নাদিশাকে নিয়ে দে দম্পতি। নিজস্ব চিত্র
২৭ অক্টোবর ২০২০। ঠিক এক বছর আগে। দুর্গা প্রতিমা ভাসান দিতে গিয়ে জলে ডুবে মৃত্যু হয় মুর্শিদাবাদের বেলডাঙার পাঁচ যুবকের। কয়েকশো বছরের পুরনো হাজরা বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবারের দুর্গা প্রতিমা প্রচলিত রীতি অনুযায়ী নিরঞ্জনের সময় ডুমনি দহে নিয়ে যাওয়া হয়। সেই শোভাযাত্রায় তাঁরাও এসেছিলেন। কিন্তু বাড়ি ফেরেনি। এই পাঁচ জন হলেন সোমনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, নিপ্পন হাজরা বন্দ্যোপাধ্যায়, অরিন্দম বন্দ্যোপাধ্যায়, পিঙ্কন পাল ও সুখেন্দু দে। সন্তানদের হারিয়েছেন তাঁদের মায়েরা। এক বছর কেটে গেলেও কেউ শোক থেকে মুক্ত হতে পারেননি কেউ।
কিন্তু বেলডাঙা পুরসভা এলাকার ১০ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা সুখেন্দুর পরিবারে এসেছে এক রত্তি এক মেয়ে। তার সঙ্গতেই সন্তান হারানোর শোক অনেকটা ভুলেছেন সুখেন্দুর মা সোমা ও বাবা এককড়ি দে। তাঁদেরই প্রতিবেশী তাহের আলির কন্যা ছোট্ট নাদিশাকে তাঁরা কোলে তুলে নিয়েছেন। দেড় বছরের নাদিশা বছর খানেক হল দে পরিবারেই বড় হচ্ছে।
নাদিশাকে ছোট্ট থেকেই চিনতেন এককড়ি ও সোমা। বাড়িতে এলে যেতে চাইত না। পুত্র সন্তানের মৃত্যুর পরে সেই নাদিশাই এখন সোমা-এককড়ির সন্তান। সোমাদেবীদের এক মেয়েও রয়েছে।
তাহের আলি ও তাঁর স্ত্রী রোজিনা বিবির তিন সন্তান। তাহের একটি ব্যাগ তৈরির কারখানায় কাজ করেন। তাঁদেরও এক মেয়ে জলে ডুবে মারা গিয়েছে। রোজিনা বলেন, ‘‘আমার এখন দুই সন্তান। তাদের এক জনকে নিয়ে যদি সন্তানহারা কোনও মা ভাল থাকেন, আমি তাতে আপত্তি করতে পারিনি। তা ছাড়া, মেয়ে খুব ভাল ভাবেই মানুষ হচ্ছে। পাশেই বাড়ি, ইচ্ছে হলেই গিয়ে দেখেও আসছি।’’
গত এক বছর এই বছর দেড়েকের নাদিশা দে পরিবারেই মানুষ হচ্ছে। এই বাড়িতেই থাকে। সোমাদেবী বলেন, “আমি ছেলে হারিয়ে মেয়ে পেয়েছি। গত এক বছর সে আমার কাছেই থাকে।” সোমাদেবীর কথায়, “আমার কোলে খুব ভালই থাকে। আমার মেয়ে বিএসসি পড়ছে। তার সঙ্গে ওর খুব ভাব।” সোমাদেবী বলেন, “স্বনির্ভর গোষ্ঠীর কাজ এক সঙ্গে করি, তাই রোজিনা আমার বোনের মতো। বোনের মেয়ে আমার বাড়িকে থাকে। ছেলে হারিয়ে মেয়ে পেয়েছি। তাকে খুব আনন্দে লালন পালন করছি।” এ বছর নাদিশাকে কোলে নিয়েই পুজো কাটিয়েছেন সোমাদেবীরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy