কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিরঞ্জন জ্যোতি। —নিজস্ব চিত্র।
রাজ্যে এসে তৃণমূলের সঙ্গে যেখানে খুশি বসে কথা বলার প্রস্তাব দিলেন কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী নিরঞ্জন জ্যোতি। সল্টলেকের বিজেপি দফতরে সাংবাদিক বৈঠকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বলেন, ‘‘আমি সব তথ্য নিয়ে এসেছি। কলকাতার যেখানে খুশি বসে তৃণমূলের সঙ্গে কথা বলতে পারি। দরকারে রাজ্যের পঞ্চায়েত দফতরেও বৈঠক হতে পারে। কিন্তু তৃণমূল বসবে না। ওরা কথা বলতে চায় না। ওরা নাটক চালিয়ে যেতে চায়।’’ সেই সঙ্গে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দাবি করেন, গত মঙ্গলবার কৃষি ভবন থেকে তিনি পালিয়ে যাননি। তৃণমূলের জন্য আড়াই ঘণ্টা অপেক্ষা করেছিলেন। কিন্তু তৃণমূল কথাই বলতে চায়নি। বদলে নাটক করেছে।
শনিবার সকাল কলকাতা বিমানবন্দরে নেমে বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ বিজেপি দফতরে পৌঁছন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। সাংবাদিক বৈঠকে তথ্য দিয়ে গিরিরাজ সিংহের ‘ডেপুটি’ দাবি করেন, ২০১৯, ২০২০, ২০২১, ২০২২ সালে পর পর কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক চিঠি দিয়েছিল রাজ্য সরকারকে। সেই চিঠিতে বলা হয়েছিল, হুগলি, পূর্ব বর্ধমান-সহ বিভিন্ন জেলায় ১০০ দিনের কাজে অনিয়ম হচ্ছে। আপনারা ব্যবস্থা নিন। কিন্তু রাজ্য সরকার নির্বিকার থেকেছে। সেই সঙ্গে নিরঞ্জন এ-ও বলেন, ‘‘২০০৫ সালের যে রেগার আইন, তাতে কেন্দ্রীয় সরকারের অধিকার রয়েছে টাকা আটকানোর। বেআইনি কিচ্ছু হয়নি।’’ বিজেপির নেতারা গত কয়েক দিন ধরেই দাবি করছিলেন, তৃণমূল সব কিছু নিয়ে আদালতে ছোটেন। ১০০ দিনের কাজ ও আবাস যোজনার টাকা নিয়ে কেন কোর্টের দ্বারস্থ হচ্ছে না শাসকদল? সেই প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বলেন, ‘‘ওরা জানে কোর্টে গেলেই আদালত সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেবে। তাই যাচ্ছে না।’’
তৃণমূলের সাংসদ মহুয়া মৈত্র অভিযোগ করেছিলেন, গত মঙ্গলবার তৃণমূলের প্রতিনিধিদের আড়াই ঘণ্টা কৃষি ভবনে বসিয়ে রেখে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পিছনের দরজা দিয়ে পালিয়ে গিয়েছিলেন। মন্ত্রী শনিবারের সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, ‘‘মহুয়া অসত্য কথা বলছেন। আমি প্রতি দিন কৃষি ভবনের ৪ নম্বর গেট দিয়ে ঢুকি এবং বার হই। সে দিনও তা-ই করেছিলাম। পিছনের কোনও দরজাই তো নেই।’’ তৃণমূল যাঁদের ‘বঞ্চিত’ হিসাবে দেখাতে চাইছেন, তাঁদের সরাসরি রাজ্যের শাসকদলের লোক বলে তোপ দাগলেন মন্ত্রী নিরঞ্জন।
সাংবাদিক সম্মেলনে ছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী-সহ বিজেপি নেতৃত্ব। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পরিসংখ্যান দিয়ে দাবি করেন, ইউপিএ সরকারের ন’বছরে ১০০ দিনের কাজে বাংলা পেয়েছিল ১৮ হাজার কোটি টাকা। নরেন্দ্র মোদীর শাসনের ন’বছরে বাংলা পেয়েছে ৫৪ হাজার কোটি টাকা। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর বক্তব্য, ‘‘বাংলার সঙ্গে যদি কেন্দ্রীয় সরকার সেই মানসিকতা নিয়ে চলত, তা হলে কি এত টাকা রাজ্যে আসত?’’
রাজভবনের সামনের ধর্নামঞ্চ থেকে শুক্রবারই তৃণমূলের ‘সেনাপতি’ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, ‘‘মিথ্যাচার করার জন্যই বিজেপি দিল্লি থেকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে কলকাতায় নিয়ে আসছে। যিনি দিল্লিতে দেখা করেননি, তিনি কলকাতায় সাংবাদিক সম্মেলন করতে আসছেন।’’ শনিবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর এই অভিযোগগুলির কী জবাব ধর্নামঞ্চ থেকে অভিষেক দেন, সে দিকে নজর রয়েছে রাজনৈতিক মহলের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy