ফাইল চিত্র।
কেন্দ্রীয় ভাবে নয়, এ বছরেও কলেজ-ভিত্তিক অনলাইন প্রক্রিয়ায় ছাত্রছাত্রী ভর্তি নেওয়া হবে বলে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় আগেই জানিয়েছেন। উচ্চশিক্ষা দফতর বৃহস্পতিবার নির্দেশ দিয়েছে, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক স্তরে ১০ অগস্ট ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে। পুরোপুরি মেধার ভিত্তিতেই কলেজগুলি অনলাইনে ভর্তি নেবে। অতিমারির আবহে ভর্তি প্রক্রিয়া চালাতে হবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে।
কিন্তু এই ভর্তি প্রক্রিয়া নিয়ে কিছু প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য পরীক্ষা দিতে হয়। সেই প্রবেশিকা নেয় জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ড। কিন্তু সেই ভর্তি-পরীক্ষা স্থগিত রাখা হয়েছে। রেজিস্ট্রার দেবজ্যোতি কোনার জানিয়েছিলেন, রাজ্য সরকার যে-ভাবে ভর্তির সিদ্ধান্ত নেবে, সেই অনুযায়ী ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু করবে জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ড। এ দিন ফোন করেও এই বিষয়ে উপাচার্য অনুরাধা লোহিয়ার বক্তব্য জানা যায়নি। কিছু বিষয়ে ভর্তির জন্য পরীক্ষা নেয় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ও। সেখানেও এ বার ক্যাম্পাসে চূড়ান্ত সিমেস্টারের পরীক্ষা হয়নি। এই অবস্থায় কী ভাবে ভর্তি-পরীক্ষা হবে, সেই প্রশ্ন উঠছে। সহ-উপাচার্য চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য জানান, বর্তমান পরিস্থিতিতে ভর্তির পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব নয়। খুব তাড়াতাড়ি তাঁরা ভর্তি কমিটির বৈঠকে বসে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন। উচ্চশিক্ষা দফতর এ দিন যে-নির্দেশ দিয়েছে, তাতে ভর্তি-পরীক্ষা নিয়ে কিছুই জানানো হয়নি।
এ দিনের নির্দেশে বলা হয়েছে, ভর্তির প্রক্রিয়া চলবে পুরোপুরি অনলাইনে। ভর্তির ফর্ম পূরণ থেকে শুরু করে ভর্তির ফি ব্যাঙ্কে জমা দেওয়া— কোনও কাজের জন্যই ছাত্রছাত্রীরা কলেজে যাবেন না। তাঁরা কলেজে যাবেন একেবারে ক্লাস করতে। সে-দিনই নথিপত্র যাচাই করা হবে। নথিতে কোনও ভুল থাকলে কলেজ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
বিভিন্ন শিক্ষক সমিতি এ দিনের সরকারি নির্দেশ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। তাদের বক্তব্য, এ বছর উচ্চ মাধ্যমিকে তিনটি বিষয়ের পরীক্ষা নেওয়া যায়নি। পরীক্ষিত বিষয়গুলির মধ্যে পড়ুয়া যেটিতে সর্বাধিক নম্বর পেয়েছে, তার ভিত্তিতে অপরীক্ষিত বিষয়ে নম্বর দেওয়া হয়েছে। কিন্তু উচ্চশিক্ষা দফতরের নির্দেশে বলা হয়েছে, মেধার ভিত্তিতে ভর্তি নিতে হবে। এ ক্ষেত্রে মেধার যথাযথ বিচার হবে কি না, সেই প্রশ্ন জোরদার হয়েছে।
অতিমারির এই পরিস্থিতিতেও অনলাইনে ভর্তির প্রক্রিয়া শেষ করার জন্য বহু ছাত্রছাত্রীকে, বিশেষ করে গ্রামের পড়ুয়াদের সাইবার ক্যাফেতে যেতে হয়। কারণ, তাঁদের বাড়িতে কম্পিউটার-ল্যাপটপ নেই, দ্রুত গতির ইন্টারনেট নেই। তাই ভর্তির জন্য সাইবার ক্যাফেতে পড়ুয়ার ভিড় হলে স্বাস্থ্যবিধি মানা কতটা সম্ভব হবে, উঠছে সেই প্রশ্নও। ওয়েবকুটার সভাপতি শুভোদয় দাশগুপ্তের বক্তব্য, এ বছর কেন্দ্রীয় ভাবে ভর্তি-প্রক্রিয়া শুরু করলে সব থেকে ভাল হত। কিন্তু তা করা হল না। আগের মতোই কলেজগুলি নিজেদের মতো করে অনলাইনে ভর্তি নেবে। কিন্তু মেধার ভিত্তিতে ভর্তি হবে কী করে, সেই প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। শিক্ষক সংগঠন আবুটার সাধারণ সম্পাদক গৌতম মাইতিও এই নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেন, ‘‘বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে সরকার এখন সরকারি দফতরে পরিণত করেছে। শিক্ষক-শিক্ষিকা ও শিক্ষাবিদদের ব্রাত্য করে শিক্ষা ক্ষেত্রে এমন সরকারি হস্তক্ষেপ অবাঞ্ছিত। আমরা এই সরকারি নির্দেশের তীব্র প্রতিবাদ করছি।’’
উচ্চমাধ্যমিকের ফলাফল সম্পর্কিত যাবতীয় আপডেট পেতে রেজিস্টার করুন এখানে
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy