Advertisement
২০ নভেম্বর ২০২৪

রবি নিয়ে নীরব, ভাঙন রোধই লক্ষ্য অধীরের

ভাঙনের মধ্যেই দলকে গড়ার স্বপ্ন নেতা-কর্মীদের দেখাতে শুরু করলেন অধীর চৌধুরীরা। ২৪ ঘণ্টা আগেই সদলবলে কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন কাটোয়ার বিধায়ক তথা দলের সম্পাদক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়। লোকসভা ভোটের সময় থেকেই দলে ভাঙন অব্যাহত। সামনে বিধানসভা ভোট।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩১ মে ২০১৫ ০৩:১২
Share: Save:

ভাঙনের মধ্যেই দলকে গড়ার স্বপ্ন নেতা-কর্মীদের দেখাতে শুরু করলেন অধীর চৌধুরীরা।

২৪ ঘণ্টা আগেই সদলবলে কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন কাটোয়ার বিধায়ক তথা দলের সম্পাদক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়। লোকসভা ভোটের সময় থেকেই দলে ভাঙন অব্যাহত। সামনে বিধানসভা ভোট। এই অবস্থায় দলের স্থানীয় স্তরে নেতা-কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ এবং চাঙ্গা রাখতে শনিবার বিধানভবনে রাজ্যের বিভিন্ন পুরসভায় জয়ী কাউন্সিলরদের নিয়ে বৈঠক করেন প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব। তবে রবীন্দ্রনাথবাবুর বিরুদ্ধে কী শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে, তা অধীরের কাছে স্পষ্ট নয়। বিষয়টি তিনি কংগ্রেস পরিষদীয় দলের নেতৃত্বের উপরই ছেড়ে দিয়েছেন।

রবীন্দ্রনাথবাবুর আগে যে পাঁচ বিধায়ক কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে বিধানসভার স্পিকারের কাছে চিঠি দিয়েছিল কংগ্রেস পরিষদীয় দল। কিন্তু সে ব্যাপারে এখনও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তাই এ দিন রবীন্দ্রনাথবাবুর দলত্যাগের প্রসঙ্গে নৈতিকতার প্রশ্ন তুলেছেন অধীর। সেই সঙ্গে একদা তাঁর অনুগামী রেজিনগরের তৃণমূল নেতা ও রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী হুমায়ুন কবীরের প্রশংসাও করেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি। তাঁর কথায়, ‘‘হুমায়ুন তো কংগ্রেস ত্যাগের পরে বিধায়ক পদ ছেড়ে ভোটে লড়ে সততার পরিচয় দিয়েছেন। কংগ্রেসের ভাত খেয়ে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেননি। বাকিরা (রবীন্দ্রনাথবাবুরা) তা-ই করছেন।’’

রবীন্দ্রনাথবাবু শাসকদলের চাপের মুখে দল ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন বলে কংগ্রেস নেতৃত্বের একাংশের অভিমত। এ দিন বৈঠকে বার বার শাসকদলের সন্ত্রাস ও পুলিশ দিয়ে বিরোধীদের হেনস্থার অভিযোগও শোনা গিয়েছে। পরিস্থিতি অনুধাবন করে অধীর বৈঠকে বলেন, ‘‘শক্তিশালীরাই স্রোতের বিরুদ্ধে সাঁতার কাটতে পারে। ক্ষয়িষ্ণু দল বলেই তৃণমূলকে সন্ত্রাস ও পুলিশের উপর নির্ভর করতে হয়।’’ বৈঠকে অধীর তাঁদের স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন, ‘‘লড়াইয়ে হার-জিত আছে। কিন্তু জয়-পরাজয় যা-ই হোক, মানুষের পাশ থেকে সরে যাবেন না। কারণ, ভোটের সময়ে আপনারা মানুষের কাছে বলেছিলেন, হারি-জিতি পাশে থাকব। এই কথাটা রাখার চেষ্টা করবেন।’’

এ দিন পানিহাটিতে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা কংগ্রেসের কর্মিসভাতেও এই আবেদন করেন অধীর। ওই সভায় তৃণমূলের উত্তর দমদমের নেত্রী গীতা সাহা-সহ ৩০ জন কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন বলে জেলা কংগ্রেস সভাপতি তাপস মজুমদার জানিয়েছেন।

জয়ী কাউন্সিলরদের মধ্যে বসিরহাটের পারমিতা মজুমদার, ভদ্রেশ্বরের রতন গোলদার বা কান্দির কৃষ্ণচন্দ্র ঘোষের মতো অনেকেই সন্ত্রাস ও প্রলোভন উপেক্ষা করে নিজেদের জয়ের অভিজ্ঞতা বৈঠকে জানান। তাঁদের কথা শুনে নেতৃত্ব উজ্জীবিত হন। বৈঠকে সাংসদ অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়, বিধায়ক নেপাল মাহাতো, শঙ্কর মালাকার, মনোজ চক্রবর্তী এবং দলের সংখ্যালঘু সেলের চেয়ারম্যান খালেদ এবাদুল্লা বোঝানোর চেষ্টা করেন, কংগ্রেসকে বাংলায় মু‌ছে দেওয়া যাবে না। তবে এর পরেই রতনবাবুর মতো কেউ কেউ স্পষ্ট জানিয়ে দেন, আগামী বিধানসভা ভোটে তৃণমূলের সঙ্গে জোট করলে তাঁরাও কংগ্রেস ছাড়তে বাধ্য হবেন। অভিজিৎবাবু অবশ্য পরিস্থিতি সামাল দিতে বলেন, ‘‘জোট হবে কি হবে না, তা কংগ্রেস হাইকম্যান্ডের সিদ্ধান্তের উপর নির্ভর করে। তবে জোট হলেও তা হবে কংগ্রেসের শর্তে।’’

অধীর অবশ্য জোটের বিষয়কে এখনই গুরুত্ব দিতে রাজি নন। তাঁর ভাবনা এখন একটাই। দলের ভাঙন রোধ করা।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy