Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪

সম্পর্কের টানাপড়েনে খুন স্ত্রীকে

মালদহের রতুয়ার বাহারালে মর্জিনার দেহ উদ্ধারের ঘটনায় শনিবার এলাকার পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে। পুলিশ জানিয়েছে, টানা জেরায় শেষপর্যন্ত স্ত্রীকে খুনের কথা স্বীকার করে নেয়।

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

নিজস্ব সংবাদদাতা 
রতুয়া শেষ আপডেট: ২১ অক্টোবর ২০১৯ ০৪:৩১
Share: Save:

গ্রেফতার হওয়ার পরে তিন দিন ধরে টানা জেরাতেও টলানো যায়নি। শেষে শনিবার মাঝরাতে ভেঙে পড়ে স্ত্রী মর্জিনা খাতুনকে খুনের কথা স্বীকার করে নিল সেনাকর্মী শেখ আজহার। রবিবার এই কথা জানিয়েছে পুলিশ। তাদের বক্তব্য, বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের টানাপড়েনের জেরেই সে কলেজ পড়ুয়া স্ত্রীকে শ্বাসরোধ করে খুন করেছে বলে জেরায় কবুল করেছে আজহার।

মালদহের রতুয়ার বাহারালে মর্জিনার দেহ উদ্ধারের ঘটনায় শনিবার এলাকার পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে। পুলিশ জানিয়েছে, টানা জেরায় শেষপর্যন্ত স্ত্রীকে খুনের কথা স্বীকার করে নেয়। তিনদিন ধরে পুলিশি হেফাজতে দফায় দফায় জেরা চললেও আজহার খুনের কথা অস্বীকার করে গিয়েছিল। কিন্তু শনিবার সারারাত ধরে জেরার চোটে একসময় ভেঙে পড়ে ধৃত জওয়ান। স্বীকারোক্তিতে আজহার জানায়, মর্জিনার সঙ্গে বিয়ের আগেই অন্য এক তরুণীর সঙ্গে সম্পর্ক ছিল তার। বিয়ের পর সেই তরুণীর সঙ্গে সম্পর্কে টানাপড়েন শুরু হয়।

পুলিশের বক্তব্য, মর্জিনার সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ করে তাঁকে বিয়ে করার জন্য ওই তরুণী কিছুদিন ধরে চাপ দিচ্ছিলেন বলে আজহার জানিয়েছে। এমনকি, তরুণীর পরিবারেরও চাপ ছিল। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় একাধিকবার সালিশি হয়েছে বলে স্থানীয় সূত্রের খবর। সব মিলিয়ে সেই চাপের মুখে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিল আজহার। তার জেরেই শেষপর্যন্ত স্ত্রী মর্জিনাকে সরিয়ে ফেলার পরিকল্পনা করে সে। পুলিশের দাবি, খুন করার আগে সামসিতে স্থানীয় কোনও দোকানে খাওয়াদাওয়াও করে তারা। খুনের আগে অসুস্থ মর্জিনাকে নিস্তেজ করতে ওষুধের নামে তাঁকে ঘুমের ওষুধ খাওয়ানো হয়ে থাকতে পারে বলে সন্দেহ পুলিশের। চাঁচলের এসডিপিও সজলকান্তি বিশ্বাস বলেন, ‘‘স্ত্রীকে খুনের কথা ধৃত আজহার জেরায় স্বীকার করেছে। ও একাই খুন করেছে বলে দাবি করেছে। ওর সঙ্গে আরও কেউ জড়িত কি না তা আমরা খতিয়ে দেখছি।’’

গত ১৪ অক্টোবর কলেজে যাওয়ার নাম করে বেরিয়ে আর বাড়ি ফেরেননি সামসি কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী মর্জিনা। বছরখানেক আগে তাঁর বিয়ে হয়েছিল মাসতুতো দাদা, রুকুন্দিপুরের বাসিন্দা আজহারের সঙ্গে। মর্জিনাকে আজহারই ডেকে নিয়ে গিয়েছিল বলে অভিযোগ পেয়ে পুলিশ তাকে তিনদিন আগেই হেফাজতে নেয়। কিন্তু সে মর্জিনার বিষয়ে কিছুই জানে না বলে পুলিশকে জানায়। শুক্রবার রাতে সামসি কলেজে লাগোয়া এলাকার একটি ধানখেত থেকে মর্জিনার দেহ উদ্ধার হয়। তারপরেই পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগকে ঘিরে শনিবার বাহারালে পথ অবরোধকে ঘিরে রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় গোটা এলাকা। পুলিশ-জনতা খণ্ডযুদ্ধও বেধে যায়। বাসিন্দাদের ছোড়া ইটে আহত হন ছয় পুলিশকর্মী। উত্তেজিত বাসিন্দাদের হঠাতে কাঁদানে গ্যাসের সেল ফাটাতে হয় পুলিশকে। ওই ঘটনায় পুলিশ মর্জিনার বাবা আনিসুর রহমান-সহ ছ’জনকে আটক করে। যদিও রাতেই তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয় বলে পুলিশ জানিয়েছে।

অন্য বিষয়গুলি:

Murder Ratua Army Man
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy