তৃণমূল নেতা মোদাচ্ছের হোসেন নিজস্ব চিত্র।
তাঁর প্রভাব-প্রতিপত্তি আপাতত আতশকাচের তলায়। ‘লাভ হাউস’ নিয়ে হাই কোর্টের নির্দেশে শুরু হয়েছে তদন্ত। সরকারি নানা প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগেও ভাঙড়ের তৃণমূল নেতা মোদাচ্ছের হোসেনের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন।
ভাঙড় ২ ব্লকের ভোগালি ২ পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান মোদাচ্ছের অবশ্য তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা যাবতীয় অভিযোগ ফুৎকারে ওড়াচ্ছেন। চাঁচাছোলা ভাষায় নানা সময়ে রাজনৈতিক মঞ্চ থেকে বক্তৃতা দিয়ে বিতর্কে জড়িয়েছেন মোদাচ্ছের। তৃণমূলকে ভোট না দিলে সরকারি প্রকল্পের কোনও সুবিধা মিলবে না বলে এক সময়ে ভোটের প্রচারে গিয়ে বলতে শোনা গিয়েছিল তাঁকে। দুর্নীতি, আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিহীন ব্যয়-সহ নানা অভিযোগ প্রসঙ্গে তাঁর সাফ জবাব, ‘‘পুরোটাই বিরোধীদের চক্রান্ত।’’
তৃণমূলের ভাঙড় বিধানসভা কমিটির চেয়ারম্যান রেজাউল করিম বলেন, ‘‘যে হেতু আদালতের নজরদারিতে পুরো বিষয়টির তদন্ত হচ্ছে, ফলে এ নিয়ে মন্তব্য করা ঠিক হবে না। তবে প্রধানের বিরুদ্ধে ওঠা বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগের উপর দল নজর রাখছে। দল এ ধরনের দুর্নীতিকে কোনও ভাবেই সমর্থন করে না।"
ভাঙড়ের কাঁঠালিয়ায় মোদাচ্ছেরের প্রাসাদোপম বাড়ি ‘লাভ হাউস’। বাড়ির গায়ে হৃদয়ের ডিজ়াইন (লাভ সাইন)। তৃণমূল নেতার চোখ টাটানো সেই বাড়ি ঘিরেই তৈরি হয়েছে বিতর্ক। সম্প্রতি তাঁর সম্পত্তির হিসেব-নিকেশ খতিয়ে দেখতে এবং পঞ্চায়েতে সরকারি নানা প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে কলকাতা হাই কোর্টে রিট পিটিশন করেছেন আইনজীবী তথা সিপিএম নেতা বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য। আদালতের নির্দেশে ইতিমধ্যে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ‘লাভ হাউস’ মাপজোক করেছেন পুলিশ ও পূর্ত দফতরের আধিকারিকেরা। বাড়ির সামনের অংশের অনেকটাই পূর্ত দফতরের অধীন রাস্তার মধ্যে পড়েছে বলে প্রশাসনের কর্তারা প্রাথমিক ভাবে জানতে পেরেছেন। ‘লাভ হাউস’ ছাড়াও মোদাচ্ছেরের এ রকম আরও তিনটি পেল্লায় বাড়ি আছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বিশাল জায়গা নিয়ে তৈরি হচ্ছে আরও একটি ভবন। মোদাচ্ছের অবশ্য এ সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
হাই কোর্টের নির্দেশে ইতিমধ্যে পুলিশ মোদাচ্ছেরের বিরুদ্ধে এফআইআর করেছে। ভোগালি ২ পঞ্চায়েতে বিভিন্ন সরকারি প্রকল্প নিয়ে নানা সময়ে দুর্নীতির অভিযোগ খতিয়ে দেখতে জেলা প্রশাসনের নির্দেশে এক জন ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটকে নিযুক্ত করা হয়েছে। মহকুমাশাসক সুমন পোদ্দার বলেন, ‘‘হাই কোর্টের দেখভালে মোদাচ্ছেরের বিরুদ্ধে ওঠা বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত হচ্ছে। জেলা প্রশাসনের নির্দেশে তাঁর বিরুদ্ধে সরকারি বিভিন্ন প্রকল্পে দুর্নীতি নিয়েও তদন্ত শুরু হয়েছে।’’
মোদাচ্ছের অবশ্য নিজের দাবিতে অটল। তাঁর কথায়, ‘‘আমি কোনও দুর্নীতিতে জড়িত নই। মাছ-ফসল চাষ করি। ব্যবসাপত্র আছে। নিরপেক্ষ তদন্ত হলে প্রমাণ হয়ে যাবে, আমি কোনও দুর্নীতিতে জড়িত নই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy