মৃতার পরিবারের সঙ্গে অগ্নিমিত্রা পাল। নিজস্ব চিত্র।
হিন্দমোটরের মৃত তরুণীর পরিবারের সঙ্গে দেখা করে পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ করলেন বিজেপি নেত্রী অগ্নিমিত্রা পাল। বুধবার হিন্দমোটরে মৌমিতা চক্রবর্তীর পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে ওই তরুণীর বাড়িতে যান বিজেপি মহিলা মোর্চার রাজ্য সভানেত্রী অগ্নিমিত্রা। ওই তরুণীর মৃত্যু নিয়ে আদালত তদন্তের নির্দেশ দিলেও তা নিয়ে পুলিশ কিছু করছে না বলে অভিযোগ করেন তিনি। পাশাপাশি, উত্তরকন্যা অভিযানে নিহত বিজেপি কর্মী উলেন রায়ের মৃত্যু প্রসঙ্গেও পুলিশের দিকেই আঙুল তোলেন অগ্নিমিত্রা।
অগ্নিমিত্রার দাবি, “দুপুরবেলা পুলিশ গুলি করে মারল উলেন রায়কে। রাত ৮টার মধ্যে তাড়াতাড়ি পোস্ট মর্টেম হয়ে গেল। আর হিন্দমোটরে মেয়েটা মারা গেল, আদালত তদন্ত করতে বললেও পুলিশ হাতের উপর হাত রেখে বসে রয়েছে।”
আরও পড়ুন: মেকানিক্যাল সাপোর্টে বুদ্ধদেব, অবস্থা সঙ্কটজনক, হাসপাতালে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী
গত বৃহস্পতিবার, ৪ ডিসেম্বর হাওড়ার একটি বেসরকারি হাসপাতালে হিন্দমোটরের বাসিন্দা মৌমিতা চক্রবর্তী (৩০)-র মৃত্যু হয়। দেহ বাড়িতে নিয়ে আসার পর পরিবারের লোকজন দেখেন, মৌমিতার তলপেটে দু’টি কাটা দাগ রয়েছে। ওই কাটা দাগ দেখেই তরুণীর পরিবারের সন্দেহ হয়, হাসপাতালে মৌমিতার অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। তবে সে বিষয়ে কোনও কিছু জানা নেই বলে দাবি ছিল পরিবারের। ওই ঘটনায় উত্তরপাড়া থানাকে পুলিশি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে শ্রীরামপুর আদালত। তবে অগ্নিমিত্রার অভিযোগ, এ নিয়ে কোনও পদক্ষেপ করেনি পুলিশ। তাঁর দাবি, “মৌমিতার দেহ কোভিড রোগীদের মতো করে ঢাকা দিয়ে বাড়িতে পাঠানো হয়। কোনও অপারেশন করার কথা না থাকলেও মৌমিতার তলপেটে কাটা দাগ ছিল। অথচ কোনও অপারেশনের কথা পরিবার জানে না।”
আরও পড়ুন: ফের কেন্দ্রের প্রস্তাব ফেরালেন কৃষকরা, আরও বড় আন্দোলনের হুঁশিয়ারি
মৌমিতার দেহ মর্গে রাখার জন্য আর্থিক ভাবে অসচ্ছল ওই পরিবারকে প্রতি দিন আড়াই হাজার টাকা করে দিতে হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন অগ্নিমিত্রা। গোটা বিষয়ে রাজ্য প্রশাসনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন তিনি। তাঁর কথায়, “যখন বিজেপি কর্মীদের গুলি করে গাছে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়, তখন দু’ঘণ্টার মধ্যে পোস্ট মর্টেম হয়ে যায়। কিন্তু এঁরা তো সাধারণ গরিব মানুষ, তাই ভাবছে কেসটাকে ধামাচাপা দেওয়া যাবে। কিন্তু সেটা হবে না। আমরা এর শেষ দেখে ছাড়ব। ঘটনাটা কেন হল? আমরা চাই তদন্ত হোক। কেউ দোষী থাকলে তাঁর শাস্তি হোক।”
মৌমিতা ছাড়াও সোমবার নিহত বিজেপি কর্মী উলেন রায়ের মৃত্যুর প্রসঙ্গেও পুলিশ-প্রশাসনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন অগ্নিমিত্রা। পুলিশের উপর যে তাঁদের আস্থা নেই, তা-ও জানিয়েছেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামোল্লেখ না করে অগ্নিমিত্রা বলেন, “সব পুলিশ খারাপ বলব না। কিন্তু কিছু পুলিশ কর্মী ভাবছেন, দিদির একটু তোষামোদি করলে পোস্টিং পাওয়া যাবে। তবে এটা যাঁরা ভাবছেন, তাঁরা বুঝতে পারছেন না আর চার মাস পর আমাদের সঙ্গেই কাজ করতে হবে। সাড়ে ন’বছরে পুলিশের উপর আস্থা চলে গিয়েছে। উলেন রায়ের মৃত্যু নিয়ে তদন্ত হওয়ার আগেই রিপোর্ট হয়ে গেল যে বিজেপি কর্মীদের গুলিতেই মৃত্যু হয়েছে। পুলিশের কাছে নাকি ওই অস্ত্র নেই। মাঝরাতে মুচলেখা লিখিয়ে নিয়ে পোস্ট মর্টেম থেকেই বোঝা যায় যে প্রশাসনের অনেক কিছু লুকোবার আছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy