ফাইল চিত্র।
ছটপুজোর ক্ষেত্রে শোভাযাত্রা নিষিদ্ধ করল কলকাতা হাইকোর্ট। কোভিড পরিস্থিতিতে বিভিন্ন পুজো ও বাজি নিয়ে দায়ের হওয়া জনস্বার্থ মামলায় মঙ্গলবার বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ এই নির্দেশ দিয়েছে। এর পাশাপাশি ডিজেও নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ছটপুজোয় যাতে দল বেঁধে জলাশয়ের কাছে ভিড় না-হয় সে ব্যাপারটিও পুলিশ-প্রশাসনকে নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। ম্যাটাডর বা লরিতে চেপে আসলেও মাস্ক পরা এবং দূরত্ববিধি নিশ্চিত করতে বলেছে আদালত। একইসঙ্গে রবীন্দ্র সরোবর এবং সুভাষ সরোবরে ছট পুজো বন্ধ করতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে বাজি কেনাবেচা হলে বিক্রেতার
পাশাপাশি ক্রেতার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে বলেছে আদালত। রাজ্য সরকার রবীন্দ্র সরোবরে ছট পুজো চালু রাখার জন্য জাতীয় পরিবেশ আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই সুপ্রিম কোর্টে আর্জি জানিয়েছে। তাই এ ব্যাপারে শীর্ষ আদালতই চূড়ান্ত নির্দেশ দেবে বলেও হাইকোর্ট জানিয়েছে। দুই বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, বাড়ির নিকটবর্তী জলাশয়েই ছট পুজো সারতে হবে। জলে দূষণসৃষ্টিকারী কোনও জিনিস ফেলা যাবে না।
আতশবাজি নিয়েও এ দিন কড়া নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। কারণ, আদালতের নির্দেশের পরেও কলকাতা-সহ বিভিন্ন এলাকায় বাজি বিক্রির কথা জানা গিয়েছে। এ দিন সেই প্রসঙ্গ তুলে বিচারপতিরা জানতে চান, এ ব্যাপারে পুলিশের গোয়েন্দা তথ্য কী বলছে? রাজ্যের তরফে অবশ্য আদালতে ধরপাকড় চলছে বলে দাবি করা হয়।
ছট পুজো নিয়ে কী বলল হাইকোর্ট
•রবীন্দ্র সরোবর ও সুভাষ সরোবরে ছট পুজো নয়
•পরিবেশ আদালতের রায় মানতেই হবে রাজ্যকে
•ছট পুজোয় পরিবারের দু-একজনের বেশি পুজোস্থলে প্রবেশ নয়
•লম্বা শোভাযাত্রা নিষিদ্ধ। বাজনা, বক্স বাজানোর অনুমতি নয়
•ছটে গাড়ি নিয়ে এলেও দূরত্ববিধি ও মাস্ক বাধ্যতামূলক
•জলে কিছু ফেলা যাবে না
•সচেতনতায় মাইকে প্রচার করতে হবে
•কালীপুজোয় বা জগদ্ধাত্রী পুজোয় যেন ভিড় না হয়
•বাজি নিয়ে অভিযোগ জানাতে পুলিশকে নির্দিষ্ট নম্বরের প্রচার করতে হবে
•ওই নম্বরে ফোন করলে ধরতেই হবে
•ভিড় বাড়লে পুলিশ ১৪৪ ধারা জারি করতে পারে
আদালত জানিয়েছে, বাজি বিক্রি করা হলে বিক্রেতা ও ক্রেতা, উভয় পক্ষের বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নিতে হবে। আগামিকাল, বৃহস্পতিবারের মধ্যে বাজি নিয়ে অভিযোগ জানানোর জন্য বিশেষ নম্বর চালু করতে হবে এবং তা সমাজে প্রচার করতে হবে। প্রসঙ্গত, আদালত নির্দেশ দিলেও তা কার্যকর করার ক্ষেত্রে প্রশাসন গড়িমসি করে বলে বারবার অভিযোগ করেন পরিবেশকর্মীরা।
আরও পড়ুন: মহড়া দৌড়ে, সুরক্ষা বর্মে প্রস্তুতি লোকালের
এ দিন আদালত বলেছে, বর্তমান পরিস্থিতি আদালতের নির্দেশ অগ্রাহ্য করলে তা আত্মহত্যার শামিল হবে। বাজি বিক্রি বন্ধ করতে প্রশাসন কী পদক্ষেপ করেছে তা সবিস্তারে জানিয়ে পুজোর ছুটি শেষে আদালত চালু হওয়ার এক সপ্তাহ পরে রাজ্য পুলিশের ডিজি ও কলকাতার পুলিশ কমিশনারকে রিপোর্ট দিতে হবে।
আরও পড়ুন: এফআইআরে স্থগিতাদেশ কোর্টের
কালীপুজো ও জগদ্ধাত্রী পুজোর ভিড় এবং ট্রেন চলাচলের প্রসঙ্গও এ দিন আদালতে উত্থাপিত হয়েছিল। ট্রেন চলাচলের বিষয়টি রাজ্য নির্ধারণ করবে বলে আদালত জানিয়েছে। তবে কালীপুজো, দীপাবলি এবং জগদ্ধাত্রী পুজোয় যাতে কোনও ভাবে ভিড় না-হয় তা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। প্রয়োজনে ভিড় ঠেকাতে ১৪৪ ধারা জারি করতে বলা হয়েছে পুলিশকে।
এ দিনই নবান্নের শারদ সম্মান অনুষ্ঠান থেকে জেলা প্রশাসনগুলিকে কালী, জগদ্ধাত্রী ও ছট পুজো নিয়ে জেলা প্রশাসনগুলিকে সতর্ক থাকতে বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “দুর্গাপুজোয় সচেতনতা দেখা গিয়েছে। কোভিড সংক্রমণ রুখতে আগামী উৎসবগুলিতেও সচেতন থাকতে হবে। কঠোর ভাবে মানতে হবে সুরক্ষাবিধি। সংক্রমণ যাতে না-বাড়ে সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে।” দুর্গাপুজোর পর থেকেই প্রশাসনিক স্তরে প্রস্তুতি শুরু করেছিল সরকার। এ দিন অনু্ষ্ঠানে রাজ্যের নিরাপত্তা উপদেষ্টা সুরজিৎ করপুরকায়স্থ জানান, গোটা প্রক্রিয়ায় সমন্বয় জরুরি। জেলা প্রশাসনগুলির কাছে ইতিমধ্যেই সেই মর্মে নির্দেশ পৌঁছে গিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy