—প্রতীকী ছবি।
লোকসভা ভোটের আগে রাজ্য পুলিশের অন্দরে প্রস্তুতি পুরোদমে শুরু হয়ে গেল। কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের লিখিত নির্দেশে সাব-ইনস্পেক্টর থেকে এডিজি পদ মর্যাদার অফিসারদের বাড়ি থেকে চাকরির ‘পোস্টিং’, টানা কোনও এলাকার কাজের তথ্য জেলা পুলিশ ও কমিশনারেট স্তর থেকে কলকাতা পাঠানোর প্রক্রিয়া চালু হয়েছে৷ পুলিশ সূত্রের খবর, প্রত্যেক অফিসারের ভোটার কার্ড, আধার কার্ডের প্রত্যয়িত নকল সদর দফতরে জমা করানো হচ্ছে। তবে এই সূত্রে রাজ্য সরকার ভোটের আগে, ‘ঘুঁটি সাজানোর ছক’ কষেছে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিরোধীরা।
প্রশাসন সূত্রের খবর, কমিশন গত ২১ ডিসেম্বর রাজ্যের মুখ্যসচিব এবং রাজ্য নির্বাচনী অফিসারকে চিঠি দিয়ে পুলিশ-প্রশাসনের অফিসারদের রদবদল করতে বলেছে। সেখানে বলা হয়েছে, শেষ চার বছরের মধ্যে টানা তিন বছর একই জেলা, মহকুমায় কর্মরত থাকলে, সেই অফিসারকে সরাতে হবে। জেলার ক্ষেত্রে পুলিশ সুপারের মাধ্যমে এবং কমিশনারেটের ক্ষেত্রে পুলিশ কমিশনারদের মাধ্যমে তথ্য পৌঁছবে সংশ্লিষ্ট এডিজিদের কাছে। তার পরে তা পৌঁছবে রাজ্যের এডিজি (আইন-শৃঙ্খলা) জাভেদ শামিমের দফতরে। সেখানে নিচু এবং উঁচু স্তরের অফিসারদের যাবতীয় তথ্য দেখার পরে, শুরু হতে পারে জেলায় জেলায় রদবদল৷ গোটা প্রক্রিয়াটি নজরে রেখে তদারক করবে রাজ্য পুলিশের ডিজি-র দফতর।
পুলিশ সূত্রের দাবি, জানুয়ারি মাসের মধ্যে জেলার-জেলায় পুলিশে রদলবদল শুরু হয়ে যাবে। আর তা নিয়ে পুলিশ মহলে নানা তদ্বির, খোঁজখবর শুরু হয়ে গিয়েছে। বাড়ির পাশের জেলায় ‘পোস্টিং’ থেকে শুরু করে পছন্দের পদে যাওয়ার জন্য ‘সাহেবদের’ অফিসে ঘোরাঘুরিও বাড়ছে।
রাজ্য পুলিশের উত্তরবঙ্গের এক কর্তার কথায়, ‘‘নির্বাচন কমিশনের নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে রদবদল যা প্রয়োজন, তা করা হবে। কমিশনকে তা জানানোর পরে, তারা প্রয়োজনে, আরও রদবদল করতে পারে। ভোট মেটা পর্যন্ত নিয়ম কার্যকর থাকবে।’’ তিনি জানান, ভোটে ডিজি, কমিশনার স্তরের অফিসারদের সরানোর ইতিহাস রয়েছে। কয়েক মাস পরে রাজ্য সরকার অফিসারদের ইচ্ছে করলে, পুরনো বা অন্য পদে ফেরাতে পারে।
রদবদল প্রক্রিয়াকে ঘিরে রাজনীতির অভিযোগও উঠছে। রাজনৈতিক দাদাদের ‘আশীর্বাদ’ নিয়ে ‘পোস্টিং’ পাওয়ার প্রস্তুতি চলছে বলে বিজেপির অভিযোগ। বিজেপির উত্তরবঙ্গের সাংসদদের অনেকেরই অভিযোগ, কমিশন নিরপেক্ষতা বজায় রাখার জন্য কাজটা করে। আর সরকারি ব্যবস্থায় তার অপব্যবহার হচ্ছে। পছন্দের লোককে অন্য জায়গায় পাঠিয়ে একই কাজ হাসিল করার নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে।
এ প্রসঙ্গেই রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব নন্দিনী চক্রবর্তীর নিয়োগ নিয়ে সরব হয়েছেন রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা বিজেপির শুভেন্দু অধিকারী। তিনি রাজীব কুমারকে ডিজি পদে বসানোর কারণ নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন।
জলপাইগুড়ির বিজেপি সাংসদ জয়ন্ত রায় বলেন, ‘‘ভোটের আগে এ রকম পোস্টিং রাজ্য সরকার প্রতি বছরই করে। তবে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন ঠিক নজর রাখছে, কোথাও দলদাস আমলা বা পুলিশ দিয়ে ভোট করানোর চেষ্টা হলে, তা নিশ্চয়ই ধরা পড়বে।’’
তৃণমূলের জাতীয় কর্মসমিতির সদস্য তথা শিলিগুড়ি পুরসভার মেয়র গৌতম দেবের পাল্টা কটাক্ষ, ‘‘এদের প্রশাসনিক ধারাপাত শেখাতে হবে। বদলি, রদবদল পুরোপুরি রাজ্যের প্রশাসনিক বিষয়। আর কমিশনের নির্দেশে করাটা সরকারি নিয়ম। দিল্লির কেন্দ্রীয় সরকারও করে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy