভারপ্রাপ্ত বা অন্তর্বর্তী সভাপতি না করে পূর্ণাঙ্গ দায়িত্ব দেওয়ার আর্জি জানিয়ে রেখেছেন রাজ্যের নেতৃত্ব।
সোমেনবাবুর শেষকৃত্যে থাকতে না পারলেও বাংলার ভারপ্রাপ্ত এআইসিসি নেতা গৌরব গগৈ বৃহস্পতিবার রাতে শহরে পৌঁছে প্রয়াত নেতার বাড়ি গিয়ে তাঁর স্ত্রী শিখা মিত্র ও পুত্র রোহনকে সমবেদনা জানান। সঙ্গে ছিলেন এআইসিসি-র সহ-পর্যবেক্ষক বি পি সিংহ। গৌরব শুক্রবার কথা বলেছেন প্রদেশ কংগ্রেসের প্রথম সারির নেতাদের সঙ্গে। কংগ্রেস সূত্রের খবর, প্রদীপ ভট্টাচার্য, অধীর চৌধুরী এবং আব্দুল মান্নান— এই তিনটি নামই এসেছে গৌরবের কাছে। প্রদেশ নেতৃত্বের সঙ্গে আরও কিছু আলোচনার পরে তিনি রিপোর্ট দেবেন এআইসিসি-র সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) কে সি বেণুগোপালকে। তার পরে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে রাহুল গাঁধীর মতসাপেক্ষে।
প্রকাশ্যে গৌরব এ দিন বলেছেন, ‘‘সোমেনবাবু যে উচ্চতায় পৌঁছেছিলেন, রাতারাতি সেখানে যাওয়া কঠিন। সাধারণ মানুষের নানা দাবি-প্রতিবাদ নিয়ে তাঁর নেতৃত্বে যে ভাবে আন্দোলন চলছিল, সেই রাস্তাতেই চলতে হবে। তবে আপাতত আমরা সব কর্মসূচি স্থগিত রাখছি। রাজ্যের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করছি। ভবিষ্যতের জন্য কী করণীয়, সেই বিষয়ে তাঁদের প্রস্তাব, পরামর্শ শুনছি।’’ দলের অন্দরের খবর, প্রদীপ, অধীর ও মান্নানের মধ্যে কাউকে প্রদেশ সভাপতির দায়িত্ব দেওয়ার পক্ষে-বিপক্ষের যুক্তি নিয়েই কথা হয়েছে। দলের কোনও মহল থেকে তিন বিধায়কের নামে যে প্রস্তাব উঠেছিল, তা অবশ্য কার্যত খারিজই হয়ে গিয়েছে।
কংগ্রেস সূত্রের ব্যাখ্যা, তিন নামের মধ্যে রাজ্যসভার সাংসদ প্রদীপবাবু সব চেয়ে ‘নিরাপদ’। আগে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি হিসেবেই দলের সব অংশকে নিয়ে চলার অভিজ্ঞতা তাঁর আছে। আবার আম জনতার সঙ্গে সংযোগ এবং জনপ্রিয়তার নিরিখে বহু এগিয়ে অধীরবাবু। কিন্তু এখন তিনি লোকসভায় দলের নেতা এবং পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির (পিএসি) চেয়ারম্যান। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি হিসেবে আগের ইনিংসে সবাইকে নিয়ে চলতে না পারার জন্য ক্ষোভ ছিল দলের অন্দরেই। সেই সঙ্গে ছিল দলের তহবিলের সমস্যা। অন্য দিকে, মান্নান ‘১০০% দলীয় সৈনিক’। দলের জন্য রাজ্যসভায় ‘ত্যাগ’ স্বীকার করেছেন, মনোনয়ন দিয়েও সনিয়া গাঁধীর এক কথায় প্রত্যাহার করেছিলেন। দলের একাংশ চান, বিরোধী দলনেতার পদের ‘বাড়তি ওজন’ সঙ্গে রেখেই সংখ্যালঘু এই নেতাকে সভাপতির দায়িত্বেও আনা হোক। তবে মান্নানের নিজস্ব কিছু ‘অভিমান’ আছে, যা শুনতে হবে এআইসিসি-কে।
নতুন দায়িত্বের ফয়সালার আগে বর্ষীয়ান নেতা প্রদীপবাবু এ দিন বলেছেন, ‘‘সোমেনের নেতৃত্বে যে ভাবে বামফ্রন্টের সঙ্গে একযোগে কর্মসূচি চলছিল, সেখান থেকে পিছিয়ে আসার কথা কল্পনাই করছি না। এআইসিসি-র নেতা গৌরবের সঙ্গে এই বিষয়ে কথা হয়েছে। কংগ্রেস কর্মীদের কাছে আবেদন, আগামী অন্তত ৭ দিন অন্য কর্মসূচি বন্ধ রেখে প্রয়াত সভাপতির স্মরণে ব্লক স্তর থেকে যেন কর্মসূচির আয়োজন আমরা করি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy