ফাঁকা: এনআরসি হওয়ার পর থেকেই আসছেন না নমনি অসমের বাসিন্দারা। সুনসান অসম মোড়। নিজস্ব চিত্র
এনআরসি-প্রভাব পড়েছে লাগোয়া আলিপুরদুয়ারেও। অসম থেকে খদ্দের না আসায় ব্যবসায় ভাঁটা অসম-সীমানা লাগোয়া জনপদগুলিতে।
অসমে এনআরসি থেকে বাদ পড়েছে ১৯ লক্ষ মানুষের নাম। সেই ১৯ লক্ষের মধ্যে রয়েছে নমনি অসমের বাসিন্দাও রয়েছেন বহু। তাই নমনি অসমের ঘরে ঘরে অনিশ্চয়তার ছবি। নাম বাদ পড়ায় ট্রাইবুনালে আবেদন করার জন্য নাওয়া খাওয়া ছেড়ে নাগরিকত্ব প্রমাণের কাগজ জোগাড় করতে ছোটাছুটি করতে হচ্ছে বহু বাসিন্দাকে। আর এর প্রভাব সরাসরি এসে পড়েছে এ রাজ্যের অসম সীমানা লাগোয়া বারবিশা-কামাখ্যাগুড়ির মতো বাজারগুলিতে।
আলিপুরদুয়ার জেলার এই শহরগুলির বাজারগুলিতে মূলত কেনাকাটা করেন নমনি অসমের কয়েক লক্ষ মানুষ। সেখানকার ব্যবসায়ীরাও এখানকার পাইকারি বাজার থেকে কেনাকাটা করেন। পুজোর মুখে রীতিমতো মন্দার মুখে পড়তে হয়েছে অসম সীমানার অন্যতম এই দুই বাণিজ্য কেন্দ্রের ব্যবসায়ীদের। বারবিশা ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক, কাপড় ব্যবসায়ী কার্তিক সাহা বলেন, ‘‘অসমে এনআরসির চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশিত হওয়ার পর থেকেই নমনি অসমের লোকজনের আনাগোনা কমেছে বারবিশা ও কামাখ্যাগুড়ি বাজারে। নমনি অসমের খদ্দেরদের উপর আমাদের ৭০ শতাংশ বিক্রি নির্ভরশীল।’’ আরেক ব্যবসায়ী বললেন, ‘‘পুজোর মুখে রীতিমতো চিন্তায় আমরা। পুজোর বিক্রি সামাল দিতে অতিরিক্ত সেলসম্যান নিযুক্ত করা হয়েছে। কিন্তু বেচাকেনা কিছু হয়নি। অসমের লোকজন আসছেন না।’’
একই ছবি কামাখ্যাগুড়িতে। সেখানকার কাপড় ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক নারায়ণ সাহা বলেন, ‘‘গত বছর এই সময় প্রতিদিন নমনি অসমের খদ্দেরদের কাছে জামা কাপড় বিক্রি হত চার লক্ষ টাকার মতো। গত চারদিন ধরে দিনে থেকে এক লক্ষ টাকারও বিক্রি হচ্ছে না।’’ লৌহ সামগ্রী ব্যবসায়ী নিতাই সাহা বলেন, ‘‘গত বছর এই সময় প্রতিদিন নমনি অসমের খদ্দেরদের কাছে বারবিশা ও কামাখ্যাগুড়ির সমস্ত দোকানদার মিলিয়ে অন্তত পাঁচ থেকে সাত লক্ষ টাকা বিক্রি করতেন। গত চারদিন ধরে দিনে সেটা দেড় থেকে দুই লক্ষ টাকায় নেমে এসেছে। নির্মান সামগ্রী বিক্রির অঙ্কও ২০-২৫ লক্ষ টাকা থেকে পাঁচ থেকে সাত লক্ষ টাকায় নেমে এসেছে।’’ ইলেকট্রনিক সরঞ্জাম ব্যবসায়ী সঞ্জয় সাহা বলেন, ‘‘আমার দোকানে গত বছর এই সময় প্রতিদিন অসমের খদ্দেরের কাছে চার পাঁচটি করে ফ্রিজ, টিভি, মোবাইল ও দুটি একটি করে ওয়াশিং মেশিন বিক্রি হত এ মাসের শুরু থেকে সে বিক্রি তলানিতে ঠেকেছে।’’
সোমবার বারবিশা হাটে প্রচুর গরু কেনাবেচা হয়। মূলত অসমের পাইকাররা এসে গরু কিনে নিয়ে যান। প্রতি হাটে ৫০- ৬০ লক্ষ টাকার গরু কেনাবেচা হয়। নমনি অসমের মফিজুল শেখ নামে এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘‘আমাদের অস্তিত্বের সঙ্কট চলছে। এই সময় নাগরিকত্বের প্রমাণ জোগাড় করা ছাড়া কোনও উপায় নেই। তাই অসমের পাইকাররা হাটে যেতে পারছেন না।’’ গত হাটে বেচাকেনা অর্ধেকে এসে ঠেকেছে বলে গরু ব্যবসায়ীরা জানান। কামাখ্যাগুড়ির মুড়ি ব্যবসায়ী মদন গোপাল সাহা বলেন, ‘‘অসমের খদ্দেররা আসছেন না। বেচবো কার কাছে?’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy